Breaking Bharat: আপনি কি ‘ফিলোফোবিয়া’ রোগে আক্রান্ত? প্রেম করতে ভয় পাচ্ছেন? জেনে নিন আপনার চিকিৎসার প্রয়োজন কিনা!
এই পৃথিবীতে নানা রকমের জটিল রোগ ক্রমাগত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এমন এমন রোগের কথা প্রকাশ্যে আসছে যার সম্পর্কে হয়তো আজ থেকে বছর ২০ বা ৩০ আগে সাধারণ মানুষের কোন ধারণাই ছিল না। খুব সহজ স্বাভাবিক সাধারণ ঘটনাগুলো এখন অস্বাভাবিক বলে মনে হচ্ছে। যেমন ধরুন আজকের আলোচ্য বিষয়ের কথাই যদি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা যায়।
ফিলোফোবিয়া হলে কিভাবে বুঝবো?
প্রেমে পড়তে সকলেই চান একথা এই সমাজ বিশ্বাস করে। কিন্তু কিছু মানুষ প্রেম থেকে দূরে দূরে থাকেন। বন্ধু-বান্ধবরা মজা করে হয়তো বলেন প্রত্যাখ্যানের ফলেই এমন সিদ্ধান্ত তাই না? কিন্তু বিজ্ঞানের পরিভাষায় এই প্রেমকে ভয় পাওয়ার একটা নাম আছে আর সেটা হল ‘ফিলোফোবিয়া‘।
ফোবিয়া শব্দটার সঙ্গে ভয় জড়িয়ে রয়েছে তাই না? রোগটাকে যদি দুটো শব্দে ভাঙ্গা যায় তাহলে বলতে হয় গ্রীক শব্দ ফিলোস অর্থাৎ, প্রেম বা ভালোবাসা এবং ফোবস অর্থাৎ ভয় সে তো আগেই বলেছি, আর এই দুই থেকেই ‘ফিলোফোবিয়া‘ শব্দটির উৎপত্তি। ভাবতে একটু অবাক লাগছে তো প্রেম করতে আর কে বা ভয় পায়? কিন্তু এটা একটা সিরিয়াস কন্ডিশন বলছেন মনোবিজ্ঞানীরা।
প্রেমের সিলেবাস পড়তেই না চান তাহলে?
আসলে দুজন মানুষের একে অন্যের প্রতি আকৃষ্ট হওয়া, মানসিকভাবে একসঙ্গে ভাবনা-চিন্তা করা, শারীরিকভাবে মিলিত হওয়া এই সব কিছুই প্রেম ভালবাসার এক একটা অধ্যায় বলতে পারেন। কিন্তু কোন মানুষ যদি প্রেমের সিলেবাস পড়তেই না চান তাহলে আপনি কী বুঝবেন? হয়তো চলতি কথাই বলবেন তিনি হোমোসেক্সুয়াল তাইতো?
কিন্তু সে ক্ষেত্রেও তো প্রেমের প্রয়োজন হয়। আসলে সম লিঙ্গ বা বিপরীত লিঙ্গ সেটা বড় কথা নয় বিষয়টা হল প্রেম ‘ভালবাসা‘ শব্দটার প্রতি একটা ভয়ে জন্ম নেয়ার ফলে সেখান থেকে দূরে দূরে থাকতে ইচ্ছে করে। কিন্তু সেটা তো এমনি এমনি হতে পারে না। তার লক্ষণ রয়েছে এবং কারণ অবশ্যই আছে।
আরো পড়ুন – আপনার পরিবারের সদস্য কি গার্হস্থ্য নির্যাতনের শিকার? বাড়ির মহিলাদের উপর শারীরিক নিগ্রহ?
রোগটা যে মানসিক সেটা এতক্ষণে আপনিও বুঝতে পেরে গেছেন। চিকিৎসকের বলছেন ফিলোফোবিয়াতে প্রেম সম্পর্কে অবাস্তব একটা ভয় তৈরি হয়। কখনো কখনো বিরক্তি বা প্রতিশোধ স্পৃহা মারাত্মক হতে পারে। সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি কিন্তু ভয়ঙ্কর দিকে গড়াতে পারে যা হয়তো আপনি প্রাথমিকভাবে কল্পনাও করতে পারবেন না।
আরো পড়ুন – বাঁচতে গেলে টাকা লাগে, কিন্তু টাকা দিয়ে কি জীবনে সবকিছু অর্জন করা সম্ভব?
মানসিক ভারসাম্যের নেতিবাচক প্রভাব খুব স্বাভাবিকভাবেই শারীরিক অসুস্থতার কারণ হয়ে উঠবে। আসলেই এটা একটা কল্পিত জগত নিজের ভাবনাতে ভয়ের আবহাওয়া সৃষ্টি করা। হতেই পারে এর জন্য হয়তো পুরনো কোন অভিজ্ঞতা দায়ী যেটা মনের মধ্যে এতটাই দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব বিস্তার করেছে, যে সেভাবে আর নতুন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না।
আরো পড়ুন – বিয়ে করতে চাইছেন? স্ত্রী হিসেবেই কাশ্মীরি মহিলাই কি আপনার প্রথম পছন্দ?
এই জাতীয় সমস্যায় যারা ভুগছেন তারা সাধারণত প্রেমের গল্প, সিনেমা, গান এসব একেবারেই পছন্দ করেন না এবং সামাজিকভাবে নিজেকে একটু বিচ্ছিন্ন রাখতে চান। চিকিৎসার পরিভাষায় মনে করা হয় হয়তো পূর্বের কোন তিক্ত অভিজ্ঞতা বা কারোর থেকে গুরুতর আঘাত পাওয়ার ফলেই এমন মানসিকতা তৈরি হয়েছে।
আরো পড়ুন – রাস্তা থেকে কখনো টাকা কুড়িয়ে পেয়েছেন?এই অবস্থায় কী করা উচিত আপনার?
এটা যদি বাড়তে থাকে তাহলে কিন্তু আত্মহননের মতো চরম সিদ্ধান্ত নিতে পারেন আক্রান্ত ব্যক্তি। থেরাপি, কাউন্সিলিং, ওষুধের মাধ্যমে মনোবিজ্ঞানীরা এই রোগের চিকিৎসা করে থাকেন। কিন্তু বুঝতে হবে কোন ঘটনা কখনোই জীবনকে স্তব্ধ করে দিতে পারে না বা জীবনকে নেতিবাচক করে দিতে পারে না। ভেতর থেকে ভালো চিন্তা, শুভ চিন্তা করতে শুরু করলেই সব কালো, অন্ধকার দূরে চলে যায়।
প্রেম তো একটা শব্দ মাত্র যদি মানুষের থেকে আঘাত পেয়ে থাকেন তাহলে শিশু কিংবা বই কিংবা গান বা, ধরুন প্রকৃতি – ভালোবেসে দেখুন না, এরা আপনাকে আঘাত দেবে না।