Breaking Bharat: নীলকুরিঞ্জি (Neelakurinji)! যে ফুল ১২ বছরে একবার ফোটে, এমন ফুল সম্পর্কে জানেন কি? পৃথিবী জুড়ে একাধিক রহস্য এদিক ওদিক ছড়িয়ে রয়েছে। সব তো আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব হয় না। তবু জানার চেষ্টা করে যাওয়া। প্রকৃতি নিজেই বিস্ময়ের ডালি সাজিয়ে উপহার দিয়েছে সমাজ সভ্যতাকে।
অবাক হয়ে মানুষ শুধু দুচোখ ভরে সেই বিস্ময়ের সাক্ষী হতে পেরেছে। আজ সেরকমই এক ঘটনার কথা বলব যার সম্পর্কে হয়তো আপনার খুব একটা ধারণা নেই। বিরল ঘটনা বললে ভুল বলা হবে না এইটুকু বলতে পারি।
নীলকুরিঞ্জি 12 বছরে ফুল ফোটে কেন? (Neelakurinji Flowers):
প্রকৃতির বিভিন্ন প্রান্তে আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে নানা গাছপালা। এসবের মধ্যে কিছু আমাদের জানা চেনা তবে বেশিরভাগটাই অচেনা অজানা। নাম না জানা ফুলের হিসেব করতে গেলে ক্যালকুলেটরও অংক ভুল করবে। এক এক রকমের ফুলে এক এক রকমের বৈশিষ্ট্য।
আর সেই থেকে সুবাসিত সুধা রস যেন ছড়িয়ে পড়ে প্রকৃতির মাঝে। সাদা এবং রঙিন ফুল এই দুটো বেসিক পার্থক্য আমরা সকলেই করতে পারি। সাদা ফুল রাতের বেলা ফোটে, রঙিন ফুল সকালে। রঙিন ফুলের থেকে সাদা ফুলের গন্ধ অনেকটাই বেশি।
নীলকুরিঞ্জি ফুল কোথায় পাওয়া যায়?
কিন্তু আজ এমন এক ফুলের কথা বলব যে ফুল প্রতিদিনে বা প্রতি রাতে ফোটে না। বলা যেতে পারে প্রতিদিন ফোটেই না। অবাক হয়ে ভাবছেন তো এমনটা হয় নাকি? এই দুনিয়ায় কত কী যে হয় তার হিসেব না হয় নাই বা করলেন। আজ বলব এমন এক ফুলের কথা ‘যে ফুল ১২ বছরে একবার ফোটে‘ (Neelakurinji blooms in 12 years)।
আরো পড়ুন – জানেন! ‘নিজের কাজ নিয়ে অখুশি’ হওয়া মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে? কিন্তু কেন এমন ঘটনা?
রাজকীয় সৌন্দর্য নিয়ে জন্মায় এই ফুল কিন্তু পড়ে থাকে অনাদরে অবহেলায়। নীলগিরির পাহাড়ি অঞ্চলের ফুল , নাম তার ‘নীলকুরিঞ্জি‘ (Neelakurinji Flowers)। এই ফুলের সন্ধান পেতে গেলে আপনাকে যেতে হবে পশ্চিমঘাট পর্বতমালাতে। এই অঞ্চলটিকে এককথায় নীলকুরিঞ্জি ফুলের রাজ্য বলা হয়।
নীলকুরিঞ্জি ফুল সাধারণত উঁচুতে ফোটে:
গোটা পর্বত এক আশ্চর্য নীল গালিচায় ভরে ওঠে। ফুলের ছটা যেন প্রকৃতিকে ভরিয়ে দেয়। বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘স্ট্রোবিল্যান্থেস কুনথিয়ানা‘। পর্বতের এই ফুল দেখতে ভিড় জমান পর্যটকরা। এক ঝলকে দেখলে মনে হবে নীল বেগুনি ফুলের বাগান , আসলে অনেকটা জংলী ফুলের মতো।
আরো পড়ুন – কুমারীদের কীভাবে ‘কুমারী পুজোয়’ নির্বাচন করা হয় ? কুমারীদের এই বিষয়টা জানা দরকার!
আপনাদের জানাই , নীলকুরিঞ্জি (Neelakurinji) ফুল সাধারণত ১৩০০-২৪০০ মিটার উঁচুতে ফোটে। যদি বৈশিষ্ট্য বলেন তাহলে বলতে হয় গুল্মজাতীয় বহুবর্ষজীবী এই গাছ। উচ্চতা ধরুন প্রায় ৩০-৬০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। আবার সর্বোচ্চ ১৮০ সেন্টিমিটার পর্যন্তও এই গাছকে বড় হতে দেখা গেছে অনেক জায়গায়।
জানেন ‘নীলকুরিঞ্জি’ ফুল প্রায় ২৫০ প্রজাতির হয়?
আগাছার মতোই এই গাছের বেঁচে থাকা এবং মৃত্যু। সবথেকে কুঁড়ি থেকে ফুল ফোটা পর্যন্ত প্রতিনিয়ত রঙ বদলায় এই ফুল। ফুলের রঙের এই পরিবর্তন চোখে পড়ার মতো। আপনি কি জানেন ‘নীলকুরিঞ্জি ফুল‘ প্রায় ২৫০ প্রজাতির হয়।
আরো পড়ুন – আদিবাসী জনগোষ্ঠী! ‘আফ্রিকার আদিবাসীদের রীতি রেওয়াজ’ সম্পর্কে জানেন?
এর মধ্যে আমাদের দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৪৬ টির মতো প্রজাতি দেখতে পাওয়া যায়। প্রায় ১যুগ লাগে এই ফুলের জন্মাতে। অর্থাৎ দুই বছর পর ফুটলেও ওই বছরের যে কোনও সময় এই ফুলের দেখা পাওয়া যায়। তবে এই ফুল ফোটার পিক সিজন হল অগাস্ট থেকে অক্টোবর।
নীলগিরির ‘নীলকুরিঞ্জি ফুলের’ সৌন্দর্য্য (Neelakurinji):
ঠিক এই সময়েই গাড়োয়ালের ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স এর সৌন্দর্য্য ছাপিয়ে যায়, ‘নীলগিরির নীলকুরিঞ্জি ফুলের সৌন্দর্য্য‘। এই ফুলের কারণে পর্যটন ব্যবসা নীলগিরি অঞ্চলে। শুধু নীলগিরি নয়, আশেপাশের অঞ্চল বরাবরই পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
আরো পড়ুন – নিজের স্কিন সুস্থ রাখতে জানেন? আপনার ‘স্কিন ড্রাই নাকি ডিহাইড্রেটেড’ সেটা জানেন তো?
নীলগিরির প্রায় ৩২ বর্গকিমি এলাকা প্রতি ১২ বছরে একবার এই নীল রঙের ফুলে রঙিন হয়ে যায়। আর এতেই পর্যটক সমাগম। কখনো আবার ১৬ বছর লেগে যায়। সবথেকে বড় এবং আশ্চর্য্য ব্যাপার হল নীলকুরিঞ্জি ফুল একমাত্র ভারতের মাটিতেই ফোটে।