Breaking Bharat: ৫৬ বছরে কেন সন্তান ধারণ করতে হল প্রৌঢ়াকে? আমেরিকার বুকে বিরল ঘটনা! জানুন বিস্তারিত
এই পৃথিবীতে সুস্থ স্বাভাবিক নিয়মে নারী পুরুষের বিয়ের পর সন্তান আসে। কিন্তু অনেক সময় নানা জটিলতার কারণে সুস্থভাবে সন্তান প্রসব করা সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে একাধিক বিজ্ঞানসম্মত উপায় খুঁজতে হয় দম্পতিকে। কিন্তু এক বিরল ঘটনার সাক্ষী হল আমেরিকা। বৌমা গর্ভে সন্তান ধারণে অক্ষম, তাই নিজের ছেলের সন্তান নিজের গর্ভে ধারণ করলেন মা। ব্যাপারটা একটু অদ্ভুত মনে হলেও এটাই সত্যি।
৫৬ বছর বয়সি প্রৌঢ়া ‘ন্যান্সি হক‘ আমাদের আজকের প্রতিবেদনের মূল চরিত্র। কারণ তিনি তার ছেলে জেফ হক ও বৌমা ক্যামব্রিয়ার সন্তানের মা বা বলা যেতে পারে ‘সারোগেট মা‘। পৃথিবীর বুকে এই ঘটনা কার্যত বিরহে কারণ এর আগে এইরকম কোন ঘটনার সাক্ষী হয়নি গোটা বিশ্ব। কিন্তু কেন তাকে এরকম পদক্ষেপ করতে হলো সেই নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। ঠিক কী ঘটনা ঘটেছিল চলুন জেনে নেওয়া যাক।
মা ন্যান্সি জানিয়েছেন – ছেলে জেফ হক বিয়ের আগেই স্থির করে নিয়েছিলেন তিনি কমপক্ষে চার থেকে ছ’টি সন্তানের বাবা হতে চান। কিন্তু সব সময় আমরা যেটা চাই সেটা বাস্তবে সম্ভব হয় না। বিয়ের পর ন্যান্সির পুত্রবধূ ক্যামব্রিয়ার ‘বন্ধ্যাত্বজনিত সমস্যা‘ প্রকাশ্যে আসে। প্রথমে ক্যামব্রিয়া ‘আইভিএফ পদ্ধতি‘তে যমজ কন্যা সন্তানের জন্ম দেন।
তিন বছর পরে ফের ‘যমজ পুত্রসন্তান গর্ভে ধারণ করেন ক্যামব্রিয়া‘। কিন্তু এবার সমস্যা তৈরি হয়। সুস্থ সন্তান জন্ম দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই পেটে প্রবল যন্ত্রণা ও রক্তপাত শুরু হয়। তড়িঘড়ি তার পরীক্ষা করার পর চিকিৎসকরা জানতে পারেন যে তিনি ‘হিস্টেরেক্টমি‘ নামক রোগে আক্রান্ত । এই অবস্থায় পরবর্তী সন্তান ধারন কার্যত মৃত্যুর সমান। শাশুড়ি যে আসলে মা।
তাই মায়ের কষ্ট বুঝেছিলেন তিনি। এবার সব দিক চিন্তা করে ছেলে আর বৌমা কে ভালবেসে এবার পরিবার বাড়ানোর দায়িত্বভার হাসিমুখে নিজে কাঁধে তুলে নেন ন্যান্সি। নিঃসন্দেহে যা নজির সৃষ্টিকারী ঘটনা। শারীরিক সমস্যার কারণে স্ত্রী ক্যামব্রিয়া তার গর্ভে সন্তান লালন করতে সক্ষম নন, এটা জানার পর কিছুটা ভেঙ্গে পড়েন ছেলে।
আরো পড়ুন – ভারতীয় রেল আপনাকে দিচ্ছে একগুচ্ছ সুযোগ সুবিধা, জানেন কি?
আশেপাশে তিনি জানান যে মায়ের জন্য তিনি গর্বিত এবং নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করছেন। ছেলে নিজের মাকে কন্যা সন্তানের জন্ম দিতে দেখেছেন যে সন্তান আসলে তার। এটা যে পরম সৌভাগ্যের তা তিনি নিজেই বলছেন। সারোগেসি করতে অনেকে আগ্রহী হতে চান না।
আরো পড়ুন – আপনি কি যখন তখন ভয় পান? গায়ের লোম খাড়া হয়ে যায় কি?
আবার দেখা গেছে অনেক টাকা দিয়ে এই মাদার জোগাড় করতে হয়। কিন্তু সেক্ষেত্রে সঠিক যত্ন হবে কিনা তা নিয়ে চিন্তায় থাকেন মা-বাবা। এখানে নিজের মা সেই দায়িত্ব তুলে নিয়েছে খুশি ছেলে এবং ছেলের বউ দুজনেই। কী ভাবে কৃতজ্ঞতা জানাবেন সেটা বুঝে উঠতে পারছেন না।
আরো পড়ুন – সম্পর্কের রং কি লাল? মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানে বিয়ের কনেকে লাল বেনারসি দেওয়া হয় কেন?
অন্যদিকে নিজের গর্ভে ছেলে বৌমার সন্তানধারণ করি খুশি ন্যান্সি। এই বয়সে দাড়িয়ে কাজটা সহজ ছিল না। তবুও তিনি ঝুঁকি নিয়েছিলেন শুধু ছেলে বৌমার মুখে হাসি ফোটাতে। চিকিৎসকরা বলছেন এই ঘটনা বিরল বটে। কিন্তু ‘মা‘ শব্দটার গভীরতা কতটা তা যেন প্রমাণ করলেন ন্যান্সি।
এই ঘটনা যেন প্রমাণ করে চাইলে মানুষ সবকিছু করতে পারে, শুধু সম্পর্কের ভিত মজবুত হওয়া দরকার। ভালোবাসায় সব অসম্ভবকে জয় করা যায়।