Breaking Bharat: বিয়ে মানেই কি পাত্র পক্ষের দাবি পূরণ? টাকা, সোনা, আসবাব আর কত দেবে কন্যা পক্ষ? বাড়িতে বিয়ের কথা উঠলে সবার আগে কন্যা পক্ষ ভাবতে বসে যৌতুক কত দিতে হবে।
বিয়েতে শুধু দুই মানুষ নয়, মিলে যায় দুই পরিবার। আর এই বন্ধনে জুড়ে যায় স্বার্থের গন্ধ। একটু অদ্ভুত শুনতে লাগলেও সব কটা বিয়ের এটাই বড় সত্যি। আইন করে মানসিকতা পাল্টানো যায় কি? আমরা বলছি সমাজের যৌতুক দেওয়ার নিয়মের কথা। আজকাল এত ধরনের থিমের বিয়ে তবু বাস্তবে প্রদীপের নিচের অন্ধকারটা আগের মতো রয়েই গেল।
আজকের সমাজ অনেকটা বদলেছে। পাল্টে গেছে ছেলে মেয়েদের চিন্তা ভাবনা। কিন্তু তার আগের প্রজন্মের ভাবনা কি সেভাবে বদলানো গেল? উত্তরটা যে না সেটা একটা ছোট বাচ্চাও জানে। বাড়িতে বিয়ের কথা উঠলে সবার আগে কন্যা পক্ষ ভাবতে বসে যৌতুক কত দিতে হবে।
আগে পণ প্রথা নিয়ে কত পরিবারকে লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়েছে। কত বাবা মা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। তবু থামেনি এই কাণ্ড। আজকাল নগদ টাকা আদায় সেভাবে না হলেও ব্যাপারটা অন্যভাবে পুষিয়ে নেওয়ার আদপ কায়দা চলছে। ফ্রিজ, টিভি, গাড়ি , ফ্ল্যাট এই সব কিছু খুব সাধারণ চাহিদা বলে ধরে নেওয়া হয়। সবটা করার উদ্দেশ্য একটাই শুধুই নিজের সন্তানকে সুখী রাখা।
সুখের আসল সংজ্ঞা কী?
কিন্তু কেউ কি বলতে পারে সুখের আসল সংজ্ঞা কী? ঠিক কতটা স্বাচ্ছন্দ্য পেলে আপনি নিজেকে সুখী বলতে পারবেন? এই প্রশ্নগুলোর কোন উত্তর নেই কিন্তু সমাজের তথাকথিত তৈরি করা কিছু ভুল নিয়ম আছে, যা আমরা আজও মেনে চলেছি। বা বলা ভাল অজান্তে এবং জেনে প্রশ্রয় দিয়ে চলেছি। প্রতিবাদ করতে সাহস নেই কারণ তাতে বোধহয় আমার বাড়ির মেয়েটার ক্ষতি হয়ে যাবে এই আশঙ্কা থাকে।
আরো পড়ুন – বিয়ের পর কি পড়াশোনা বন্ধ? প্রতিশ্রুতি রাখলো না শ্বশুর বাড়ি?
এইভাবেই চলছে যুগের পর যুগ কোনও পরিবর্তন নেই। যে সময় দাঁড়িয়ে রামমোহন বিদ্যাসাগর গর্জে উঠেছিলেন সমাজের সব অনিয়মের বিরুদ্ধে সেই সময় পেরিয়ে আজ এত উন্নত হয়েছে ,সমাজ তবুও মানসিকতার বদল ঘটল কই?
আরো পড়ুন – জিন্সের সঙ্গে সোনার সম্পর্ক! জিন্স পরতে পছন্দ করেন? ডেনিম জিন্স কেন এত পছন্দের?
যৌতুক বিরোধী আইন থাকা সত্ত্বেও যৌতুকের কারণে অত্যাচার, লাঞ্ছনা, অপমান আর শেষে খুন বা আত্মহত্যা ঠিক এটাই তো ঘটে চলেছে। শরীরের কোন অংশ যদি সংক্রমিত হয়ে পড়ে তাহলে শরীর থেকে কেটে সেটাকে বাদ দেওয়া হয়। তাহলে সমাজের এই মারাত্মক অসুখ কেন বাদ দেয়া যাচ্ছে না?
আর কত সহ্য করবেন বলতে পারেন?
আমরা কোনো ভাবেই কারোর ভাবাবেগ কে আঘাত করছি না।প্রত্যেক বাবা মা চান সন্তান ভালো থাকুক। কিন্তু তাই বলে অন্যায় আর নিয়মের নামে অন্যকে নিঃশেষ করার প্রবণতা আর মানসিকতা কখনোই সমর্থনযোগ্য হতে পারে না। আর ঠিক সেই কারণেই এই প্রজন্মকে যৌতুক বিরোধী ভাবনার প্রসার আর বিস্তারে মন দিতে হবে।
আরো পড়ুন – Hero Alom: হিরো না হয়েও কী করে জনপ্রিয়তার শীর্ষে হিরো আলম?
মেয়ে বা ছেলে দুজনের সমান। কেউ কারোর থেকে কম বা বেশি নয় যে এইভাবে একে অন্যের কম্পেন্সেশন দিতে হবে। নিজেকে প্রশ্ন করুন আপনার কন্যা আপনার অহংকার। তাকে এইভাবে যৌতুক দিয়ে বিয়ে দেওয়ার অর্থ তার অস্তিত্বকে অপমান করা নয় তো! যেটা চলে আসছে সেটাই ঠিক এই ভাবনা বদলান। সাদা কে সাদা আর কালোকে কালো বলুন। তবে পরবর্তী পরিবর্তন আসবে।