Breaking Bharat: হাত কেটে পা কেটে রক্ত দিয়ে নাম লিখে ভালবাসার কথা বোঝানোর চেষ্টা মূর্খামি ছাড়া কিছুই নয়। ভালোবাসার প্রমাণ দিতে গেলে রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটানোর প্রয়োজন আছে কি?
কবিগুরু বলে গেছেন,
“সখী ভাবনা কাহারে বলে, সখী যাতনা কাহারে বলে
তোমরা যে বলো দিবস রজনী ভালোবাসা ভালোবাসা,
সখী ভালোবাসা কারে কয়
সে কি কেবলই যাতনাময়?”
সুতরাং ভালোবাসার সঙ্গে যন্ত্রণার যে একটা সম্পর্ক আছে সেটা নতুন করে বলার কিছু নেই। মনের মানুষের সঙ্গে সম্পর্কের গঠন মজবুত না হলে যন্ত্রণা হওয়াটা খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু মনের যন্ত্রণার সাথে কোনোভাবেই যাতে দেহের যন্ত্রণা না মিলে যায় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত আমাদের।
হ্যাঁ যেমনটা আন্দাজ করেছেন ঠিক তেমনটাই বলতে চাইছি আমরা। হাত কেটে পা কেটে রক্ত দিয়ে নাম লিখে ভালবাসার কথা বোঝানোর চেষ্টা মূর্খামি ছাড়া কিছুই নয় (Movie style love offering with blood)।
রক্ত দিয়ে সিনেমার স্টাইলে প্রেম নিবেদন:
আমরা সকলেই কমবেশি সিনেমা দেখতে ভালোবাসি আর সেই সিনেমার কায়দায় জীবন চালানোর পরিকল্পনা থাকে অনেকের। কিন্তু বাস্তবটা সম্পূর্ণ আলাদা এই কথাটা ভালো করে বুঝে নেওয়া দরকার। সিনেমা একদম সিনেমা জায়গায় আর বাস্তবের ভালোবাসাটা ভীষণ চ্যালেঞ্জিং।
যে মানুষটাকে ভালোবাসেন তাকে ভালোবাসার কথা জানানোর জন্য সঠিক সময়ের অপেক্ষা করা বাঞ্ছনীয়। হতেই পারে সে আপনার প্রেমে পাগল হতে আগ্রহী নন। কিন্তু তার জন্য হাপিত্যেশ করে তো লাভ নেই কারণ মনের অনুভূতি এভাবে বলে হয় না।
প্রেমে কি সত্যিই প্রমাণ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা আছে?
আমরা কোনরকম ভাবেই কোন হিংসাকে প্রশ্রয় দিই না। যারা এই ধরনের কাজকর্ম করেন অর্থাৎ হাত পা কেটে বা রক্ত দিয়ে সিনেমার স্টাইলে প্রেম নিবেদনের চিন্তাভাবনা রাখেন তাদের এখনই মা বাবা বা বাড়ির লোকের সঙ্গে এই নিয়ে কথা বলা উচিত বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
খুব সাধারণভাবে ভেবে দেখুন প্রেমের কি সত্যিই প্রমাণ দেওয়ার কোনও প্রয়োজনীয়তা আছে? যদি সেটা হয় তাহলে বুঝতে হবে প্রেম সঠিক নয় বা ভালোবাসার মধ্যে সেই দৃঢ়তা নেই। সম্পর্ক বেঁধে ধরে কোনভাবেই তৈরি করা সম্ভব নয়। জোর করে আর যাই হোক কারোর মন পাওয়া যায় না।
কে বেশি পুরনো? কবিতা না প্রেম?
আরিবার বলি হাত কেটে বা রক্ত দিয়ে লিখে প্রেম নিবেদনে প্রেম সফল হওয়ার আশা যে চূড়ান্ত পাগলামির উদাহরণ সেটা বোধহয় বিশ্ব সংসারে প্রায় প্রত্যেকেই জানেন। আছি সেই কারণের জন্যই ডিজিটাল যুগে এখন নানা রকম ভাবে প্রেম নিবেদনের শৈল্পিক সত্তা আবিষ্কৃত হয়েছে।
আরো পড়ুন – সাউথ ফিনলে স্ট্রিটে রয়েছে একটি ‘ওক গাছ’, অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য! আসলে ওই গাছের মালিক গাছ নিজেই।
খুব অন্যরকম কিছু করতে হলে একটু প্রাচীন পন্থী হয়ে যান কারণ কবিতার থেকে প্রেম নিবেদনের ভালো মাধ্যম আর কিছু হতেই পারে না। সাহিত্যিকরা অনেক সময় প্রশ্ন করেন কে বেশি পুরনো? কবিতা না প্রেম? ভালোবাসার সার্থকতা কিন্তু তার প্রকাশের উদযাপনে নয়, বরং উপলব্ধির নিবিড়তায়।
আরো পড়ুন – মধু খেতে ভালোবাসেন? বাজারে গিয়ে খাঁটি মধু আর ভেজাল মধু চিনবেন কী করে?
যদি সিনেমাকেই আদর্শ বলে মনে হয় তাহলে সেই সিনেমারই একটা লাইন জানাবো এই প্রতিবেদনে। মুড়ি আছে যশ চোপড়া পরিচালিত “দিল তো পাগল হ্যায়” সিনেমার কথা? সেখানে শুরুতেই নায়ক জানিয়ে দেন তিনি প্রেমে বিশ্বাস করেন না আর নায়িকা বলেন তার বিশ্বাস এটাই যে ঈশ্বর সকলকে জুটি হিসেবেই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন।
সুতরাং মনের মানুষ মনের কথা ঠিক বুঝে নিতে পারে। তার জন্য রক্ত দিয়ে নিজের অনুভূতির কথা ব্যক্ত করার প্রয়োজন বোধহয় হয় না।
আরো পড়ুন – বিবাহিত মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক? সব ছেড়ে বিবাহিত মহিলাদের সঙ্গে সময় কাটানো কেন পছন্দ আপনার?
আপনার জীবনটা কিন্তু আপনার একার নয় সঙ্গে পরিবার জড়িত। তাই নিজের ভালোবাসার জন্য রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটিয়ে প্রিয়জনদের বিপাকে ফেলার কোনও মানেই হয় না এটা চূড়ান্ত স্বার্থপরতার নমুনা।