Breaking Bharat: কী ভাবে কাজ করছে ইসরোর পাঠানো রোভার প্রজ্ঞান? ছ’চাকায় রোভার প্রজ্ঞান এখন কোন পর্যায়ে রয়েছে? অনেকেই প্রশ্ন করছেন যে চাঁদে থাকা রোভার প্রজ্ঞান ১৪ দিন পর যখন সূর্যের আলো পাবে না তখন কি তার সব যন্ত্রপাতি বিকল হয়ে যাবে? এই রোভার প্রজ্ঞান কি আবার চাঁদ থেকে পৃথিবীতে নেমে আসবে নাকি চাঁদেই থাকে যাবে?
চন্দ্রযান ইতিহাস তৈরি করেছে এ কথা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু এই সাফল্য এখনই শেষ হয়ে যাচ্ছে না কারণ যাদের বুকে আগামী এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে কাজ করবেন রোভার। এটা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ গোটা বিশ্বের নজর এখন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার সংস্থার দিকে এই একটা কারণের জন্যই। ২৩ আগস্ট ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে চাঁদের বুকে পা রাখে ল্যান্ডার বিক্রম।
তারপর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে সূর্যর আলো থেকে শক্তি সঞ্চয় করে বৃহস্পতিবার ভোরে ল্যান্ডার থেকে মাটিতে নেমে আসে রোভার প্রজ্ঞান। বিজ্ঞানীরা এই ভিডিও সকলের সঙ্গে শেয়ার করেছেন এবং জানিয়েছেন তার পরেই ধীরে ধীরে কাজ শুরু করেছে রোভার। ছ’চাকায় গুটি গুটি হাঁটি হাঁটি পা পা এখন যে কোন পর্যায়ের রয়েছে এটাই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।
চাঁদের বুকে ল্যান্ডার বিক্রমের সফল অবতরণ:
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার সংস্থা কার্যত এক মাইল ফলক তৈরি করেছে চাঁদের বুকে ল্যান্ডার বিক্রমের সফল অবতরণের মাধ্যমে। ১৪ দিন চাঁদে সূর্য অর্থাৎ দিন থাকার কারণে রোভার কাজ করবে আর অজানা তথ্য তুলে আনবে। এর আগের বার ল্যান্ডিংয়ের সমস্যা হওয়ায় রোভারের দরজা খুলে বেরিয়ে আসা সম্ভব হয়নি আর ১৪০ কোটির ভারতবর্ষের স্বপ্নে বড় ধাক্কা লেগেছিল।
কিন্তু এবার এখনো পর্যন্ত সবকিছুই ঠিকঠাক ভাবে কাজ করছে। অনেকেই প্রশ্ন করছেন যে রোভার ১৪ দিন পর যখন সূর্যের আলো পাবে না তখন কি তার সব যন্ত্রপাতি বিকল হয়ে যাবে? আপাতত উত্তরটা হ্যাঁ কিন্তু আবার চৌদ্দ দিন পরে সূর্য উঠলে তখন কি সেগুলো কাজ করতে পারবে সেটা নিয়ে একটা ধোঁয়াশা রয়েছে তাই বিজ্ঞানীরা আপাতত সেই ভাবনা থেকে নিজেদের দূরেই রাখছেন।
আরো পড়ুন – এবার চাঁদে মহিলা মহাকাশচারী? কে এই ক্রিস্টিনা হামোক কচ জানেন?
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে অভিযাত্রী যান প্রজ্ঞান এখন কী ভাবে কাজ করছে? ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে রোভার চাঁদের খনিজের গঠন, ভূকম্পনজনিত কার্যকলাপ পরীক্ষা করবে ২৪ অগাষ্ট বৃহস্পতিবার সকালে ইসরোর তরফে এক্স (টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করে লেখা হয়, ভারতে তৈরি তৃতীয় চন্দ্রযানের রোভার ল্যান্ডার থেকে নেমেছে এবং চাঁদের বুকে পরিকল্পনা মাফিক হাঁটা শুরু হয়েছে। সেখান থেকে কিছু ছবি ইতিমধ্যেই পৃথিবীতে আসতে শুরু করেছে।
আরো পড়ুন – ChatGPT সম্পর্কে আইডিয়া আছে? মোটা বেতনে কাজের সুযোগ আনল OpenAI?
রোভার বিক্রমের তোলা চাঁদের পৃষ্ঠের বেশ কিছু ছবি রোভারে রয়েছে দু’টি যন্ত্র আর ল্যান্ডারে রয়েছে তিনটি। এরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে নিজেদের কাজ করবে। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ৪.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ২.৫ কিলোমিটার প্রশস্ত একটি এলাকায় ল্যান্ডার অবতরণ করার চিন্তাভাবনা হয়েছিল।
ঠিক সেই পয়েন্টে না হলেও চিহ্নিত এলাকার ৩০০ মিটারের মধ্যেই অবতরণ করেছে ল্যান্ডার। রোভারের আকার অনেকটা ছোট ট্রলি ব্যাগের মতো এর ওজন ২৬ কেজি। যতদূর জানা যাচ্ছে প্রজ্ঞানের দৈর্ঘ্য ৩৬ ইঞ্চি।
আরো পড়ুন – চাঁদের কুমেরুতে চন্দ্রযান ৩-এর যেতে কত খরচ হয়েছে? কিভাবে অসম্ভবকে সম্ভব করল ভারত?
এক দিকে রয়েছে সৌর প্যানেল যাক শক্তি সঞ্চয় করে সূর্য থেকেই প্রায় পঞ্চাশ ওয়াট শক্তি উৎপন্ন করতে পারে। বাকি শক্তি এর ভেতরে থাকা বৈদ্যুতিন যন্ত্রের মাধ্যমে তৈরি হয়। খুব একটা দ্রুতগতিতে চাঁদের বুকে রোভার চলবে না।
এর গতি এক সেকেন্ডে এক সেন্টিমিটার আর ঘণ্টায় ০.০৩৬ কিলোমিটার।সামনের দিকে বেশ কয়েকটি নেভিগেশন ক্যামেরা আটকানো রয়েছে। একে পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র বলা যাচ্ছে না তার কারণ প্রয়োজনে বিক্রমের মাধ্যমে নির্দেশ পাঠাতে পারে। তাই বিক্রমের ৫০০ মিটার চৌহদ্দির মধ্যেই সব সময় ঘোরাফেরা করতে হচ্ছে প্রজ্ঞানকে।