Breaking Bharat: প্রিয়জনকে আশীর্বাদ করে তার দীর্ঘায়ু কামনা করেন নিশ্চয়ই? এই আশীর্বাদের রীতির সঙ্গে ধান আর দূর্বার কী সম্পর্ক বলুন তো?
শুভ অনুষ্ঠান মানেই সেখানে সবার আগে দরকার আশীর্বাদ। কি মহিমা বলুন তো এই আশীর্বাদের যেটা ছাড়া কখনোই যেন কোনো শুভকামনা পরিপূর্ণ হতে পারে না। তবে আশীর্বাদ করার ক্ষেত্রে নানা ধরনের নিয়মের প্রচলন রয়েছে বাংলায় ।
আসল ব্যাপারটা হল আশীর্বাদ করার মধ্যে দিয়ে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা হয় যাতে যে মানুষটির উদ্দেশ্যে শুভকামনা প্রকাশ করা হচ্ছে তিনি ভালো থাকেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে? ধান এবং দূর্বা দ্বারা আশীর্বাদের নেপথ্যে কি বিশেষ কোনো কারণ থাকে?
ধান এবং দূর্বা দ্বারা আশীর্বাদের সম্পর্ক:
বিয়ে বাড়ি হোক কিংবা জন্মদিন আশীর্বাদের মহিমা অপার। বিয়েতে তো আবার “আশীর্বাদ” বলে আলাদা রীতি পালন করা হয়। সাধারণত মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানে আশীর্বাদ করতে গেলে সোনার গয়না দিয়ে শুভকামনা জানানোর একটা রীতি বা প্রচলিত নিয়ম আছে। কিন্তু সব সময় সেটা সম্ভব হয় না।
সেক্ষেত্রে অন্য কোনও উপহার হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়টিও দেখা যায়। কিন্তু একান্তই কিছু না দিতে পারলে তখন ধান আর দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করা হয়। তাই বলে এমনটা নয় যে উপহার দিলে আপনি ধান দূর্বা দেবেন না। ধান আর দূর্বা আপনাকে দিতেই হবে। অনুসঙ্গ যা খুশি হতে পারে।
ধানের সঙ্গে দুর্বার সংযুক্তিকরণ:
এবার এই রীতি চলে আসার অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে ধান আর সম্পদের যোগাযোগ কে ধরা হয়। প্রাচীনকাল থেকেই ঐশ্বর্য সম্পদ এইসব কিছুর প্রতীক হিসেবে ধানকে ধরা হয়। লক্ষ্মী পুজোতে মা লক্ষ্মীকে ধান দেওয়ার রীতি আছে। লক্ষ্মীর ঝাঁপি ভরে থাকে ধানে। মানুষ ধান থেকে চাল উৎপন্ন হলে সেই চাল থেকে তৈরি ভাত খেয়ে বেঁচে থাকে।
আরো পড়ুন – রোগ ভোগ নিয়ে চিন্তায়? সতর্ক থাকুন টাইফয়েড নিয়ে!
সুতরাং কোথাও একটা প্রগতির সঙ্গে ধানের সম্পর্ক রয়েছে। জীবনের গতিময়তাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ধান সাহায্য করে। যার জন্য শুভকামনা প্রার্থনা করা হচ্ছে তার জীবনটাও সুখের হোক, সমৃদ্ধির হোক সে কারণেই ধান প্রতীক রূপে আশীর্বাদের প্রথায় উঠে আসে।
আরো পড়ুন – শীতকালীন সবজি মানেই শাক, কত রকমের শাক পাওয়া যায় বাজারে জানেন কি?
সম্পদশালী জীবন এবং সুদীর্ঘ জীবনের কামনা প্রত্যেকেই করে থাকেন। দূর্বার এখানে একটা ভূমিকা আছে। দূর্বা কিন্তু রোদে জলে পুড়ে, ভিজে লড়াই করে বেঁচে থাকতে পারে। কোনমতেই হেরে যায় না বা মরে যায় না। তাই ধানের সঙ্গে দুর্বার সংযুক্তিকরণ নিঃসন্দেহে একদিকে সুখ-সমৃদ্ধির সঙ্গে দীর্ঘায়ু জীবনের কামনা করা হয়।
আরো পড়ুন – নারীকে আপন ভাগ্য জয় করিবার কেন নাহি দিবে অধিকার?
আপনি হয়তো খেয়াল করে থাকবেন যে দূর্বা প্রবল লড়াই করার পর মরে গেলেও খুব দ্রুত আবার গজিয়ে ওঠে। যেন প্রমাণ করে দেয় মৃত্যু নয় জীবনই কাম্য। এর পাশাপাশি হয়তো খেয়াল করে থাকবেন আশীর্বাদের সময় উলুধ্বনি দেওয়ার একটা রীতিও দেখা যায়।
আরো পড়ুন – বিনোদন জগতের ‘কমল হাসান’ কে চেনেন? তিনি নাকি জীবন শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন?
এর পেছনেও কিন্তু শাস্ত্রসম্মত ব্যাখ্যা রয়েছে। উলুধ্বনি মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের জন্য শুভ সংকেত বা বার্তা বহন করে বলে প্রচলিত বিশ্বাস। অর্থাৎ উলুধ্বনির দ্বারা চারপাশের পরিবেশকে শুভ অনুষ্ঠানের সাথে যুক্ত করা হয়। আসলে মনে করা হয় যে উলুধ্বনির মাধ্যমে অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটে।
আসলে ধান দূর্বা মাথায় দিয়ে ধন সম্পদশালী দীর্ঘায়ু জীবনের কামনা আর শুভেচ্ছা জানানো হয়।