Breaking Bharat: মেয়েদের বয়স শুধুমাত্র বিয়ের নিরিখেই বিচার হওয়া উচিত? ছেলে মেয়েদের বিয়ের উপযুক্ত বয়স কত (minimum age of marriage for women)?
কন্যা সন্তান ভাগ্য করে পাওয়া যায়। কন্যা সন্তান ঘরে আসা মানে লক্ষ্মীর আগমন। এই কথাগুলো সাহিত্যে শুনতে যতটা ভালো লাগে বাস্তবে ততটাই বিপরীত ঘটনা ঘটে। এখনো পর্যন্ত এই সমাজ কন্যা সন্তানকে গ্রহণ করতে শিখলোই না। ফলে খুব স্বাভাবিক কারণে কন্যা সন্তান মানেই দুশ্চিন্তা।
এই যে ছোটবেলা থেকে মেয়েকে বিয়ের জন্য বলি প্রদত্ত করে দেওয়া এই কারণের জন্যই কি মেয়েদের বয়সটা এত বড় হয়ে ওঠে যে “কুড়িতে বুড়ি” প্রবাদটা সামাজিকভাবে এত প্রচলিত?
‘কুড়ি বছর বয়স‘ হয়ে যাওয়া মানে?
বয়স একটা সংখ্যা মাত্র সেটা নারী হোক বা পুরুষ উভয়ের জন্যই এই একই কথা প্রযোজ্য। মনে রাখতে হবে মানুষ তার নিজের কাজের জোরে সকলের কাছে সম্মান পায়। তাই সে ক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে বয়স কোন ফ্যাক্টর নয়। একটা মানুষের কর্ম জীবন সম্পর্কে তার নিজের স্বচ্ছতা বা স্পষ্ট ভাবনা রাখা অত্যন্ত জরুরি।
এই যে ‘কুড়ি বছর বয়স‘ হয়ে যাওয়া মানেই একটি মেয়ে তার পড়াশোনার শেষ অধ্যায় যেটা সামাজিকভাবে ধরা হয় অর্থাৎ মাস্টার ডিগ্রি শেষ করার পথে পা বাড়ায়। কিন্তু তখনই ‘বুড়ি‘ শব্দটা তার জীবনের সঙ্গে সংযুক্ত করে দেওয়ার অর্থ হল তাকে এটা বুঝিয়ে দেওয়া এবার তোমার বিয়ে করার সময় হয়েছে তা না হলে বিয়ের বাজারে কোন মূল্য থাকবে না।
ছেলে মেয়েদের বিয়ের উপযুক্ত বয়স:
এটা সম্পূর্ণরূপে স্টেরিওটাইপ ধারণা ছাড়া আর কী, বলতে পারেন? সাধারণত কলেজের ডিগ্রী পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রি অর্জন করতে একজন ছেলে বা মেয়ের ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রায় ২১ বছর মত লেগে যায়।
সেখানে দাঁড়িয়ে কুড়ি বছরের ‘বুড়ি‘ শব্দটা ব্যবহার করার অর্থই হলো তাকে বিয়ের মানদন্ডের মধ্যে ফেলে দেওয়া যেন এরপর আর তার বিয়ে হবে না ছন্দ মিলিয়ে যদি শব্দটাকে যোগ করা যায় দুটো শব্দকে এক করা যায় তাহলে সেটা শুনতে ভালই লাগে ।
আরো পড়ুন – বিবাহিত মহিলার প্রতি আকর্ষণ কতটা সঠিক? ছেলেরা কেন বিবাহিত মহিলাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়?
কিন্তু সেটাকে অর্থ করে যদি একটা মেয়ের জীবন নিয়ে ছেলে খেলা করার চেষ্টা করে সমাজ তাহলে সেটা কোনোভাবেই কিন্তু এই ডিজিটাল যুগে আর সম্ভব নয়। এখনকার মেয়েরা নিজেদের পায়ে না দাঁড়িয়ে কোন সিদ্ধান্ত নিতে চায় না আর এটাকেই স্বাগত জানিয়েছে আধুনিক সমাজ। ভাবনা চিন্তা দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে আগের থেকে অনেকটাই আর সেই কারণে পুরনো বস্তাপচা ধ্যান ধারণাকে বিসর্জন দিয়েছে শিক্ষিত সমাজ।
আরো পড়ুন – আপনার স্ত্রী কি পরকীয়া সম্পর্কে লিপ্ত? বুঝতে পারছেন না এই সময় আপনার কী করা উচিত?
আগেকার দিনে এইরকম ঘটনাও দেখা গেছে যেখানে ৪০ বছরের বা ৪৫ বছরের একজন মানুষের সঙ্গে নাবালিকার বিয়ে দিয়ে দেয়া হয়েছে। তখনকার সমাজে শিক্ষার আলো এত গভীরে পৌঁছয়নি তাই অন্যায়ের প্রতিবাদ জোড়ালো হয়নি।
আরো পড়ুন – ডাক্তারের ব্যবহার কি রোগীর সুস্থতার কারণ হতে পারে? ডাক্তার আমাদের কিভাবে সাহায্য করে?
কিন্তু এখন সময়টা বদলে গেছে তাই আধুনিক রুচিসম্পন্ন শিক্ষিত মেয়ের কাছে কেউ যদি এই প্রস্তাব রাখতে চান তাহলে পরিণতি কতটা বিপরীত হবে সেটা বোধহয় আইডিয়া করতে শিখেছে তথাকথিত সংস্কারি সমাজ। মাথায় রাখতে হবে যুগ সময় সঙ্গে সঙ্গে বদলায় আর তার সঙ্গে বদলায় চাহিদা আর প্রয়োজনীয়তা।
আরো পড়ুন – ফুটবল না ক্রিকেট? জনপ্রিয়তার নিরিখে ফুটবলকে এগিয়ে গেল?
নারী পুরুষ দুজনেরই দুজনকে দরকার কেউ কারোর কাছে দায় নয় আর অধিকারবোধ ফলাবার কোনও জায়গাই এখানে নেই। তাই আজকের যুগে দাঁড়িয়ে মেয়েটার বয়স ২০ নাকি ৪০, ২৫ নাকি ৪৫, সেই বয়সে সে কী করবে সেটা সম্পূর্ণভাবে তার এবং তার পরিবারের সিদ্ধান্ত। এখানে বাইরের কেউ কিছু বলার মত কোন ক্ষমতা এখানে রাখেন না।