Breaking Bharat: কখনও সুড়ঙ্গ পথে হেঁটেছেন (Tunnel way)? লালবাগ কেল্লার রহস্যে ঘেরা সুড়ঙ্গে কী আছে? তবে এই রহস্যময় সুড়ঙ্গে কোনো মানুষ প্রবেশ করলে আর ফেরত আসেনা। কেন?
কেউ বলেন সুড়ঙ্গের ভেতর এতই অন্ধকার যে আলোতেও সামনে কিছুই দেখা যায় না। কিন্তু আসল রহস্য কী? সত্যি উদঘাটনে সচেষ্ট হন একদল গবেষক। বিদেশি গবেষকদের টিম রহস্য উদঘাটনের জন্য সুড়ঙ্গের মধ্যে দুটি কুকুর পাঠান। কিন্তু কুকুর দুটি আর ফিরে আসেনি।
এই পৃথিবীর অনেক কিছুই আমাদের অচেনা অজানা। এমন অনেক কিছু আছে যা এখনো আবিষ্কার হয়নি। সেটা না হয় ভবিষ্যতের কথা। কিন্তু আমাদের ইতিহাসের সবটা জানা সম্ভব হয়েছে কি?
প্রত্নতাত্ত্বিক দিক থেকে বিচার করলে এমন অনেক রহস্য আছে যার সমাধান আজও করা সম্ভব নয় নি। আজ তেমনই এক ইতিহাসের রহস্যভেদের চেষ্টা করব আমরা। আজকে আমরা চলে যাব লালবাগের কেল্লায় যেখানে আছে রহস্যময় সুরঙ্গ পথ (Mysterious tunnels) ।একবার সেই পথে গেলে আর ফেরার উপায় নাই ।
কথায় আছি যা রটে কিছুটা বটে। আর এই কেল্লা কে ঘিরে নানা রকমের গল্প কাহিনী জনমানসে প্রচারিত।লালবাগ কেল্লার সব থেকে রহস্যময় স্থান হচ্ছে লালবাগের বন্ধ সুড়ঙ্গ (Lalbagh closed tunnel)। যা সবার জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
লালবাগ কেল্লার (Lalbagh Fort) নিচে রয়েছে অসংখ্য সুড়ঙ্গ যা জমিদার আমলে তৈরি করা হয়েছিল। সুড়ঙ্গগুলোর মধ্যে একটি সুড়ঙ্গ আছে যার ভেতরে কেউ ঢুকলে তাকে আর ফিরে পাওয়া যায় না | প্রত্নতাত্ত্বিকরা এই কেল্লা নিয়ে পড়াশোনা করে চলেছেন বহু বছর ধরে।
স্থাপত্যবিদদের মতে, এ পথটি প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে টঙ্গী নদীর সঙ্গে যুক্ত। আবার কেউ মনে করে, এটি একটি জলাধারের মুখ। এর ভেতরে একটি বড় চৌবাচ্চা রয়েছে। নানা মানুষ কেল্লা নিয়ে নানা মত প্রকাশ করেন।
জানা যায়, মুঘলদের পতনের পর লালবাগ দুর্গ যখন সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায়, তখন ঢাকাবাসীর সব আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় এই সুড়ঙ্গ। কেল্লার দক্ষিণে আগে বেশ কয়েকটি সুড়ঙ্গ থাকলেও মূল সুড়ঙ্গটি লোহার গেট দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া আছে।
পর্যটকরা বেড়াতে গেলে এই সুড়ঙ্গের গল্প অনেকেই শুনেন। বলা হয়, এখান দিয়ে নাকি সুরঙ্গ পথে দিল্লি পর্যন্ত যাওয়া যেত! কিন্তু বাস্তব ছিল ভিন্ন। এটি যুদ্ধকালীন বা বিপদ মুহূর্তে সুবেদারদের নির্বিঘ্নে পালিয়ে যাবার পথ হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল।
সাধারণত নদীর ধারের দুর্গের নকশায় সুড়ঙ্গটি তৈরির কৌশল ছিল যেন তাড়াতাড়ি দুর্গ থেকে নৌপথে যাওয়া যায়। তাই নির্দ্বিধায় বলা যায় লালবাগ দুর্গের এই সুড়ঙ্গ বুড়িগঙ্গা ব্যতীত অন্য কোথাও শেষ হবার নয়। এ তো গেল যুক্তির কথা। তবে এই রহস্যময় সুড়ঙ্গে কোনো মানুষ প্রবেশ করলে আর ফেরত আসেনা। কেন?
কেউ বলেন সুড়ঙ্গের ভেতর এতই অন্ধকার যে আলোতেও সামনে কিছুই দেখা যায় না। কিন্তু আসল রহস্য কী? সত্যি উদঘাটনে সচেষ্ট হন একদল গবেষক। বিদেশি গবেষকদের টিম রহস্য উদঘাটনের জন্য সুড়ঙ্গের মধ্যে দুটি কুকুর পাঠান। কিন্তু কুকুর দুটি আর ফিরে আসেনি।
আরো পড়ুন- What is knowledge? জ্ঞান কাকে বলে? তবে কি ডিগ্রি অর্জন করতে পারলেই হবে?
পরবর্তীতে শিকল বেঁধে আবার দুটি কুকুরকে পাঠানো হয়েছিল। তখন শিকল আসলেও কুকুরগুলো ফেরত আসেনি। কেন ,তা অজানা। আগেই বলেছি নানা জনশ্রুতির কথা। অনেকের মতে এর মধ্যে এমন এক প্রকার গ্যাস রয়েছে যার প্রভাবে যে কোনো প্রাণী দেহের হাড়, মাংস গলে যায়।
আবার কারো কারো ধারণা এর মধ্যে এমন এক প্রকার শক্তি রয়েছে যার ভেতর প্রবেশ করে কোনো প্রাণীর পক্ষেই আর ফিরে আসা সম্ভব নয়। তবে যেহেতু সুড়ঙ্গে যারা গেছেন তারা ফিরে আসে নি তাই সত্যি বলা মুশকিল। এই সুড়ঙ্গ দিয়ে পাশেই বুড়িগঙ্গা নদীতে যাওয়া যেত।
আরো পড়ুন- ভুঁড়ি বাড়ছে? কী করবেন? মেনে চলুন পেটের ভুঁড়ি নিজে থেকে নিয়ন্ত্রনে আসবে
সুড়ঙ্গমুখ থেকে বেরিয়েই নৌকায় উঠে যাওয়া যেত জিঞ্জিরা প্রাসাদে। আবার নদীর হাওয়া খেতে ওই সময়ের সেনাপতিরা এই সুড়ঙ্গ ব্যবহার করতেন। তবে এসব কথাকে শুধুই কল্পকাহিনী বলে দাবি করেছে লালবাগ কেল্লার কাস্টোডিয়ান কার্যালয়। কারণ এসব কথার কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
আরো পড়ুন- Hard Times : জীবনে কঠিন সময় এলে তা কাটিয়ে ওঠা বড়ই কঠিন! তাহলে খারাপ সময় আসলে কি করবেন?
তবে যুদ্ধের সময় মুঘল সেনারা যখন বুঝতেন তাদের পরাজয় কাছাকাছি, তখন তারা এই সুড়ঙ্গ দিয়ে দুর্গের দেওয়াল পেরিয়ে পালিয়ে যেতেন। কিন্তু রহস্য উন্মোচিত আজও সম্ভব হয় নি।