Breaking Bharat: কখনো গাড়ির চেন টেনে ট্রেন থামিয়েছেন? জরিমানা হয়েছে নিশ্চয়ই? কেন চেন টানলে গাড়ি থামে বলুন তো? (Why does a train stop by pulling its chain?)
রেলগাড়ি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেমন দ্রুত পৌঁছে দেয় তেমনি স্মৃতিতে অনেকগুলো নস্টালজিয়াকে একসঙ্গে জুড়ে দিতে পারে। সে কারণে ট্রেনের সফর করতে পছন্দ করেন অনেকেই। এই ট্রেন নিয়ে বিভিন্ন সাহিত্যিকদের নানা ঘটনার কথা কাব্যে বর্ণিত আছে। কখনো মজার কখনো ভয়ঙ্কর কখনো খুব সিরিয়াস। রেলগাড়ি ঘিরে মানুষের উৎসাহ আজও চোখে পড়ার মতো।
ট্রেনের একটা অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে চেন টানা। মানে এই কাজটি সাহস করে করতে পারকেই গাড়ি থেমে যাবে। তারপর অবশ্য মোটা টাকার জরিমানা বা শাস্তি ভোগ করতে হতে পারে আপনাকে। যদিও রেলের তরফ থেকে স্পষ্টভাবে নির্দেশিকা বলা আছে কোন কোন ক্ষেত্রে জরিমানা এড়ানো সম্ভব। কিন্তু চেন টানলেই যে গাড়ি থামবে সেটা কী করে নিশ্চিত করেন রেলের ইঞ্জিনিয়াররা জানেন?
বিজ্ঞানের একটা নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। সেই নিয়ম মেনে একেবারে কার্যকারণ ব্যাখ্যা দিয়ে প্রতিটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রতিষ্ঠিত হয়। এমনিতেই ট্রেন চালানোর বিষয়টির মধ্যে ইঞ্জিনিয়ারিং লুকিয়ে আছে। থামার সঙ্গেও ওই একই কারিগরি বিদ্যা জড়িয়ে আছে। তবে কি জানেন ব্রেক সিস্টেমটা বেশ জটিল।
কেন জটিল? আপনি চলন্ত ট্রেনের থেকে যদি নামতে যান তাহলে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কারণটা নিউটনের সূত্রকে বারবার করে প্রমাণ করে দেয়। স্থির বস্তু চিরকাল স্থির থাকবে এবং গতিশীল বস্তু চিরকাল সমবেগে সরলরেখায় চলতে থাকবে – এই বিষয়টা আশা করি আমরা সকলেই জানি।
এবার যে ট্রেনটা ছুটে চলেছে সে যদি হঠাৎ করে ব্রেক কষে তাহলে কত বড় ঝাপটা লাগতে পারে সেটা তো আপনারা বুঝতেই পারছেন। বাইক বা চার চাকা কিংবা বাসে চড়তে গেলেও এই রকম অবস্থা হয়। অর্থাৎ হঠাৎ ব্রেক কষলে ছিটকে পড়ে যাই আমরা। অথচ ট্রেনের ক্ষেত্রে ইঞ্জিনিয়াররা অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে এই কাজটি করেছেন। সেই পদ্ধতি জানাবো আপনাদের।
দেখুন সাধারণ মানুষ যে ট্রেনের চেন টেনে ট্রেন বন্ধ করার ব্যবস্থা করেন সেই চেনের একটা প্রান্ত রেলের বগিতে থাকলেও , তার আরেক প্রান্ত ব্রেকের বাতাসের পাইপের কোনও একটা ভাল্বের সঙ্গে যুক্ত থাকে। এবার আপনি যদি সজোরে টান দেন তাহলে সেই ভাল্ব খুলে গিয়ে বাতাস ঢোকা বা বের হওয়ার মতো ব্যবস্থা করে দেয়।
আরো পড়ুন – ভিটামিন আর আয়রন সাপ্লিমেন্ট খেতে খেতে নিজের বিপদ ডাকছেন না তো?
দেখুন আসলে বাতাস ঢোকানো বা বের করার মাধ্যমে এই ব্রেক ব্লক চাকার গোড়ায় গিয়ে ধাক্কা দেয়, এর ফলে ঘুর্ণায়মান চাকাকে আটকে দেওয়া সহজ হয়। ভালো করে লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবেন প্রতিটি ট্রেনের ক্যারেজ একটি পাইপের মাধ্যমে যুক্ত থাকে। এটাকে হোস পাইপ হলে।
আরো পড়ুন – জীবনে বড় হতে গেলে খাটতে হবে নাকি অন্যের পা চাটতে হবে?
এই পাইপের মাধ্যমে আসলে প্রত্যেকটি ক্যারেজ ও ইঞ্জিনের ব্রেক পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত অবস্থায় থাকে। ইঞ্জিনিয়াররা প্রতিটি ট্রেনের ইঞ্জিন ও শেষের কামরায় ব্রেক ভ্যানে একটি বাতাসের প্রেশার মাপার মেশিন রেখে দেন। আর এটা দেখে ড্রাইভার বা গার্ড সহজে বুঝতে পারেন তার ট্রেনের কোথাও ব্রেক করা হয়েছে বা বাতাস বেরোবার বা প্রবেশের জায়গা তৈরি হচ্ছে কিনা।
আরো পড়ুন – ভাত রান্না পর ভাতের মাড় কি ফেলে দেন? জানেন অন্য কোন কাজে ব্যবহার করা যায় একে?
সুতরাং এটাই হল সেই উপায়, যার মাধ্যমে গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। কিন্তু আপনি কখনোই চেন টানার মতো অপরাধ করবেন না। কারণ এটা অনেক বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে বাকি যাত্রীদের জন্য।