Breaking Bharat: আপনি কি যখন তখন ভয় পান? গায়ের লোম খাড়া হয়ে যায় কি? ভয় পেলে দেহের মধ্যে অস্বাভাবিক ঘটনা কেন ঘটে (What Are You Afraid Of)?
মানুষের জীবনের নানা ধরণের ঘটনা ঘটতে থাকে। একাধিক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয় আপনাকে আমাকে। কিছু ঘটনা ভাল লাগায় আবার কিছু দেখে শিহরিত হয়ে যাই আমরা। সেরকমই এক ঘটনা হল গায়ের লোম খাড়া হয়ে যাওয়া। চলতি ভাষায় একে goosebumps বলা হয়। কিউটিস আনসেরিনা বলি থাকেন মেডিকেল সাইন্স এর লোকেরা। কিন্তু কেন এমন হয় সেটা জানা আছে?
মানুষ কেন ভয় পায়?
হাসি কান্না রাগ কষ্ট দুঃখ এই সবের মতো ‘ভয়’ পাওয়া একটা অনুভূতি মাত্র। আসলে ভয় থেকে তৈরি হয় অজানা আশঙ্কা যেটা ক্ষতির সম্ভাবনাকে তীব্র করে তোলে। আর এখান থেকেই যত সমস্যার সূত্রপাত। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় এই সময় মানুষের পঞ্চ ইন্দ্রিয় সজাগ হয়ে যায়।
ফলে শরীরের প্রতিটি অংশে অতিরিক্ত রক্ত সঞ্চালন করতে থাকে। এর জেরে হার্টবিট বেড়ে যায়। কিন্তু এতে যে পরিমাণ শক্তি ক্ষয় হয় তাতে কিছু সময়ের মধ্যে শারীরিক শক্তি সঞ্চালনের ক্ষমতা হ্রাস পায়। তখন দেহের এনার্জি সিস্টেম শক্তি সঞ্চয়ের কৌশল হিসেবে আপাতত অপ্রয়োজনীয় অংশে শক্তি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এবং পঞ্চ ইন্দ্রিয় আর মস্তিষ্ককে অ্যাকটিভ রাখে।
দেখবেন এই সময় বাথরুমে যাওয়ার প্রবণতাও বাড়ে। এই যে অপ্রয়োজনীয় পেশীগুলোর কথা বলা হলো অর্থাৎ যেখানে শক্তি সঞ্চার স্থগিত রাখা হয়, তার মধ্যে মলদ্বারে মল আটকে রাখার পেশীটিও একটি। ভয় পাওয়ার মুহূর্তে সেই পেশী বিপদ মোকাবেলায় মন দেয়। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই মল মূত্র আটকে রাখতে সচেষ্ট না হতে পারার জন্য অজান্তেই তাদের বাইরে নির্গত হয়।
ভয়ের চোটে অনেক মানুষের ঠোঁট শুকিয়ে যায়?
দুর্বল পায়ের পেশী থাকার কারণে অনেকের হাঁটু কাঁপার ঘটনাও দেখা যায়। এবার আসি লোমকূপ খাড়া হয়ে যাওয়ার ঘটনায়। প্রতিটি লোমকূপের গোড়ায় অ্যারেকটর পাইলি নামে একটি ছোট্ট মাংসপেশি জুড়ে আছে। অন্যান্য প্রাণীদের ক্ষেত্রে এটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও মানুষদের অ্যারেকটর নিজেদের ইচ্ছাধীন নয়। তবে ঠাণ্ডা লাগলে বা ধরুন ফাইট অর ফ্লাইট রেসপন্স চালু হলে এটি কুঁচকে যায়।
আরো পড়ুন – ডিভোর্স মানে কি জীবন শেষ? কেন বারবার আঙ্গুল ওঠে মেয়েদের দিকে?
এই গোটা বিষয়টা নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব থাকে সিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেমের উপরে। এই প্রতিবেদনে বিজ্ঞানসম্মত বিভিন্ন যুক্তিগুলো তুলে ধরলাম আপনাদের সামনে। খুব সাধারন কিছু ঘটনা অথচ ঘটনাচক্রে সেগুলো নিয়ে আমরা চর্চা করি না। ভয় পেলে দেহের মধ্যে একাধিক কাণ্ডকারখানা ঘটে।
আপনি কি জানেন ভয়ের চোটে অনেক মানুষের ঠোঁট শুকিয়ে যায়? আসলে উত্তেজনার বসে এই সময়টায় মানুষ মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে থাকে ফলে ক্রমাগত লালা শুকিয়ে গিয়ে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়।
আরো পড়ুন – সম্পর্কের রং কি লাল? মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানে বিয়ের কনেকে লাল বেনারসি দেওয়া হয় কেন?
তবে কোনো আচমকা ঘটনায় ভয় পাওয়াটা স্বাভাবিক প্রতিবর্ত ক্রিয়ার মধ্যে পড়ে। কিন্তু সেই ঘটনাকে মনে করে বারবার একটা ট্রমার পর্যায়ে চলে গিয়ে ভয় পেতে শুরু করলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া দরকার। মনে রাখতে নেই পৃথিবীতে কোন কিছুই অকারণে ঘটে না অর্থাৎ সবকিছুর কার্য কারণ জানতে পারলে অনেক সমস্যার সমাধানে সুবিধা হয়।
আরো পড়ুন – প্রথম প্রেমের প্রথম নেশা কি আজও আপনাকে আসক্ত করে রেখেছে?
ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে পার্থক্য
ভয় পাওয়া
অন্ধকারে ভয়
কিছু মানুষ দেখলে আমার ভয় লাগে খুব
রোগ নিয়ে ভয়
ভয় দূর করার খাবার
মনের ভয় কিভাবে দূর করা যায়
ভয় পেয়ে জ্বর আসলে করনীয়
তাই মনে রাখতে হবে, ভয় পাওয়া কিন্তু একটা মানসিক অবস্থা মাত্র তাকে কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেবেন না। উৎকণ্ঠা থেকে বা কোন কিছু হারানোর আশঙ্কা থেকে অথবা নিরাপত্তাহীনতা থেকে এই ধরনের অনুভূতি বা অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে পারে আপনার মস্তিষ্ক। সেক্ষেত্রে স্বচ্ছ ভাবে গোটা বিষয়টাকে অনুধাবন করার চেষ্টা করুন আর বিজ্ঞানসম্মত উপায় সমস্যার সমাধানের রাস্তা বের করাটাই শ্রেয়।