Breaking Bharat: ‘সোনা’ শব্দটা শুনলেই মনটা কেমন কেমন চনমন করে ওঠে তাই না? সব সময় মনে হয় ইস আমার যদি আরও একটু থাকত? কিন্তু ভাবাই সম্বল, বাস্তবে আর তা হয় না। আচ্ছা ভাবুন, যদি হঠাৎ করে আপনি প্রচুর সোনার খোঁজ (Lots of gold) পেয়ে যান ! কেমন হবে ? মানে একটা জায়গার খোঁজ পেলেন যেখানে শুধুই সোনা আর সোনা। তা হতে পারে সোনার খনি কিংবা, সোনা মজুদ থাকা ব্যাংক । উফ! ভাবতেই দারুন লাগছে তাইনা?
যদি এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চান, তাহলে বলি পৃথিবীতে কতটা সোনা মজুদ আছে তার কোনও হিসেব নেই। যে তথ্য পাওয়া যায় ইন্টারনেটে তা কেবল অনুমান মাত্র। যেহেতু ধাতব বস্তু তাই মাটির নিচে অস্তিত্ব আছে অনেকটাই, মনে করেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা। অবশ্য প্রশ্ন জাগে মানব সভ্যতার ইতিহাসে, এত এত সোনা এর আগে কোথাও একসঙ্গে সংরক্ষণ করা হয়নি ?
আরেকটা বিষয় হল এই যে, সোনার পরিমাণে সম্পর্কে যা জানা যায় (amount of gold is known) বা ধারণা করা হয় সেটা কোথায় মজুত থাকে বলুন তো? ভূপৃষ্ঠের নিচে মাটি পাথর বালির বিভিন্ন স্তর রয়েছে, যার মধ্যে সবথেকে নিচের স্তরে থাকে সোনার সিন্দুক। আসলে বেশ বড়সড় একটা ঘর। ধুম সিনেমায় একেবারে শেষে কীভাবে চোরের দল একটা ভল্ট থেকে টাকা চুরি করছিল মনে আছে? এটা সেরকমই ঘর যেখানে শুধু সোনা আর সোনা।
মাটির প্রায় ৮০ ফুট নিচে রয়েছে এই খাজানা ঘর। সূত্র মারফত জানা যায় নিউইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভের এরকম একশ বাইশটি ঘর আছে। পৃথিবীতে এখনো পর্যন্ত যত সোনা উত্তরণ সম্ভব হয়েছে তার মাত্র ৫% এই ব্যাংকে আছে। ব্যাংকের ছোট ছোট ঘরে ঘরে ঘরে সাজানো সোনার বাট (Butt of gold)। এক একটি ওজন প্রায় সাড়ে ১২ কেজির কাছাকাছি। মনে মনে কি ভাবছেন ব্যাংকের মালিক কত ধনী ? নাকি জানতে ইচ্ছে করছে এই ব্যাঙ্কের গ্রাহক কারা ?
আরো পড়ুন- Post-Mortem: পোস্ট মর্টেমের নাম ‘ময়নাতদন্ত’? কেনই বা এমন নামকরণ?
দেখুন এই ব্যাঙ্কের গ্রাহক বিভিন্ন দেশের সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক, যদিও স্পষ্ট করে কোন তালিকা প্রকাশ করা হয় না। বিষয়টি গোপন রাখে নিউইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ। মোটামুটি সব দেশের সোনা মজুত এই ব্যাংকে। এক দেশ থেকে আরেক দেশে সোনা পাঠাতে হলে এক ঘর থেকে ঘরে পাঠিয়ে দিলেই হয়ে যায় আর কি। অবশ্য একটি সোনার বার সরানোর যে পরিষেবা ,সেটা দিতে দেয় মোটা টাকা থুড়ি ডলার চার্জ করে না ব্যাংক। অতি যৎসামান্যেই কাজ মিটে যায়।
আরো পড়ুন- মুঘল সাম্রাজ্যের নাম বারবার কেন আসে? এমন কী সম্পদ ছিল তাদের, যা নিলামে উঠে?
এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন এই ব্যাংক কোনও সাধারন ব্যাংক নয় ,তাই নিরাপত্তা বেশ কড়া। কেন এক বছর ধরে একটি গত ভাবে নিরাপত্তারক্ষীদের প্রশিক্ষণ দেয় এই রিজার্ভ। দক্ষ শুটার থাকে নিরাপত্তার দায়িত্বে। সিসি ক্যামেরা তো আছেই, আর সেটা এতটাই উন্নত যে নিষ্ক্রিয় করার কথা কেউ কল্পনাতেও ভাবতে পারেন না।
আরো পড়ুন- অজান্তেই আপনার ক্যারিয়ার নষ্ট করছে কারা ? চিনতে চান সেই শত্রুদের? Breaking Bharat
আর অবশ্যই ইস্পাতের ঘুরন্ত সিলিন্ডারের কথা বলতেই হচ্ছে, ওজন প্রায় ৯০ টন। সিন্দুকের দরজার সঙ্গে সেই দরজা যদি না মেলে তবে সিন্দুকে প্রবেশ করা যায় না। যদি একটা পদক্ষেপে ভুল হয় তাহলে মাত্র ২৫ সেকেন্ডের মধ্যেই সব কাজ বন্ধ হয়ে যায়। কি ভাবছেন বড় ঝুঁকির ব্যাপার ? তাহলে বলি পর্যটকদের জন্য এই নিউইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভের অবারিত দ্বার, চাইলে ঘুরে আসতে পারেন।