Breaking Bharat: মেয়েদের পোশাক বারবার কেন সমাজের প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ে? কিন্তু মেয়েদের পোশাকের দিকে আঙ্গুল তোলা কি এই ইঙ্গিত দেয় না যে সমাজের টার্গেট চিরকাল মেয়েরাই হয়েছে?
সমাজ মানেই অনেক মানুষ আর ততোধিক মানসিকতা। সব সময় যে সবটাকে প্রাধান্য দেওয়া যায় এমনটা নয়। কিন্তু তবুও কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাঁধনের মধ্যে পড়ে যাওয়া ভাবনা-চিন্তারা আমাদের আটকে দেয়। আর এটা সত্যি কথা যে এই সমাজ কোনদিনই মানুষের চিন্তা ভাবনাকে টেক্কা দিয়ে আগে কিছু ভেবে রাখতে পারিনি। সেই কারণে সমাজ সব সময় পিছিয়ে থেকেছে।
আর মানুষকে তার মতো করে রাখতে চেয়েছে। কিন্তু যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষ আবার সময়ের সঙ্গে এগিয়ে যেতে শিখেছে। তাই সে থামবে না। এই দুই টানাপোড়েনে সামনে এসেছে দ্বন্দ্ব। আর এটা সবথেকে বেশি হয়েছে মেয়েদের ক্ষেত্রে। কারণ সমাজটাই যে পুরুষ শাসিত। যদিও ফেমিনিস্ট কথা বলা আমাদের লক্ষ্য নয়। কিন্তু মেয়েদের পোশাকের দিকে আঙ্গুল তোলা কি এই ইঙ্গিত দেয় না যে সমাজের টার্গেট চিরকাল মেয়েরাই হয়েছে?
মেয়েরা ছোট পোশাক পরে কেন?
নারী মানে সে শাড়িতে সুন্দর, এই প্রাগৈতিহাসিক ধারণাকে এই যুগ এখনো কার্যকরী করতে চায়। কথাটা অসত্য একেবারেই নয়। নারীর সৃষ্টি এমনভাবে যে তার সৌন্দর্যে সামিল হয়েছে পৃথিবীর সব পোশাক। কিন্তু তার সঙ্গে বেধেছে সংঘাত। এক ভাবনার চিন্তার মধ্যে নারী দেহের প্রয়োজনীয় পোশাকের শৈলী নিয়ে শুরু হয়েছে মাথাব্যথা।
তাই স্কার্ট হাঁটুর উপরে উঠলে তা নিচু চোখে দেখেছে সমাজ। কিন্তু কেন? সর্বত্রই কি এই ভাবনা? উত্তর হল না। কে কেমন পোশাক পড়বেন এটা অনেকটা সেই দেশের সংস্কৃতির উপরে নির্ভর করে। ভারতবর্ষের পোশাক বৈচিত্র আর মার্কিন মুলকের পোশাক বৈচিত্র একেবারেই আলাদা।
এবার আপনি যদি একের জায়গায় অন্যকে বসাতে যান তাহলেই গন্ডগোল। আর মেয়েদের পোশাকের ক্ষেত্রে ঠিক এই কান্ডই ঘটেছে। মানুষ যত বাইরের বিশ্বের সঙ্গে পরিচিত হতে শুরু করেছে অত বুঝতে শিখেছে যে পৃথিবীটা কতটা প্রাণোচ্ছল খোলামেলা। তখন অনেক ক্ষেত্রেই এটা মনে হয়েছে যে বড্ড বেশি সংস্কারের বন্ধনে আষ্টেপৃষ্ঠে আটকে আছি আমরা।
আরো পড়ুন – আপনি কি ল্যাপটপ কিনতে চান? কোন কোন বিষয়ের দিকে নজর রাখবেন জানেন?
আবারো বলছি এই ভাবনা সার্বিক ক্ষেত্রে মূল্যায়নের ফল। ব্যক্তি বিশেষে চিন্তা ভাবনা আলাদা হতেই পারে। আমরা কারোর অনুভূতিকে আঘাত করতে চাই না। ফিরে আসি মূল প্রসঙ্গে। এবার বিদেশী সংস্কৃতি শিখে অনুপ্রাণিত হয়ে ভারতীয় সংস্কৃতিতে সেই পোশাক নিয়ে আসা একটা আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা। এতে নারী করতে চেয়েছে কারণ পোশাক-বৈচিত্রে নারীর হাতে অপশন বেশি।
আরো পড়ুন – আপনি কি ভীতু মানুষ? জানেন কি ভয় কাকে বলে? আর তার কত রকমের প্রকার আছে?
আসলে যে জিনিসটা যেখানে বেশি ভালো মানায় সেটা সেখানেই বহন করে নিয়ে যাওয়া উচিত। ধরুন শ্রাদ্ধ বাড়িতে কেউ যদি বেনারসি পরিধান করেন তাহলে লোকে তাকিয়ে দেখবে এটা সাধারণ ঘটনা। সেখানে মন থেকে আপনি কতটা ভালো বা খারাপ তার গুরুত্ব তথাকথিত সামাজিকতা বুঝবে না।
আসলে আমরা অজান্তেই একটা লাইন ড্র করে ফেলেছি। কী করব আর কী করবো না, কোনটা করা উচিত আর কোনটা করা উচিত নয় এই নিয়ে বিস্তর তর্ক হয়েছে কিন্তু সুরাহা মেলে নি। তবে প্রতিটা মানুষ যদি ঠিক আর ভুলের পার্থক্য শালীনতা আর অশালীনতার মাপকাঠি নিজেই ঠিক করতে পারেন, তাহলে কিন্তু একটু উন্নত মানসিকতার সমাজ ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দিয়ে যেতে পারি আমরা।
আরো পড়ুন – আপনার স্ত্রী কি পরকীয়া সম্পর্কে লিপ্ত? বুঝতে পারছেন না এই সময় আপনার কী করা উচিত?
সমালোচনা করাটা খারাপ নয় কিন্তু সেটা গঠনমূলক হওয়া দরকার। নারী বা পুরুষ হিসেবে নয় মানুষ হিসেবে বিচার করুন । পোশাক কখনোই আসল মানুষটার গুরুত্ব বুঝতে পারেনা বা বুঝিয়ে দেয় না। ওই যে বললাম নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা নিজেদের রাখতে হবে, কোথায় কোনটা মানানসই সেটা যুক্তি দিয়ে বোঝে তার ব্যাবহারিক প্রয়োগ করতে হবে।