Breaking Bharat: বাঙালি কি ব্যবসায় ভয় পায়? অন্যের কোম্পানিতে কর্মচারী হয়ে কতটা খুশি বাঙালি? চাকরির নিশ্চয়তা কতটুকু বলতে পারেন? বাঙালিরা ব্যবসায় কেন পিছিয়ে? প্রতিবেদনের শিরোনাম কিছুটা বিতর্কের জন্ম দিলেও দিতে পারে। তাই শুরুতেই বলে দেয়া ভালো কোনও জাতি বা ধর্ম কিংবা ভাবাবেগকে আঘাত করার জন্য এই প্রতিবেদন নয়। বিভিন্ন সূত্র ঘেঁটে সমীক্ষা করে একটা ধারণার উপর এই প্রতিবেদন লেখা হয়েছে।
এর মধ্যে কিছুটা আপনার সত্যি বলে মনে হতে পারে কিছুটা আপনার মতের সঙ্গে মিল নাও খেতে পারে। তবে অধিকাংশ বাঙালি ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা করতে পিছিয়ে আসেন। তারা মনে করেন চাকরি করি আর মাস গেলে মাইনে পাই – এই রুটিনটাই তাদের জন্য বেস্ট। কেন এমন হয় বলুন তো?
বাঙালিরা কেন ব্যবসা করতে ভয় পায়?
কোন কিছুর প্রকৃত কারণ জানতে গেলে তার গোড়ার দিকের কথা উল্লেখ করা দরকার। আমাদের আর্থসামাজিক কাঠামোতে ছোট থেকেই বাবা-মা সন্তানের মধ্যে একটা ধারণা তৈরি করে দেন, যে মন দিয়ে লেখাপড়া করে বড় হয়ে বড় চাকরি করতে হবে।
এর ফলে নিজে থেকে ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা করার চান্স কেউই আর নিতে চান না। এখানেই বোধহয় বাইরের দেশের সঙ্গে এই দেশের একটা পার্থক্য আছে। বাইরের দেশের অধিকাংশ মানুষ নিজেরা উদ্যোক্তা হয়ে হাজার হাজার মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের রাস্তা তৈরি করে দিতে চান ।
চাকরির নিশ্চয়তা কতটুকু বলতে পারেন?
কিন্তু ভারতীয় নাগরিকরা বোধহয় এই ব্যাপারটাই আগ্রহী নন। অথচ ভাবুন প্রত্যেকদিন বেড়ে চলেছে বেকারের সংখ্যা। ভাল রেজাল্ট করে ডিগ্রী পাওয়ার পর সকলের চাকরিতে যোগ দিতে চান। কিন্তু সেই চাকরির নিশ্চয়তা কতটুকু বলতে পারেন? ফলে যত সময় যাচ্ছে ততই বাড়ছে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা।
এভাবেই কর্মসংস্থানের জগতে একটা অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে। আসলে আমাদের মধ্যে একটা বদ্ধমূল ধারণা হলেও ব্যবসা করলে সেখানে টাকা বিনিয়োগ করতে হবে আর ব্যবসা সফল না হলে সবটাই লস ।সেক্ষেত্রে যদি অন্যের কোম্পানিতে চাকরি করা যায় তাহলে নিজের শ্রম ছাড়া অন্য কিছু আর ইনভেস্ট করতে হচ্ছে না।
আরো পড়ুন – অভিনয় না করেও বলিউডের মালাইকা আরোরা কি করে কোটি কোটি টাকা রোজগার করে?
অন্তত টাকা পয়সা বা গয়না নয়, বরং মাস গেলে নিশ্চিন্তে হাত পেতে মাইনে নেওয়া যাবে। বাঙালি সবসময় অলস প্রকৃতির এই ভাবনাই সবাই মনে নিয়ে বড় হয়েছে। দেখুন ব্যবসা মানেই ঝুঁকি,ধৈর্য আর পরিশ্রম । সুতরাং যেহেতু আমরা মানে বাঙালি জাতিগত ভাবে ছা-পোষা তাই অধিকাংশ মধ্যবিত্ত মানসিকতা এই ঝুঁকি নিতে রাজি নয় কোনো মতেই। সেটাই পরবর্তীতে বড় আকার নেয়।
আরো পড়ুন – পান খেতে ভালোবাসেন? উপকারিতা অপকারিতা দুটোই জানা আছে নিশ্চয়ই!
বাঙালিরা ব্যবসায় কেন পিছিয়ে?
বিয়ের পাত্র হিসেবেও ব্যবসায়ী পাত্রের থেকে চাকরি করা পাত্রের দিকে ঝোঁক বেশি সাধারণ মা বাবার। যৌতুক দিয়ে বিয়ে দেওয়ার ভাবনা আজও বাঙালিদের মজ্জাগত। তাহলে আর কী করে ব্যবসা নিয়ে চলবে ভাবনা? আপনি জানলে অবাক হবেন যে আমেরিকা এবং ইউরোপের কিছু দেশ শুধুমাত্র নিয়োগ করার জন্য সার্টিফিকেট চেয়ে বিভিন্ন কাজের দক্ষতাকে প্রাধান্য দেয়।
আরো পড়ুন – তালা আবিষ্কার! তালা চাবি ব্যবহার করেন নিশ্চয়ই, তবে উৎপত্তি কীভাবে জানেন?
আসলে মাথায় রাখতে হবে জীবনটা ঝুঁকি নিয়েই চলে সেটা ব্যবসা হোক বা চাকরি। প্রত্যেকেই চান একটা নিশ্চিন্ত আগামী আর সেটার জন্য প্রত্যেক মুহূর্তে লড়াই। বাঙালিদের যে এই অলস আরামপ্রিয় অপবাদ বা আখ্যা নিয়ে বেঁচে থাকা এটা কিন্তু পুরোপুরি সত্যি নয় সেটা বোধহয় ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়। তবু আজও নিশ্চিন্ত এবং নিরাপত্তার আশায় চাকরির পেছনে ছোটা বাঙালির বন্ধ হলো না।
অন্যের কোম্পানিতে কর্মচারী হিসেবে বাঙালি যে খুব সুখি আছে এমনটা নয় কিন্তু তবুও চাকরির প্রতি মোহ ছাড়া গেল না আজও। এই চাকরি পাওয়ার জন্য সর্বস্ব হারাতেও রাজি তবুও ব্যবসা করার দিকে নৈব নৈব চ।