ক্ষতিকর অ্যান্টিবডি (Harmful antibodies)? কোভিড থেকে সুস্থ হয়েও মুক্তি নেই! অজান্তে এখনও শরীরের ক্ষতি করছে করোনা, কতদিন সক্রিয় থাকে সেই সমস্ত অপকারী অ্যান্টিবডি? জবাব দিল মার্কিন গবেষণা
কোভিডের নয়া স্ট্রেন ওমিক্রন (Covid’s new strain Omicron) নিয়ে ধন্দে গোটা বিশ্ব। এমনকী, খোদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বয়ানেও ভাল, মন্দ দুই=ই শোনা গেছে। স্বাভাবিকভাবেই জনমানসে তৈরি হয়েছে আশঙ্কা। আর এরই মধ্যে ঘুম উড়িয়ে দিয়েছে মার্কিন মুলুকের একটি গবেষণা। তাদের দাবি, করোনা থেকে সুস্থ হয়েও পার পাচ্ছেন না অনেকে। তাঁদের শরীরে তৈরি হচ্ছে ক্ষতিকর কিছু অ্যান্টিবডি (Harmful antibodies) । যা করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর শরীরে অন্যান্য সমস্যা তৈরি করে। এমনকী, যেগুলি ভাল অ্যান্টিবডি অর্থাৎ যেগুলির উপস্থিতিতে মানবশরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, সেই অ্যান্টিবডিগুলোও ধ্বংস করে করোনার জেরে তৈরি হওয়া ওই ক্ষতিকর অ্যান্টিবডিগুলি। মার্কিন গবেষকদের এই গবেষণার রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই সাধারণ মানুষের মধ্যে শুরু হয়েছে নতুন করে ভীতি। অজান্তেই আপনার শরীরে নেই তো ক্ষতিকর সেই সমস্ত অ্যান্টিবডি?
Diabetes : ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে বুঝবেন কিভাবে? জেনে নিন
অ্যান্টিবডি বলতে সাধারণ মানুষের অধিকাংশেরই ধারণা যে, যা আদতে মানবশরীরের জন্য উপকারী। শরীরে নানা রকম আক্রমণ প্রতিহত করে অ্যান্টিবডি। কথাটি একেবারেই যে ভুল, তা নয়। তবে উপকারী অ্যান্টিবডির পাশাপাশি ক্ষতিকর অ্যান্টিবডিও রয়েছে বিজ্ঞানে। চিকিৎসা শাস্ত্র বলছে, এই ধরনের ক্ষতিকর অ্যান্টিবডিগুলির নাম অটো-অ্যান্টিবডি’। আর এগুলি মানুষের দেহে তৈরি হয় আলফা, বিটা, ডেল্টা, ওমিক্রন প্রজাতির (Omicron variant) করোনাভাইরাসের সংক্রমণে। তবে এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনও মাত্রা নেই যে, কতটা ক্ষতিকর অ্যান্টিবডি তৈরি হবে করোনা আক্রান্তের শরীরে? কারও ক্ষেত্রে কম, কারও ক্ষেত্রে আবার বেশি পরিমাণ অপকারী অ্যান্টিবডি তৈরি হয়।
Lips : শীতকাল এলেই ঠোঁট ফাটতে শুরু করে এর কারণ কি ? কি ভাবে ঠোঁট ফাটা থেকে সহজেই মুক্তি পাবেন?
সম্প্রতি একটি গবেষণায় উঠে এসেছে এই খবর দিয়ে তথ্যছে। আন্তর্জাতিক চিকিৎসাবিজ্ঞান সংক্রান্ত গবেষণা পত্রিকা ‘জার্নাল অব ট্রানস্লেশনাল মেডিসিন’-এ প্রকাশিত ওই গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছে আমেরিকার সেডার্স-সিনাই স্মিট হার্ট ইনস্টিটিউট। গবেষকরা ১৭৭ জন কোভিড রোগী ও সমসংখ্যক সুস্থ মানুষের রক্তের নমুনার প্লাজমা থেকে অ্যান্টিবডি নিয়ে এই গবেষণা চালিয়েছেন। আর তারপরই এসেছেন সিদ্ধান্তে।
করোনা সংক্রমণের (Corona infections) পর ক্ষতিকর অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়া নিয়ে এর আগে একটি গবেষণায় বলা হয়েছিল, কোভিড ভয়াবহ হয়ে উঠলে রোগীর দেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থার উপর এত বেশি চাপ পড়ে যে, তার জেরে রোগীর দেহে ক্ষতিকর অ্যান্টিবডি তৈরি হয় এবং তা সুস্থ হওয়ার পরও বেশি কিছুদিন সক্রিয় থাকে। এবার সেই একই বিষয়ের গবেষণায় উঠে এলে চাঞ্চল্যকর তথ্য। নতুন এই গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, করোনা ভয়াবহ হওয়ার প্রয়োজন নেই, যেসব আক্রান্তের উপসর্গ ছিল না বা মৃদু উপসর্গ ছিল, তাঁদের ক্ষেত্রেও ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে এই ক্ষতিকর অ্যান্টিবডিগুলি।
Amla Health Benefits : আমলকি কেন খাবেন ? খেলে কি কি উপকার হয় ?
এমনকী, এই অ্যান্টিবডি একবার তৈরি হলে রোগী কোভিড থেকে সেরে উঠলেও তারপর অন্তত ৬ মাস সক্রিয় থাকে মানবশরীরে। আর এই অ্যান্টিবডিগুলির সক্রিয়তায় মানুষের দেহে নানারকম ক্রনিক প্রদাহ হয়। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয় ত্বক, সন্ধি ও স্নায়ুতন্ত্রের বিভিন্ন অংশের কোষ, কলাগুলির। আবার এমন কয়েকটি ক্ষতিকর অ্যান্টিবডিরও হদিশ মিলেছে যারা পুরুষের চেয়ে মহিলাদের পক্ষে হয়ে ওঠে আরও বেশি বিপজ্জনক।