Breaking Bharat: A. R. Rahman: মিউজিক্যাল মায়েস্ট্রো দিলীপ কুমারকে চেনেন? অস্কারজয়ী সুরকার নিজের নাম বদলে সুপারষ্টার! কীভাবে? গান ভালোবাসে না এমন মানুষ পৃথিবীতে বিরল। আসলে music has it’s own language, তাই সুরের প্রেমে পড়তেই হয় সকলকে। শুধু মানুষই নয় পশু পাখিরাও এই রসে মজে যায়।
আর সুরস্রষ্টা যদি হন দেশের মিউজিক্যাল মায়েস্ট্রো, তাহলে তো দেশমাতৃকার উদ্দেশ্যে সুরেলা ছন্দে বলতেই হয় “মা তুঝে সালাম” (maa tujhhe salaam)। ঠিক ধরেছেন, আজকের প্রতিবেদনের মূখ্য চরিত্র গায়ক সুরকার দিলীপ কুমার। কী অবাক হলেন? বেশ তাহলে এনার আরেকটা নাম বলি যে নামে গোটা বিশ্ব তাঁকে চেনে – এ আর রহমান!
ভারতীয় সঙ্গীতের মহাগুরু তিনি। দেশের ছন্দকে নয়া সুরে বেঁধে ফেলেছেন অনায়াসে। নসরিন মুন্নি কবীর রহমানকে নিয়ে তাঁর জীবন নিয়ে একটি বই লিখে ফেলেছেন, ‘এ আর রহমান, দ্য স্পিরিট অব মিউজিক’। গান রহমানের প্রাণের থেকেও বেশি প্রিয়।
তাঁর সঙ্গে কাজ করার জন্য শুধু দেশেরই নয় বিদেশের পরিচালকরাও যেন মুখিয়ে থাকেন। রোম্যান্স হোক বা সিচুয়েশন মত মিউজিক দেওয়া, তিনি অনবদ্য, সেরার সেরা। আদ্যন্ত ধর্মপ্রাণ মানুষটির ভক্তি আর ঈশ্বর , আল্লাহ আর যীশুর উপর বিশ্বাস চরম আস্তিকদেরও হার মানাবে। কিন্তু তাঁর জীবনের এত পরিবর্তন কেন, জানেন কিছু? ধর্ম পরিবর্তন করে ঠিক কী প্রমাণ দিতে চাইলেন তিনি?
নিজের শিল্পের সম্ভার নিয়ে বিশ্ব জুড়ে প্রশংসার শিখরে পৌঁছে গেছেন এ আর রহমান (A. R. Rahman)। তবে এই পরিচয়ে জন্ম নেন নি তিনি, আসল নাম দিলীপ কুমার। বিখ্যাত অভিনেতার নাম একেবারেই না পসন্দ ছিল রহমানের। তিনি ভাবতেই পারতেন না যে দিলীপ কুমারের মত গুণী মানুষের নাম আর তাঁর নাম এক হতে পারে।
এরপর বাবার অকাল মৃত্যুতে ভেঙে পরে পরিবার। রহমানের মা করিমা বেগম বরাবরই ধর্মপ্রাণ মানুষ। সব দেব দেবীর প্রতি তাঁর ছিল চরম আস্থা। ১৯৮৬ সালে রহমানের মা করিমা বেগম সুফি পীর করিমুল্লাহ্ শাহ কাদরির সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তাঁর অসুস্থতার কথা জানতে পারেন এবং তাঁর শুশ্রূষা করেন।
ঠিক যেন বাবা-সন্তানের সম্পর্কে আবদ্ধ হয়ে পড়েন দুজনে। এর পর সুফির প্রভাব পড়ে রহমানের উপর। যদিও পীর তাঁদের ধর্ম পরিবর্তন করার কথা কখনই বলেননি। কিন্তু রহমান আকৃষ্ট হন সুফি ভাবনার প্রতি। তার পর সুফি ধর্মকে গ্রহণ করেন নিজের জীবনে লালন করার জন্য।
হিন্দি থেকে পাঞ্জাবি, সুফি, পপ থেকে শুরু করে বাংলা বাউল সুরের মেজাজ ধরা পড়েছে তাঁর সৃষ্টিতে। তাঁর প্রতিভা যেন গানের জগতের অপার বিস্ময়! এই দেখুন এতক্ষণ ধরে প্রতিবেদনে রহমানের পুরো নামটাই বলা হয় নি একবারও। আল্লাহ্ রাখা রহমান– এই হচ্ছে তাঁর নাম।
আরো পড়ুন- Stomach pain : পেটে যন্ত্রণা অনুভূত হচ্ছে? গ্যাসের ব্যথা ভেবে বিষয়টি এড়িয়ে যাবেন না!
দিলীপ কুমার নামের পরিবর্তন (Dilip Kumar name change) কিন্তু এক হিন্দু জ্যোতিষীর কাছে গিয়ে। তিনিই পরামর্শ দিয়েছিলেন, যা মেনে নেন রহমান। চেন্নাইয়ের এক হিন্দু পরিবারের ছেলেটা মুসলিম হয়েও ধর্ম নিয়ে কোনো বিভাজনে মদত দেন নি কখনো। শুধুই নিজের কাজকে গুরুত্ব দিয়ে গেছেন।
আরো পড়ুন- Dried fish : শুঁটকি মাছ আসলে কি? কোন মাছকে আপনি শুঁটকি মাছ বলবেন?
১৯৯২ সালে মণিরত্নম পরিচালিত একটি বিজ্ঞাপনের জিংগল দিয়ে তাঁর সঙ্গীতের ম্যাজিক শুরু। তবে সেখানে তিনি ছিলেন গায়ক। ছোটো থেকে ইঞ্জিনিয়র হওয়ার স্বপ্ন দেখা ছেলেটার জীবনের মোড় ঘুরে যায় মণিরত্নম এর সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর থেকেই। ” রোজা”র রেকর্ড নিয়ে কারোর কিছু বলার নেই।
রহমানের কেরিয়ারে শুধুই গানের ছন্দ। নিজের সৃষ্টির আনন্দে সদা ব্যস্ত তিনি। কোনও বিতর্ক বা জল্পনা, সমালোচনায় তাঁকে পাওয়া যায় না। এশিয়া মহাদেশের মধ্যে তিনিই প্রথম শিল্পী যিনিএকই বছর দুটো অস্কার পুরস্কার জিতে নিয়ে ছিলেন।
আরো পড়ুন- hilsa : মাছের রাজা ইলিশের পুষ্টিগুণ নিয়ে আপনাকে দেব কিছু চমকপ্রদ তথ্য
সঙ্গে ৪ বার জাতীয় পুরস্কার আর ১৫ বার ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। তাঁর সঙ্গে কাজ করা যেকোনো পরিচালক প্রযোজকের স্বপ্ন। ধর্ম নয় কর্মেই নিজের সেরা পরিচয় বানিয়েছেন এ আর রহমান!