Breaking Bharat: ‘হিংসা’ শব্দের সঠিক অর্থ কি? মানুষের জীবনের সবথেকে ক্ষতিকারক উপাদানের মধ্যে কেন এর নাম? মানুষের জীবনে নানা রকমের পর্যায় চলে। একই ঘটনা প্রাণীচক্র তেও দেখা যায় । আর নানা ধরনের অনুভূতি জীবনের বিভিন্ন দশায় সামনে এসে দাঁড়ায়।
যার মধ্যে আছে প্রেম, ভালোবাসা, দুঃখ, আনন্দ ,কষ্ট হাসি,কান্না আর হিংসা। এই শেষের অনুভূতি নিয়ে আপনাদের কিছু কথা বলব আমরা। আসলে এটা যে কী মারাত্মক ক্ষতিকারক তার সম্পর্কে বোধহয় আমাদের সেরকম ধারণা নেই। এই একটা শব্দ জীবনকে শেষ করে দেওয়ার জন্য একাই যথেষ্ট। শুধু যেকোনো সম্পর্কে একবার এর উপস্থিতি উপলব্ধ হওয়া দরকার।
‘হিংসা’ জীবনের সবথেকে ক্ষতিকারক উপাদান:
মানুষের জীবনে ছোট থেকে বড় নানা সময় একাধিক ঘটনা ঘটে। তার ভিত্তিতে মানসিকতা পরিবর্তিত হয়। প্রেম ভালবাসা আনন্দ দুঃখ সবটা নিয়ে একটা জীবন। কিন্তু যখনই এইসব অনুভূতির থেকে বড় হয়ে ওঠে হিংসা তখনই গন্ডগোল। আসলে এটা একটা ইনসিকিউরিটি থেকে তৈরি হয়।
তার কাছে কী আছে আর আমার কাছে কী নেই এই তুলনায় কার পাল্লা ভারী, এইরকম একটা ভাবনা যখন মাথায় নড়াচড়া করতে থাকে তখন হিংসার জন্ম হয়। আসলে নিজের যা আছে তার মধ্যে সন্তুষ্ট থাকার প্রবণতা আমাদের কারোর নেই। আসলে প্রাপ্য থেকে ঈশ্বর কাউকে কখনো বঞ্চিত করেন না এই ভাবনাকে আমরা প্রাধান্য দিতে ভুলে গেছি।
সবকিছুর মধ্যেই ‘হিংসা’ চলতে থাকে:
আমাদের মনে প্রতিমুহূর্তে যে সমীকরণ চলতে থাকে সেটা হল আমার আরো পাওয়ার কথা ছিল আর অন্যজন সেটা পেয়ে যাচ্ছে তাই তার প্রতি হিংসা। ছোটবেলায় পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া নিয়ে একে অন্যের মধ্যে হিংসা আর রেষারেষির সূত্রপাত। এটা কিছুটা বাবা-মা পরিবার আর স্কুল তৈরি করে দেয়। ব্যতিক্রম যে একদম হয় না তা নয় আমরা কাউকে দোষ দিচ্ছি না।
কিন্তু চিন্তাভাবনা বদলানোর প্রয়োজন আছে এটা আজকের সমাজ বলে। তবু ও জেতা হারার ইঁদুর দৌড়ে বেস্ট কতজন হবে এইটা ভাবতে থাকায় একটা মাথার মধ্যে অবিরাম বিক্রিয়া চলতে থাকে। এর ফলশ্রুতি হিসেবেই পিছিয়ে পড়া আর এগিয়ে যাওয়ার মাঝে বন্ধুত্বের জায়গায় তৈরি হয় শত্রুতা আর তার প্রারম্ভিক পর্যায় হলো হিংসা।
কথায় কথায় গার্জিয়ানরা নিজেরাই বলে দেয়, ও যখন পারছে তুই কেন পারছিস না? ব্যাস হিংসার অনুভূতি তৈরি হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট। এখান থেকে গোটা বিষয়টা শুরু হয় পরবর্তীকালে প্রেম, চাকরি, ভালো সংসার সবকিছুর মধ্যেই ‘হিংসা’ চলতে থাকে।
একটা রোগ যার নাম হিংসা:
প্রেমিক সম্পর্কে হিংসা যে কী মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনে তার উদাহরণ বোধহয় খবরের কাগজের পাতায় কিংবা তার প্রতিচ্ছবি সিনেমার পর্দায় দেখা যায়। নিজেকে সর্বোত্তম ভাবার অভ্যাসটা যতদিন না পর্যন্ত মানুষ ছাড়তে পারবে ততদিন পর্যন্ত এই ‘হিংসা‘ নামের মহামারী থেকে পৃথিবীকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না। প্রাণীদের মধ্যেও এই দোষ চরম দেখা যায়।
আরো পড়ুন – নিয়মিত আই ব্রো করান তো? মাথার চুল বড় হয় কিন্তু চোখের ভ্রু বড় হয় না কেন?
যেমন ‘বিড়ালকে হিংসুটে প্রাণী’ বলা হয়। তারা নিজের এলাকায় নিজের স্বাচ্ছন্দ্যে অন্য কারোর হস্তক্ষেপ, অন্য কোনও বিড়ালের প্রবেশ পছন্দই করতে পারেনা। যদিও প্রাণীদের ব্যাপারটা বরাবরই মানুষের থেকে আলাদা কারণ তাদের ভাবনাচিন্তা আর মানুষের ভাবনা চিন্তার প্রসেসটা অন্যরকম।
কিন্তু ‘একটা রোগ যার নাম হিংসা‘, সেটা যে কত বড় সামাজিক ব্যাধি তা কেউ কল্পনাতেও আনতে পারে না। চাকরি ক্ষেত্রে ওর কেন প্রমোশন করছে আবার কেন হচ্ছে না, এই হিংসা তার কর্ম ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করে।
আরো পড়ুন – আপনার কি ঝাল লেগেছে? অতিরিক্ত ঘাম হচ্ছে? আপনি জানেন যে ঝাল খেলে অনেকের ঘাম ঝরে?
‘হিংসা’র কারণ আত্মবিশ্বাসের অভাব:
একটু ভেবে দেখলে বোঝা যাবে ‘হিংসা’র কারণ আত্মবিশ্বাসের অভাব। পড়াশুনা হোক বা প্রেম চাকরি হোক বা ব্যক্তিগত জীবন – কারোর জায়গা কেউ নিতে পারেনা। নিজের মধ্যে যদি সেরা হওয়ার আত্মবিশ্বাস এবং যোগ্যতা থাকে তাহলে কোনভাবেই হেরে যাওয়ার মানসিকতাকে প্রাধান্য দিয়ে মনে হিংসার জন্ম দেওয়ার কোন মানেই হয় না।
আরো পড়ুন – হেসে খেলে জীবন! কিন্তু হাসি পায় কোথা থেকে সেটা জানা আছে কি?
এই পৃথিবীতে যত জন এসেছেন প্রত্যেকের আলাদা আলাদা কাজ আছে তাই একজনের সঙ্গে আরেকজনের কোন মিল নেই। হিংসার তো প্রশ্নই ওঠে না।