Breaking Bharat: আপনি কি খাদ্য রসিক? জানেন পোকামাকড় রেঁধে খান কারা? শুনতে অবাক লাগলেও আপনাকে আমরা জানিয়ে দিতে চাই যে ভারতের নানা প্রদেশে তিনশোটিরও বেশি প্রজাতির পোকামাকড় খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
মানুষ নানা রকমের খাবার নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে খুব ভালবাসেন। আর তাছাড়া খাবার ব্যাপারটাই তো আলাদা। কিছু মানুষের একেকটি বিশেষ খাবারের প্রতি প্রীতি বা ভালোবাসা লক্ষ্য করা যায়। আপনি কোন খাবার পছন্দ করেন সেটা সম্পূর্ণটাই আপনার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।
কিন্তু এরকম অনেক ঘটনা আছে যখন দেখা যায় যে আপনি খাবার খাচ্ছেন যেটা আলোচনার শিরোনামে উঠে আসছে। যেমন ধরুন কোন মানুষ নিরামিষ খাবার খেতে পছন্দ করেন আবার কোন মানুষ আমিষ খাবারের প্রতি আলাদাভাবে আসক্ত। কিন্তু যদি এরকম মানুষের কথা জানতে পারেন যারা আসলে কীটপতঙ্গ বা পোকামাকড় খেতে ভালোবাসেন তাহলে কি বলবেন।
কীটপতঙ্গ বা পোকামাকড় খাদ্য হিসাবে ব্যবহার:
একটু অবাক হওয়ার মতো ঘটনা বটে। কিন্তু আজকে আমরা এমন কিছু জায়গার কথা বলব যে সমস্ত জায়গায় পোকামাকড় খাওয়া হয়। আর তার জন্য আপনাকে অন্য কোনও দেশে যেতে হবে না। আমরা আমাদের দেশেরই কিছু রাজ্যের কথা বলব।
ভারতবর্ষে বড় বিচিত্র দেশ। নানা ভাষা নানা মতের মানুষ এখানে বসবাস করেন। আর এত মানুষ যেখানে আছেন সেখানে বৈচিত্র থাকবে এটাই তো খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। ভারতবর্ষের সৌন্দর্য এভাবেই বিস্তৃত হয়ে আছে। শুনতে অবাক লাগলেও আপনাকে আমরা জানিয়ে দিতে চাই যে ভারতের নানা প্রদেশে তিনশোটিরও বেশি প্রজাতির পোকামাকড় খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা হয় ।
পোকামাকড়ের মধ্যে অনেক বেশি প্রোটিন?
বিজ্ঞানীরা উল্টে বলছেন যে এমন ঘটনা আসলে শরীরের জন্য ভালো। মানে আপনার যতই টেনশন হোক বা জাঙ্ক ফুড খাওয়া নিয়ে অস্বস্তি কাজ করুক, পোকামাকড় আসলে আপনার শরীরকে ভালো রাখবে। বিশ্বের তাবড় বিজ্ঞানীদের যুক্তিতে পোকামাকড়ের মধ্যে অনেক বেশি প্রোটিন এবং পুষ্টি উপাদান সম্পন্ন হয়।
যেভাবে সময়ের গতিপ্রকৃতি এগোচ্ছে তাতে বেশ স্পষ্ট যে আগামী দিনে পোকামাকড় খেয়েই হয়তো মানুষকে বেঁচে থাকতে হবে। চলুন তাহলে দেশের কোন প্রদেশে পোকামাকড় খেয়ে জীবন ধারণ করেন (Lives by eating insects), সেই ঝলক এবার দেখে নেওয়া যাক।
শুধু তো একেবারে উত্তরের দিক থেকেই হোক। মানে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে নানা প্রজাতির রেশম কীট বা পোলু পাওয়া যায় যার অন্য নাম হলো আন্দি বা ইরানি । এই লার্ভা বাড়িতে পালন করা হয় এবং এগুলি থেকে যেমন সিল্কের সুতো পাওয়া যায়, ঠিক তেমনি আবার এগুলো খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। এই দিয়ে রান্নার নানা রকমের পদও তৈরি হয়।
আরো পড়ুন – Mia Khalifa: দুষ্টু ছবির নায়িকা মিয়া খালিফার সঙ্গে সলমান খানের নাম জড়ালো! মানে টা কি?
আপনি কি জানেন যে অসমে, রেশম কীট বিক্রি হয় ৬০০-৭০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। যে লাল পিঁপড়ে দেখলে আপনি ভয় পেয়ে লুকিয়ে পড়েন , তার প্রতি কেজির দাম প্রায় ১,০০০-১,৫০০ টাকা। আবার যদি আপনি ওড়িশার দিকে আসেন , এখনকার রায়গড় জেলার আদিবাসীরা লাল পিঁপড়ার ডিম এবং খেজুরি পোকা খেয়ে থাকেন।
খেজুরি পোকাও সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। ওড়িয়া জনজাতির মানুষ তাঁদের পূর্বপুরুষদের উত্তরাধিকার সূত্রে এই খাদ্যভ্যাস পেয়েছেন। খেজুরি পোকার লার্ভা গাছের গোড়ায় পাওয়া যায়। রায়গড়ে কোন্ধ এবং সোরা উপজাতি মানুষ ভাতের সঙ্গে এই পোকা ভাজা খান।
আরো পড়ুন – প্রতিদিন ৭০ লক্ষ টাকা খরচ করা এই গৃহবধূকে চেনেন? কী করেন ওই গৃহবধূ?
এবার আপনাদের কে বলব নাগাল্যান্ডের নাগা উপজাতির মানুষের প্রিয় খাবারের কথা। এখানকার অধিবাসীরা বাদুড়, পোকামাকড় খেতে ভালোবাসেন। থাকেন। বিশেষ করে রেশমকীট তাঁদের প্রিয়। এটা তার তেলে ভেজে খেতে পছন্দ করেন। ওড়িশা, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ,অসম , তামিলনাড়ু, কেরল, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মণিপুর এবং অরুণাচলপ্রদেশে পোকামাকড় খাওয়া প্রচলিত।
মধ্যপ্রদেশের মুরিয়া উপজাতির মানুষ আবার চিঙ্কারা নামের পিঁপড়ের লার্ভা খায়। এবার যদি দক্ষিণ ভারতে কর্নাটকের দিকে তাকান, তাহলে দেখতে পাওয়া যায় কর্নাটকের কিছু গ্রামে শারীরিকভাবে দুর্বল শিশুদের রানি পিঁপড়ে খাওয়ানো হয়। আমরা অনেকেই হয়তো জানি না যে অরুণাচলপ্রদেশেই ১৫৮ প্রজাতির পোকা খাওয়া হয়।
আরো পড়ুন – Facebook: ফেসবুকের জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও এই দেশগুলোতে ফেসবুক নিষিদ্ধ, কেন জানেন?
রাজ্যের নিশি এবং গ্যালো উপজাতির অধিবাসীরাও প্রায় ১০২টি প্রজাতির পোকামাকড় খেয়ে থাকেন। জাতিসংঘের কাউকে এক বিশেষ প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী CO 2 কমাতে হলে মানুষের খাদ্যাভ্যাসে একটা বদল আনা দরকার।বিশেষ করে প্রাণীজ প্রোটিন কম ব্যাবহার হবে। হতেই পারে আগামী দিনে এই পোকামাকড় খেয়ে বেঁচে থাকার মত পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে সবার জন্য।