Breaking Bharat: জীবনে বড় হতে গেলে খাটতে হবে নাকি অন্যের পা চাটতে হবে? আশা রাখি একটু অবাক হলেন প্রতিবেদনের শিরোনামে। হওয়ার কথাই বটে কারণ এইভাবে কি ভাবনা চিন্তা করা যায়? কিন্তু কী বলুন তো বাস্তব জগতে এটাই বোধহয় সবথেকে বড় ভাবনা চিন্তা করার মতো কারণ। আর হবে নাই বা কেন আজকাল সবকিছুই তো সুপারিশে হচ্ছে।
জন্ম থেকে মৃত্যু, বিয়ে থেকে ডিভোর্স সবেতেই একজনের সুপারিশ আর একজন সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত, তাহলেই হল। আর কোন কিছুর প্রয়োজন বাস্তব পৃথিবীতে হয় না। আপনার কী মনে হয় শিরোনামে যে দুটো অপশনের কথা বলা আছে তার মধ্যে কোনটা আপনার নিজের জন্য প্রযোজ্য হোক?
ছোটবেলা থেকে মা-বাবারা পড়াশোনা করিয়ে সন্তানদের বড় করে। এরপর তারা চান সন্তান এমন কিছু করবে যাতে সবার মুখ উজ্জ্বল হয়, আর সন্তান নিজেও ভালো থাকে। এটা কখনো কখনো প্রত্যাশা বাড়িয়ে দারুন কিছু পজিটিভ রেজাল্ট দেয় আবার কখনো বড়সড় চাপের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তখন যেন তেন প্রকারেনো লক্ষ্যে পৌঁছানোটাই যেন উদ্দেশ্য হয়ে যায়।
সহজে কোন কিছু পেলে কিন্তু তার কদর থাকেনা এটা আসলে কি আপনি বিশ্বাস করবেন। অনেক পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে কিছু পাওয়ার মধ্যে যে পূর্ণতা যে আনন্দ সেটা সহজলভ্য হওয়ার মধ্যে নেই। মানুষ হিসেবে অর্থাৎ ব্যক্তিবিশেষে ভাবুন বা বস্তুবিশেষে, দেখবেন লড়াই করে কিছু পাওয়া, জিতে নেওয়া- তার একটা আলাদা গর্ব আছে। বড় হবার জন্য পরিশ্রম করাটা দরকার।
শর্টকাট, ম্যাজিক এই শব্দগুলো ক্ষণস্থায়ী হতে পারে চিরস্থায়ী কখনোই নয়। একটা সময় পর যখন ম্যাজিক টা আর কাজ করবে না তখন জীবনটা বড্ড সাদামাটা আর বেরঙিন লাগবে। শর্টকাট খুঁজতে খুঁজতে দেখবেন নিজের জীবনের আনন্দগুলোই শর্ট হয়ে গেছে তখন আর বাঁচার সময় টুকু আপনাকে জীবন দেবে না।
অফিসে পরিবারে সর্বত্রই অন্যকে খুশি করে চলার যে অলিখিত নিয়ম এই মুহূর্তে বেশ হ্যাপি হয়েছে বা ট্রেনিং হয়ে আছে সেটা যে আসলে আপনার আমার এবং সমাজের জন্য খারাপ সেটা বোঝার মত মানসিকতা কি নেই বা পরিণত কি আমরা নই বলুন তো?
একটা চাকরি পাবার পরিশ্রম করে প্রমোশনের চিন্তা করুন তাবেদারি করে অন্যের পা চেটে নয়। এতে আপনি নিজের জন্যই বা কি দৃষ্টান্ত রাখবেন আর আগামী প্রজন্মকেই বা কী বার্তা দেবেন যে আপনি অন্যের মাথায় তেল দিয়ে আজ এই জায়গায় পৌঁছেছেন!
আরো পড়ুন – রুটি খেতে ভালবাসেন? বাসি রুটি কি ভালবাসেন আপনি?
ভাবতে অবাক লাগে যে আজকের সমাজ আর চারপাশ এমন হয়ে গেছে সব জায়গায় শুধুমাত্র তোষামোদ করে কার্যসিদ্ধি করার প্রবণতা প্রত্যেকের মধ্যে কমন হয়ে গেছে। একবারও নিজের উপর বিশ্বাস রেখে কষ্ট করে পরিশ্রম করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার ভাবনা চিন্তা কারোর মাথায় আসে না।
আরো পড়ুন – পৃথিবীতে মূল্যবান ধাতু হিসেবে সোনার নাম কেন আসে বলতে পারেন? কোন জায়গায় সোনা বাকিদের থেকে আলাদা?
এটার জন্য শুধু যে আমাদের বর্তমান মানসিকতা দায়ী সেটা নয় এই মানসিকতা তৈরি হওয়ার পেছনে পরিকাঠামো অনেক বেশি করে দায়ী। কারণ একজন ব্যক্তি যখন নিজের যোগ্যতায় কিছু করতে যাচ্ছেন তিনি সেই জায়গাটা পাচ্ছেন না। অথচ অন্যের পা চেটে বা তৈলাক্ত মাথায় আরো তেল দিয়ে সহজে সেটা হাসিল করা যাচ্ছে। এখান থেকে নিজের প্রতি একটা বিরক্তি তৈরি হয়। সিস্টেমের উপর ঘেন্না জন্মায়। গতানুগতিকতায় এভাবেই প্রজন্মের পর প্রজন্ম চলে আসছে।
আরো পড়ুন – যখন তখন মাল্টি ভিটামিনের ওষুধ খান? জিনকোভিট মাল্টি ভিটামিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে কিনা জানেন?
তবে এই প্রতিবেদনের শেষে আপনাকে একটা কথা বলি, যা কিছু নক্কারজনক, ধিক্কারজনক সেগুলো বেশিদিন স্থায়ী হতে পারে না। পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই। তাই স্বল্পমেয়াদী সুখের কথা না ভেবে দীর্ঘমেয়াদী শান্তির লক্ষ্যে নিজের কাজটা সৎ ভাবে করে যান। রাতে নিশ্চিন্তভাবে পরিবারকে নিয়ে ঘুমোতে পারবেন। দুশ্চিন্তার কালো মেঘ আপনাকে ঘুমের ওষুধ খেয়ে চিরনিদ্রায় যেতে বাধ্য করবে না।