Breaking Bharat: এশিয়ার বৃহত্তম বাজারে কেন বিবাহিত মহিলাদেরই ব্যবসার অধিকার? সরকারিভাবে ব্রিটিশ পিরিয়ডে এই বাজারের সূচনা তবে এখনো বহু পর্যটকের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে মনিপুরের মহিলা পরিচালিত এশিয়ার বৃহত্তম বাজার (Asia’s Largest Women Market)।
নারী সৃষ্টির ধারক বাহক, পাশাপাশি সমাজেরও বটে। আর সেই সমাজ আবার পুরুষ শাসিত। তাহলে সমীকরণ কী দাঁড়াল? নারী পুরুষ মিলিয়ে এগোবে আগামী। কিন্তু এই প্রতিবেদনে আমরা যে ঘটনার কথা বলতে চলেছি সেখানে আপনার ধারণার একটু বদল হতে পারে।
কারণ আজকের আলোচ্য বিষয় এমন এক বাজার যেখানে মহিলারাই সর্বেস্বরবা। শুধু তাই নয় সেখানে ব্যবসা করার অধিকার আছে একমাত্র বিবাহিত মহিলাদেরই।
মনিপুরের গর্ব এশিয়ার বৃহত্তম এই বাজার:
যারা ইতিমধ্যেই উত্তর-পূর্বের মনিপুর রাজ্য ঘুরে এসেছেন তারা নিশ্চয়ই এই বাজার দেখেছেন। যারা এখনো যাননি তাহলে ভবিষ্যতের প্ল্যান করলে নিজেদের আইটিনারীতে এই জায়গাটি রাখবেন। পশমের কাপড় থেকে শুরু করে হ্যান্ডলুম, হস্তশিল্পের পণ্য সবকিছুই মিলবে এখানে।
মণিপুরের এই বিখ্যাত বাজারটির নাম ‘হল ইমা কেইথেল‘ (Largest Ima Keithel Women’s Market Imphal)। এই বাজার পরিচালনার দায়িত্বে কিন্তু কোন পুরুষ নেই আছেন শুধুই মহিলারা। প্রাথমিকভাবে বিশ্বাস করতে একটু অসুবিধা হলেও এটাই সত্যি। প্রায় পাঁচ হাজার মহিলা ব্যবসায়ী এই বাজারে নিয়মিত ব্যবসা চালান। তারা যেকোনো ধর্মের হতে পারেন কিন্তু শর্ত একটাই বিবাহিত হতে হবে প্রত্যেকে।
আরো পড়ুন – সুমো পালোয়ানদের চেনেন? কী খায় বলুন তো তারা যে এভাবেই শরীর বজায় রাখতে পারেন?
মনিপুরের মহিলা পরিচালিত এশিয়ার বৃহত্তম বাজার:
খাবারদাবার থেকে শুরু করে গৃহস্থালির টুকিটাকি জিনিস সবটাই মিলবে এই বাজারে। বিশ্বজুড়ে এই বাজারের খ্যাতি ক্রমশ ছড়িয়ে পড়েছে। সরকারিভাবে ব্রিটিশ পিরিয়ডে এই বাজারের সূচনা তবে এখনো বহু পর্যটকের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে মনিপুরের মহিলা পরিচালিত এশিয়ার বৃহত্তম বাজার। প্রায় সপ্তদশ শতক থেকে চলে আসা এই বাজার ইম্ফলের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কার্যকলাপের কেন্দ্রস্থল বলেই মনে করা হয়।
আরো পড়ুন – হাত কেটে পা কেটে রক্ত দিয়ে নাম লিখে ভালবাসার কথা বোঝানোর চেষ্টা মূর্খামি ছাড়া কিছুই নয়
সরকারিভাবে ১৯৩৯ সালে এই বাজার প্রতিষ্ঠিত হলেও বাজারের প্রকৃত বয়স ৫০০ পেরিয়েছে বলেই মনে করেন স্থানীয়রা। আসলে মণিপুরে যখন রাজতন্ত্র চলছিল তখন থেকেই এখানে মহিলারা ব্যবসা করতে শুরু করেন যা আজও একই রকম আছে। বরং এখন ব্যবসা করার জন্য অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় বিবাহিত মহিলাদের। তারা সংঘের কাছ থেকে ঋণ নিয়েও এখানে ব্যবসা করতে পারেন।
বিশ্ববাজারে আদর্শ স্বাবলম্বী নারী হিসেবে প্রমাণ:
মেয়ে মানে মায়ের জাত, তাই বিশ্ববাজারে এই বাজারের নাম মাদার্স মার্কেট। শাকসবজি থেকে শুরু করে প্রসাধনী দ্রব্য সবটাই এই বাজারে মিলবে। মণিপুরের মহিলাদের বিশ্বের দরবারে আদর্শ স্বাবলম্বী নারী হিসেবে প্রমাণ করাই এর এক অন্যতম লক্ষ্য।
আরো পড়ুন – সাউথ ফিনলে স্ট্রিটে রয়েছে একটি ‘ওক গাছ’, অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য! আসলে ওই গাছের মালিক গাছ নিজেই।
মাছের বাজার থেকে শুরু করে টুকিটাকি গৃহস্থালির জিনিসপত্র পাওয়া যায় এখানে। তবে কম্পিটিশন প্রচুর থাকায় খুব বেশি লাভের মুখ দেখতে পারেন না ব্যবসায়ীরা। যদিও সারা বছর ক্রেতাদের আনাগোনা এখানে লেগেই থাকে।
সবশেষে বলতেই হয়, নিঃসন্দেহে মনিপুরের মানচিত্র তো বটেই বিশ্বের মানচিত্রে এই বাজার এক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে নিয়েছে তার রীতি এবং নীতির জন্য।