Breaking Bharat: সন্তান সবার প্রিয়, কিন্তু যদি হিজড়া সন্তান হয় তাহলে? বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের কথা বলা হচ্ছে না আমরা বলছি হিজড়াদের কথা। তাদের জন্মও তো হয় মাতৃগর্ভে। সেই বাবা মা কী করেন?
কিছু জিনিস বোঝা দরকার, কিছু জিনিস বোঝানোর দরকার। কিন্তু প্রথম টা না হলে দ্বিতীয়টা বুঝবেন কীকরে? গোল গোল কথা নয় একদম খাঁটি কথা বলি। সমাজের নিয়মের বাইরে বেরিয়ে সমস্যার মোকাবেলা করা সহজ কথা নয়। আর বিশেষ করে সন্তান-সন্ততি নিয়ে কোন সমস্যা হলে তখন মনে হয় গোটা পৃথিবী একদিকে সরে যায়। সমস্যা প্রতি মানুষের জীবনেই আছে।
আজ আমরা বলবো হিজড়াদের কথা:
কিন্তু আজকে যে সমস্যার কথা বলছি সেটা বোধহয় কেউ কখনোই নিজের জীবনে অংশীদারিত্বেও রাখতে চাইবেন না। আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে – মা বাবার কামনা এটাই। কিন্তু সন্তান যদি স্বাভাবিক না হয় তাহলে? বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের কথা বলা হচ্ছে না আমরা বলছি হিজড়াদের কথা (Today we will talk about transgenders)। তাদের জন্মও তো হয় মাতৃগর্ভে। সেই বাবা মা কী করেন?
বাবা মায়ের বড় প্রিয় হলো সন্তান। এখনো পর্যন্ত ভারতবর্ষের মতো দেশে কন্যা সন্তান নিয়ে একটা প্রশ্ন চিহ্ন থেকে যায়। পুত্র সন্তানকেই বংশের প্রদীপ হিসেবে ধরা হয়। যেন ছেলে হলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, স্বর্গ লাভ হবে। কিন্তু ছেলে বা মেয়ে এই বিভাজনটা আগের থেকে অনেকটা কমেছে।
হিজড়া সম্প্রদায় নিয়ে মানুষের ধারণা:
তবে হিজড়া সম্প্রদায় (transgenders) কে নিয়ে ধারণা এতোটুকু বদল হয়নি। অথচ তারাও মাতৃ গর্ভ থেকেই জন্ম নেন অর্থাৎ নারীর গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হন হিজড়া। তাহলে ভাবুন সেই মা-বাবা বা সেই পরিবারের কী রকম অবস্থা হয় যখন তাদের পরবর্তী প্রজন্ম এই সম্প্রদায়ের গোত্রভুক্ত করে জন্ম নেয়।
আপনার অনেকেই হয়তো জানেন বর্তমানে সরকার এদের উন্নতির জন্য নানা রকমের চেষ্টা করছে। শাস্ত্র এনাদের নিয়ে নানা তথ্য দেওয়া আছে। কিন্তু সবটাই অন্যের হলে প্রযোজ্য নিজের ক্ষেত্রে কখনোই কাঙ্খিত নয়।
মানে বাজি রেখে বলা যেতে পারে আপনি প্রতিটি দম্পতিকে জিজ্ঞেস করুন তারা কেউ এরকম পরিস্থিতির জন্য তৈরি আছে কিনা, যে তাদের আগামী প্রজন্মের কেউ বা সেই বংশের কেউ হিজড়া হয়ে জন্ম নিচ্ছে।
সমাজ বলুন কি চিরাচরিত ধারণা এখনো পর্যন্ত এই মানুষগুলোকে সেই সম্মান দেওয়াই হয় না। তবে আমরা ভারতের দিকে শুধু তাকিয়ে থাকলে হবে না যদি একটু দূরে থাইল্যান্ডের দিকে যান সেখানে কিন্তু খুব সহজেই পরিস্থিতি মোকাবেলার উপায় আছে।
সেখানে যেকোনো ধরনের মানুষের নিজেকে বদল করতে শুধু লাগে পকেটের জোর। এদের লেডি বয় আখ্যা দেয়া হয় ব্যাংককে। আপনি কি জানেন বিদেশে হিজড়াদের অনেকের গার্লফ্রেন্ড হিসেবে দেখা হয়। কবে আসে পুরুষ থেকে নারী এবং নারী থেকে পুরুষের রূপান্তরিত হওয়া যায় সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে।
আরো পড়ুন – আপনার শিশু কন্যার নাক-কান ফোটানো নিয়ে চিন্তিত? জানেন কেন এক নাকেই নাকছাবি পরা হয়?
