Breaking Bharat: সন্ন্যাসিনী হয়েও রকস্টার – ‘অনি চোয়িং ড্রলমা’ আরেক নাম হল ‘দ্য সিংগিং নান’ আপনি চেনেন এনাকে?
সন্ন্যাস গ্রহণের পর জীবন সম্পূর্ণ বদলে যায় একজন মানুষের। ঈশ্বর সাধনাতেই মন দিয়ে অনুরাগ জন্ম হয়। মুছে যায় সামাজিক সাধারণ জীবনের প্রতি আসক্তি। জগতের মায়া কাটিয়ে এটা যেন এক অন্য রকমের জগত। যেখানে শুধুই সাধনা।
বিভিন্ন ধর্মে বিভিন্ন ভাবে ঈশ্বর সাধনার কথা এবং পদ্ধতি থাকলেও আজকের প্রতিবেদনে আমরা যার কথা বলছি তিনি সবার থেকে আলাদা। সন্ন্যাসী হয়েও তিনি লাইম লাইটে। আসলে তিনি সন্ন্যাসিনী। চলুন তাকে নিয়ে কেন একটা প্রতিবেদন লেখার প্রয়োজনীয়তা তৈরি হল এবার খুঁজে দেখা যাক।
সন্ন্যাসিনী হয়েও রকস্টার?
আসলে যার কথা বলছি, তিনি সাধারণ কোনও মানুষ নন। যদিও জন্মটা অতি সাধারণ এক পরিবারে হয়েছিল মেয়েটার। নেপালের মাত্র ১৩ বছরের বালিকা প্রতিদিন বাবার অকথ্য অত্যাচার আর কিছুতেই সহ্য করতে পারছিল না। মা তাকে রক্ষা করার চেষ্টা করলেও শেষরক্ষা হত না।

একদিন আর সহ্য করতে না পেরে বাড়ি ছাড়ল মেয়েটা। সেখান থেকে সোজা কাঠমান্ডুর নাগি গুম্ফায় গিয়ে জীবনে শান্তির পথ খোঁজার চেষ্টা। মাথা কামিয়ে পরনে নিল সন্ন্যাসিনীর পোশাক। এ যেন এক নতুন জীবন। এখানে সবাই তাকে স্নেহ করে, ভালবাসে। বুদ্ধমূর্তির সামনে বসে এক পরম শান্তি পেত সে।
আপন মনে গুনগুন করতে করতে ভালবাসতেন তিনি। তার যখন ২২ বছর বয়স নাগি গুম্ফায় মেডিটেশন শিখতে এলেন বিশ্ববিখ্যাত মার্কিন রেকর্ড প্রোডিউসার স্টিভ টিবেট। স্টিভ গান শুনতে পেলেন একদিন। প্রতিভা চিনতে এতটুকু দেরি হয় নি। নিজের কোম্পানিতে সন্ন্যাসিনীর গান রেকর্ড করেন তিনি। অ্যালবাম রিলিজ হওয়ার পর সবটা যেন অন্যরকম হয়ে গেল। বদলে গেল সব কিছু ।
আরো পড়ুন – সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ নিয়ে কি আপনার মনেও কুসংস্কার আছে?
রাতারাতি রকস্টার সন্ন্যাসিনী। তার নাম জানেন? তিনি হলেন ‘অনি চোয়িং ড্রলমা‘। আরেক নাম হল “দ্য সিংগিং নান”। সন্ন্যাসিনীর গলায় তিব্বতি মহামন্ত্র শুনে স্তব্ধ হয়ে গেল বিশ্ব। আপনি কি জানেন তিনি এ আর রহমান – এর সঙ্গে কোক স্টুডিওতে রেকর্ডিং করেছে। জানলে অবাক হবেন নেপালি ভাষায় অ্যানির ১২টি অ্যালবাম রিলিজ করে গেছে যার মধ্যে তিব্বতী স্তোত্রও রয়েছে ।
আরো পড়ুন – ‘বাঘের দুধ’ পাওয়া যায়? সব ছেড়ে কেন বাঘের দুধ নিয়ে এত কথা? কখনো ভেবে দেখেছেন?
তিনি মেয়েদের দুঃখ বুঝেছিলেন । তাই তাদের শিক্ষার ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী হন। নিজের গানের রেকর্ড বিক্রির টাকায় নেপালের গরীব ঘরের মেয়েরা যাতে স্কুল-কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা লাভ করতে পারে তার জন্য খরচ করতে শুরু করেন তিনি। এই বৌদ্ধ সন্ন্যাসিনীর নাম শোনেন নি এমন মানুষ নেই, তিনি রাষ্ট্রসংঘের শুভেচ্ছা দূত। প্রথাগত ভাবধারায় বিশ্বাসী নন তিনি।
আরো পড়ুন – নারী মানে কি? তার পোশাক টাই কি সবকিছু? শাড়ি পরলেই কি নারী তার পূর্ণ মর্যাদা পায়?
একাধারে বৌদ্ধ সন্ন্যাসিনী, অন্যদিকে পপ তারকা। এক অঙ্গে দুই রূপ মিলে অনন্যতার এক নজির ‘অ্যানি চোয়িং দ্রোলমা‘। বিতর্ক হয়েছে বটে তার জীবন নিয়ে কিন্তু তিনি থেমে থাকতে শেখেন নি। প্রায় ২ দশক ধরে সব সমালোচনা সহ্য করে গান গেয়ে চলেছেন। এভাবেই গান গেয়ে রোজগার করে যেতে চান অ্যানি। যাতে সেই টাকায় মানুষের উপকার করতে পারেন আজীবন।