Breaking Bharat : আচমকাই যেন সব থেমে গেল। অবসান হল একটা যুগের। লতা মঙ্গেশকরের (Lata Mangeshkar ) মৃত্যুতে গোটা দেশ জুড়ে শোকের ছায়া। কিন্তু কেমন ছিলেন সুরসম্রাজ্ঞী নিজে? ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে তাঁর মনেও ছিল কষ্ট? একটি সাক্ষাৎকারে তিনি সেই বিষয়েই নানা কথা বলেছিলেন। মানুষ হিসেবে জন্মাতেই চাননি আর। কিন্তু কেন এমনটা বলেছিলেন বাস্তবের ‘সরস্বতী’?
লতা মঙ্গেশকর (lata mangeshkar)। অন্তত ৩৬ টি ভাষায় যিনি গান গেয়েছেন, গোটা বিশ্বে যাঁর পরিচিতি, ভারতরত্ন (Bharat Ratna), পদ্মবিভূষণ (Padma Vibhushan), পদ্মভূষণ (Padma Bhushan) থেকে শুরু করে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার, লিজিয়ন অফ অনার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্টস’ অ্যাসোসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড সহ অজস্র পুরস্কার ও সম্মান যাঁর ঝুলিতে, সেই লতা মঙ্গেশকরের মনেও ছিল কষ্ট? শুনতে অবাক লাগলেও কথাটা সত্যি। আসলে আমাদের প্রত্যেকের প্রাথমিক পরিচয়ই তো মানুষ, আর মানুষ মাত্রই সুখ-দুঃখে ভরা জীবন। তাই সুরসম্রাজ্ঞীর ক্ষেত্রেও হয়তো ব্যতিক্রম নয়।
লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যুতে (Death of Lata Mangeshkar) ভক্তকূল থেকে শুরু করে সঙ্গীতপ্রেমীরা। সোস্যাল মিডিয়ায় ‘সরস্বতী’কে স্মরণ করে শোকবার্তাও জানিয়েছেন অগণিত মানুষ। গোটা নেটপাড়া জুড়েই যেন শোকসভা। চিকিৎসা চলাকালীন তাঁর জীবনের শেষমুহূর্তের ভিডিও-ও মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়েছে সোস্যাল মিডিয়ায়। কেউ কেউ লতা মঙ্গেশকরের পুরনো ভিডিও ক্লিপও শেয়ার করেছেন।
তারই মধ্যে পুরনো একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিও ক্লিপ দেখা গেছে। যেখানে কোনও সাংবাদিক সুরসম্রাজ্ঞীকে পরজন্মের ইচ্ছের কথা জানতে চেয়েছিলেন। সেই প্রশ্নের উত্তরে চিরাচরিত হাসির সঙ্গেই লতা মঙ্গেশকর ( Lata Mangeshkar) জবাব দিয়েছিলেন, ‘এর আগেও আমাকে কেউ একজন এই প্রশ্ন করেছিলেন। আমার কাছে সেই উত্তরটাই আছে। আর সেটা হল, যদি জন্ম না নিতে হয় সেটাই ভাল। আর তবুও যদি জন্ম নিতেই হয়, তাহলে লতা মঙ্গেশকর হিসেবে আর জন্ম নিতে চাই না।’
আরো পড়ুন- Poet Bidyut Bhowmick: কবিতার রাজপুত্র কবি বিদ্যুৎ ভৌমিকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি প্রেমের কবিতা
কেন একথা বলেছিলেন লতা মঙ্গেশকর? সাংবাদিকের তরফে পাল্টা প্রশ্ন করা হয়েছিল। তখনও সুরসম্রাজ্ঞীর ঠোঁটে হাসি। হেসেই জবাব দিয়েছিলেন, ‘লতা মঙ্গেশকরের যে কষ্ট, তা তিনিই একমাত্র জানেন।’
আরো পড়ুন- Poet Bidyut Bhowmick : কবি বিদ্যুৎ ভৌমিক এর শ্রেষ্ঠ কবিতা- Breaking Bharat
লতা মঙ্গেশকরের দুঃখ তিনিই জানেন! তাই আর জন্মাতে চান না। লোকগানের হাত ধরে সঙ্গীতশিক্ষা শুরু হয়েছিল লতা মঙ্গেশকরের। মাত্র ১৩ বছর বয়সে পিতৃহারা হন তিনি। সেই সময় থেকেই রোজগার শুরু করেন। পরিবারের দায়িত্ব এসে পড়েছিল তাঁর কাঁধে। তা নিয়ে আক্ষেপের কথা শোনা যায়নি সেভাবে কখনও। তবুও ছোট ছোট ভাইবোনদের দায়িত্ব সামলাতে মাত্র ২৫ টাকা রোজগার দিয়ে শুরু করা কেরিয়ারে কী এমন দুঃখ ছিল, যা তিনি গোপনে রেখেই এই পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে গেলেন?
এই প্রশ্নের উত্তর হয়তো অনেকেই খুঁজবেন। কিন্তু কোনও সদুত্তরই হয়তো মিলবে না। কারণ বাস্তবের সরস্বতী এই পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে গেছেন বহু দূরে কোথাও। তবুও তিনি বাঁচবেন সবসময়, এক যুগ থেকে আর এক যুগে। এক প্রজন্ম থেকে আর এক প্রজন্মে বেঁচে থাকবেন সুরসম্রাজ্ঞী।