তবে একটা কথা সবার আগে বলার দরকার তাহলে মা বাবা যখন দেখেন তার সন্তান হিজড়া তখন তিনি মহা সমস্যায় বা ভাবনায় করেন সেটা কিন্তু শুধুমাত্র সমাজের জন্য। আসলে আমাদের একটা প্রচলিত বিশ্বাস আছে আমরা কিছু করলে সমাজ কী বলবে, এর উপর যেন সবটা নির্ভর করে আছে।
আমাদের রাজ্যের দিকে যদি চোখ মেলে তাকান তাহলে দেখবেন রাস্তায় ঘাটে ট্রেনে বসে হিজড়াদের মানুষের কাছ থেকে টাকা চাইতে দেখা যায়। এতে অনেক মানুষ বিরক্ত হন। কারণ তারা যে ধরনের আচরণ করেন সেটা কখনোই ভদ্র সমাজে কাঙ্খিত নয়।
আরো পড়ুন – চোখে চোখে যায় চেনা! কিন্তু এক সেকেন্ডে কতজন কে চিনতে পারে আপনার চোখ?
কিন্তু আরও একটা ব্যাপার মনে করার মত সেটা হল ভবিষ্যৎ নেই বর্তমানের রুজি নেই, অন্য সংস্থানের জায়গা নেই, পরনের পোশাক নেই ,এই সব কিছুর জন্য যা দরকার সেই টাকা উপার্জনের কোনো সুযোগ নেই । এই অবস্থায় একজন মানুষ কী করতে পারেন? আসুন সবার আগে মানসিকতার পরিবর্তন দরকার।
মেয়ে না ছেলে এটা কোন পরিচয় হতে পারে না। বা ধরুন হিজড়া , তিনিও কিন্তু মানুষ তারও হৃদস্পন্দন আছে খারাপ লাগা অনুভূতি তার উপায়। আগেকার দিনে বাড়িতে নতুন বাচ্চা এলে তাকে আশীর্বাদ করতে এই ‘হিজড়া‘ আসতেন। কিন্তু আজকাল মানুষ প্রযুক্তি নির্ভর, ডিজিটাল যুগ, বিজ্ঞান বিলাসী।
আরো পড়ুন – বাড়ির ঘড়ি বন্ধ? হাত ঘড়িতেও ১০ টা ১০? ঠিক কী হল বলুন তো?
খালি পুরনো ধারনা গুলো আস্তে আস্তে কুসংস্কার তকমা নিয়ে অনেকটা দূরে সরে যাচ্ছে। যদিও আমরা কুসংস্কার কে সমর্থন করি না। কিন্তু এইটুকু বলতে পারি সমাজে আপনি কী করে বাঁচবেন সেটা একমাত্র আপনিই ঠিক করতে পারেন। অতি সহজেই আজ রূপান্তর বিষয়টার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া সম্ভব।
আরো পড়ুন – পাপের শাস্তি শুধু সময়ের অপেক্ষা! পাপ করলে রেহাই নেই কিছুতেই! শাস্তি তোলা আছে অন্য কোথাও?
তাই সমাজ এবং আমাদের প্রত্যেকের মানসিকতার বদল দরকার কারণ মানুষের সবথেকে বড় পরিচয় কখনোই তার লিঙ্গ হতে পারে না। কে বলতে পারে যাকে অসম্মান করছেন আজ হিজড়া বলে তিনি তার প্রতিভার গুনে নিজের চেষ্টায় হয়তো সমাজের এমন কাজ করে দেখালেন যা সাধারণ মানুষ কোনদিন স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি। এই অবহেলা নয় সমাজে মানুষ মানুষকে সম্মান করুক এটাই কাম্য।