Breaking Bharat: চন্দ্রযান ৩- এর সফল উৎক্ষেপণ, নেপথ্যে আছে নারী শক্তির হাত? কেন চর্চায় ‘রকেট-মানবী’ ঋতু কারিধাল (Who is Ritu Karidhal Srivastava)!
শুধুমাত্র পৃথিবী থেকে বসে চাঁদের দিকে তাকিয়ে আক্ষেপ করা নয়, এবার চাঁদ কে ঘরে আনার পালা বা যাবেই নিজের ঘর তৈরি করার পালা। চেষ্টা আজ থেকে নয় হচ্ছে বেশ কয়েক বছর ধরে। চাঁদ আমাদের আত্মীয় হয়ে যায় সেই ছোটবেলা থেকেই কিন্তু এবার সেই চাঁদ মামার বাড়িতে পদার্পণের সময় এসে গেছে। চন্দ্রযান তিনের সাফল্য নিয়ে আগে থেকেই উচ্ছসিত ১৪০ কোটি ভারতবাসী।
অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে কিন্তু অবশেষে সেই শুভক্ষণ এসেছে। তাই শুক্রবারের মহেন্দ্রক্ষণেই চাঁদের দেশে যাচ্ছে ভারতের চন্দ্রযান-৩ । আগে দুবার চেষ্টা হয়েছে কিন্তু পুরোপুরি স্বপ্নের হাসি হাসতে পারেনি ভারতবাসী এবং বিজ্ঞানীরা।
নেপথ্যে আছে ‘রকেট-মানবী’ ঋতু কারিধাল!
তবে এবার আর অসফল হওয়ার কোন জায়গায় নেই তাই মাইলফলক গড়তেই হবে -এই লক্ষ্য নিয়ে ISRO দারুণ কাজ করেছে। গত কয়েক দিনে এতবার লেখালেখি হয়েছে যে প্রত্যেকদিন জেনে গেছেন এর আগে আমেরিকা, রাশিয়া , চিন যান পাঠিয়েছে চাঁদ মামার বাড়িতে। এবার ইতিহাস তৈরি করার পালা ভারতের।
পূর্ব নির্ধারিত সূচি মেনে আজ শুক্রবার অর্থাৎ ১৪ জুলাই শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারের লঞ্চিং প্যাড থেকে ঠিক দুপুর ২টো ৩৫ মিনিটে চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দিল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর চন্দ্রযান-৩ । সফল উৎক্ষেপণ নিয়ে কোথাও কোনও ত্রুটি নেই।
তবে অনেকেই জানেন না যে এই সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন এক ভারতীয় নারী -ঋতু কারিধাল শ্রীবাস্তব। ভারতের এই রকেট মানবী আসলে চন্দ্রযান-৩ অভিযানের মিশন ডিরেক্টর। আগেও তার দক্ষতা প্রমাণিত হয়েছে আর এবারও তাঁকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত ISRO-এর বিজ্ঞানীরা।
নারী চাইলে ব্রহ্মাণ্ড জয় করতে পারে চাঁদ সেখানে তুচ্ছ ব্যাপার। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার গবেষক ঋতুর মুকুটে সাফল্যের পালক অবশ্য নতুন কিছু নেয়। মিশন মঙ্গল অভিযানের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন ঋতু। চন্দ্রযান-৩ অভিযানে যাতে এর আগের বারের অর্থাৎ চন্দ্রযান ২ এর ভুলের পুনরাবৃত্তি না হয় সেইদিকেই বিশেষ নজর দিয়েছেন ঋতু।
কে এই ঋতু কারিধাল শ্রীবাস্তব?
চলুন একটু ব্যক্তিগত পরিচয় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। খুবই সাধারণ ছাপোষা লখনউ এর মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েটা বরাবরই গবেষণা করতে চাইতো। আর ঠিক সেই কারণে ভারতের ইসরো হোক আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা, যেখানেই মহাকাশ গবেষণা সংক্রান্ত কোনও খবর , বিন্দুমাত্র দেরি না করে তা নিয়ে পড়াশোনা শুরু করে দিতেন।
আরো পড়ুন – Seema Haider: পাকিস্তানের বধূ সীমা হায়দারকে চেনেন? ক্রমশ বড় হচ্ছে শচীন সীমা বিতর্ক
সব ধরনের আর্টিকেলের কাগজের কাটিং নিজের কাছে সযত্নে রেখে দিতেন। তিনি ১৯৯৬ সালে পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর পাশ করেন ।তারপর বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সেসে এমটেক নিয়ে পড়ার সুযোগ পান এবং অবশ্যই সেখান থেকেও দারুণ নম্বর পেয়ে পাশ করেন।
আরো পড়ুন – চন্দ্রযান-৩ এর বড় সাফল্য! দুটো কক্ষপথ পেরিয়ে এবার কি তৃতীয় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি রোভার?
এবার কর্ম জগতে প্রবেশের পালা, ১৯৯৭ সালে ইসরোতে যোগ দেন ঋতু। এরপর জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক জার্নালে তাঁর প্রায় ২০টি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। যেমন তিনি ছাত্রী হিসেবে শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রিয় ছিলেন সেভাবে কর্মক্ষেত্রে ও তার সিনিয়াররা তাকে খুবই ভালোবাসেন। মেয়ে মানে পিছিয়ে থাকা নয়, এগিয়ে গিয়ে নেতৃত্ব দেওয়া প্রমাণ করেছেন এই মহিলা বিজ্ঞানী।
আরো পড়ুন – ৩৫ বছর বয়স কি দুঃসহ নাকি অভিশপ্ত? কেন এই বয়সে পৌঁছলেই চাকরি চলে যায়?
এ বার চন্দ্রযান-৩ অভিযানের মিশন ডিরেক্টর তিনিই। এর আগে অবশ্য ঋতু ইসরো টিম অ্যাওয়ার্ড ফর এমওএম সম্মান পেয়েছিলেন । এমনকি’ওমেন অ্যাচিভার্স ইন এয়ারোস্পেস, ২০১৭’ সম্মান পেয়েছেন ঋতু কারিধাল শ্রীবাস্তব। এবার তাঁর কাঁধেই ভরসা রেখেছে ISRO। সব ঠিক থাকলে আগামী ২৩ শে অক্টোবর চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছে যাবে চন্দ্রযান তিন। আমরা সাক্ষী হব ইতিহাসের।