Breaking Bharat: উলঙ্গ হয়ে থাকতে হবে? মানুষের লজ্জা নিবারণ করে পোশাক, কিন্তু এমন কোন স্থান আছে কি যেখানে পোশাক ছাড়াই দিব্যি বাঁচেন মানুষ? কারণ এখানকার বাসিন্দারা পোশাক ছাড়া দিব্যি জীবন যাপন করতে পারেন।
এই পৃথিবীতে এরকম অনেক কান্ড ঘটে যার সম্পর্কে আমাদের খুব একটা ধারণা নেই। বিচিত্র মানুষের সমাহার এই পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে। তাদের নানা বেশ, নানা দেশ আর নানা রকমের সংস্কৃতি। কিন্তু আজ এমন এক জায়গার কথা বলব আপনাদের যেখানকার মানুষের চিন্তা ভাবনা একটু অবাক করবে আমজনতাকে।
কারণ এখানকার বাসিন্দারা পোশাক ছাড়া দিব্যি জীবন যাপন করতে পারেন। না এতোটুকু ভুল শোনেননি। এটাই সত্যি। ‘যুক্তরাজ্যের হার্টফোর্ডশায়ারে গ্রাম‘ আমাদের আজকের গন্তব্য (Britain’s Spielplatz Nudist Village)।
এখানকার বাসিন্দারা পোশাক পরেন না কেন?
‘স্পিলপ্ল্যাটজ‘ নামে একটি গ্রাম রয়েছে। এই গ্রামের নাম খেলার মাঠের নাম হিসেবে হয়েছে। অনেকে আবার গ্রামটিকে সিক্রেট ভিলেজ নামেও চেনেন। এখানকার বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল এখানকার বাসিন্দারা পোশাক পরেন না। শুধু এটাই নয় এই গ্রামে থাকতে গেলে ‘উলঙ্গ হয়ে থাকতে হবে‘ এমনটাই শর্ত দেওয়া আছে। কেন এমন অদ্ভুত নিয়ম?
এটার জন্য আপনাকে প্রাচীন কিছু বিশ্বাসের ওপর আস্থা রাখতে হবে। মানুষ যখন এই পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হন তখন তো তার গায়ে কোন পোশাক থাকে না। অর্থাৎ ঈশ্বরের কোল থেকে সোজা চলে আসেন পৃথিবীতে। তাহলে শুধু শুধু কেন লোক দেখানো সংস্কৃতি বিশ্বাস করবেন?
পোশাক পরার অর্থ-ঈশ্বরকে অসম্মান?
এই ভাবনাই ভাবেন এখানকার মানুষেরা। তাদের কাছে ‘পোশাক পরার অর্থ হলো ঈশ্বরকে অসম্মান জানানো‘। এবার এতটুকু পড়ে আপনার মনে হতেই পারে যে আমরা বোধহয় কোনও আদিম যুগের কথা বলছি। সেটা একেবারেই ভ্রান্ত ধারণা। দারুন আধুনিক পৃথিবীর যত রকমের সুখ স্বাচ্ছন্দ ভোগ করা সম্ভব, সেই সব পরিষেবাই রয়েছে এই গ্রামে।
অত্যাধুনিক আলো পাখা এটার মধ্যে বিশেষত্ব কিছু নেই। কিন্তু বলতেই হয় যে প্রযুক্তিগত দিক থেকেও এখানকার মানুষ অনেকটাই এগিয়ে। এখানকার মানুষ যথেষ্ট শৌখিন। তারা একদিকে যেমন গলায় সোনার চেন, হাতে আংটি পরতে পছন্দ করেন ঠিক তেমনি রোদের সময় চোখকে রক্ষা করতে রোদচশমা ব্যবহার করতেও দেখা যায়।
আরো পড়ুন – হাত কেটে পা কেটে রক্ত দিয়ে নাম লিখে ভালবাসার কথা বোঝানোর চেষ্টা মূর্খামি ছাড়া কিছুই নয়
এখন আপনার কাছে এই দৃশ্য কল্পনা করতে একটু সমস্যা হলেও, এখানকার মানুষ খুব স্বাভাবিক ভাবেই এই জীবন কাটিয়ে আসছেন। এবং এই সংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম।
এই উলঙ্গ গ্রামের সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠা ঠিক কবে?
যুক্তরাজ্যের এই উলঙ্গ গ্রামের সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠা ঠিক কবে থেকে তা নিয়ে আগে কিছুটা ধোঁয়াশা থাকলেও, বিভিন্ন তথ্য ঘেঁটে যা জানা গেছে তার ভিত্তিতে বলা যায় যে এই সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২৯ সালে। গ্রামের আবাল বৃদ্ধ বনিতা সকলেই নগ্ন ভাবে ঘোরাফেরা করেন।
আরো পড়ুন – সাউথ ফিনলে স্ট্রিটে রয়েছে একটি ‘ওক গাছ’, অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য! আসলে ওই গাছের মালিক গাছ নিজেই।
এর মধ্যে অশ্লীলতার কিছু তাদের চোখে পড়ে না। বরং কেউ যদি সেখানে পোশাক পরে প্রবেশ করে তার দিকেই অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন এই গ্রামের মানুষ। অনেকেই মনে করেন সভ্যতার আলো এদেরকে স্পর্শ করেনি, কিন্তু এখানকার মানুষের চিন্তা ভাবনায় সেরকম কিছু ধরা পরে না।
আরো পড়ুন – বিবাহিত মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক? সব ছেড়ে বিবাহিত মহিলাদের সঙ্গে সময় কাটানো কেন পছন্দ আপনার?
বরং এখানে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা প্রায় ৯০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বসবাস করছেন। চার্লস ম্যাককাস্কি অর্থাৎ যিনি এই গ্রাম প্রতিষ্ঠা করেন তাঁর বিশ্বাস ছিল যে, প্রকৃতির মাঝে বসবাসকারী এবং শহুরে মানুষের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। তাই দুই এর বিভেদ সরিয়ে নিজের বিশ্বাসকে তিনি অন্যদের মধ্যেও প্রচার করেছিলেন বলে জানা যায়।