Breaking Bharat: দেবাদিদেব মহেশ্বর সত্যিই কি কৈলাসে থাকেন (Shiva in Kailash) ? ঈশ্বর কি তাহলে ধরাভূমিতে থাকেন?ছোটবেলা থেকেই ঈশ্বর বা ভগবানের বসবাস বললেই আমরা আকাশের দিকে তাকাই। কারণ একটাই সর্বশক্তিমান আমাদের মাথার উপরে আছেন। তাঁর যেন একটা আলাদা বসতি আছে যেখানে মানুষের প্রবেশ নেই, হয়তো সেটাই স্বর্গ। আবার অন্যদিকে ভূ স্বর্গ মানেই কাশ্মীর। আবার মহাদেবের অবস্থান কৈলাসে। কৈলাস পর্বত বটে কিন্তু কি তার রহস্য?
হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী মানুষেরা কৈলাসে ভগবান ভোলানাথের বাস (Abode of Lord Bholanath in Kailasa) – এই কথাই বিশ্বাস করেন। যেহেতু ঈশ্বর থাকেন তাই মানুষের সেখানে যাওয়া নিষিদ্ধ। আর যেখানেই বাধা সেখানেই আগ্রহ সবথেকে বেশি। গোটা হিমালয় পর্বতমালার মধ্যেই কৈলাসের আকর্ষণ তাই সবচেয়ে বেশি। তিব্বত মালভূমি থেকে ২২,০০০ ফুট ওপরে অবস্থিত কৈলাস হিন্দু সম্প্রদায় ছাড়াও বৌদ্ধদের কাছেও অত্যন্ত পবিত্র ধর্মীয় স্থান।
রহস্যে ঘেরা দুর্গম এই পর্বত সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত অনেক কিছুই জানা যায় না। তার একটা কারণ সেখানে কেউ পৌঁছতেই পারে না। কৈলাস পর্বতকেই পৃথিবীর কেন্দ্র বলা হয়ে থাকে। আজ এই পর্বত ঘিরে রয়েছে নানা জনশ্রুতি। ঠিক পিরামিডের আকারের এই পাহাড়ে অনেক প্রাচীন গুম্ফা ও গুহা রয়েছে। যেখানে দেখা মিলতে পারে বৌদ্ধ ও হিন্দু সন্ন্যাসীদের (Buddhist and Hindu monks can be seen)।
এই সন্ন্যাসীরা লোকচক্ষুর আড়ালে বহু বছর ধরে তপস্যা করে চলেছেন। প্রতি বছর বহু মানুষ মানস সরোবরের যাত্রা করেন। তবে দুর্গম প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে অল্প সংখ্যক কয়েকজনই যাত্রা সম্পূর্ণ করতে পারেন। তবে কৈলাস পর্বতের শৃঙ্গে এখনও পর্যন্ত কেউ উঠতে পারেননি। একটি নির্দিষ্ট পয়েন্টের পর যাওয়া নিষিদ্ধ। কেন? কোন স্পষ্ট উত্তর নেই তার। কিছু অদ্ভুত ঘটনা আছে যুক্তি দিয়ে যার ব্যাখ্যা মেলেনা।
মানস সরবোর ছাড়াও কৈলাস পর্বতের নীচে রয়েছে আরও একটি অপরূপ সুন্দর হ্রদ রাক্ষস তাল। ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৪,৯৫০ ফুট ওপরে অবস্থিত মানস সরোবর বিশ্বের উচ্চতম মিষ্টি জলের হৃদ। আরও একটি আশ্চর্যের বিষয় যত জোরেই হাওয়া থাকুক, মানস সরোবরের জল সবসময়ই শান্ত কিন্তু রাক্ষসতালের জল সব সময় অশান্ত থাকে।
এবার কিছু আগ্রহী আর উৎসাহী মানুষের রহস্য ঘেরা কৈলাস নিয়ে অভিজ্ঞতার কথা আপনাকে বলা যাক।। কৈলাস পাহার আর তাঁর আশেপাশের পরিবেশের উপর গবেষণা করা বৈজ্ঞানিক নিকোলাই রোমনভ আর ওনার টিম তিব্বতের মন্দিরের ধর্মগুরুদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। উনি বলেন, কৈলাস পর্বতের চারিদিকে একটি অলৌকিক শক্তি বয়ে চলে।১৯৯৯ সালে রাশিয়ার নেত্র রোগ বিশেষজ্ঞ এর্নেস্ট মুলদাশিফ ঠিক করেন যে, কৈলাস পর্বতের রহস্য উন্মোচনের জন্য তিনি ওই এলাকায় যাবেন।
ওনার পর্বতআরোহী টিমে ভুবিজ্ঞান, ভৌতিক বিশেষজ্ঞ আর ঐতিহাসিকবিদেরা ছিলেন। তাঁরা অনেক তিব্বতি লামাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। পবিত্র কৈলাসের আশেপাশে অনেক মাস ধরে সময় কাটান। এরপর তিনি একটি বই লেখেন ‘where do we come from” সেখানে তিনি কৈলাস পর্বতের যাত্রা নিয়ে অনেক কথাই লেখেন।তিব্বতি গ্রন্থে লেখা আছে যে , কৈলাস পর্বতের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত শাম্বালা একটি আধ্মাতিক দেশ ।
বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোন দিয়ে এই বিষয়ে চর্চা করা আমার কঠিন। তবে কৈলাস পর্বতের (Mount Kailash) এলাকা সোজাসুজি পৃথিবীর জীবনের সাথে জড়িত বলে মত সেই বিজ্ঞানীর। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, তপস্যিদের রাজ্য তথা পিরামিড আর পাথরের দর্পণকে মিলিয়ে একটি যোজনাবদ্ধ নকশা বানালে দেখা যায় সেই নকশা ডিএনএ এর অণুর স্থানিক সংরচনার নকশা ছিল। সুতরাং মনুষ্য অস্তিত্ব নাকি ঈশ্বরের উপস্থিতি নাকি অলৌকিক? বিজ্ঞান এখনও কোনও ব্যাখ্যা দিতে পারিনি ।আজও রহস্যে ঘেরা কৈলাস, বিশ্বাসে দেবতার বাসভূমি।
হিন্দুমতে কৈলাস পর্বতে যেহেতু ভগবানের বাস (According to Hindus, Mount Kailash is the abode of God), তাই সেখানে যাওয়া নিষিদ্ধ। তিব্বতি লোককথা অনুযায়ী, মিলারেপা নামে এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী একবার কৈলাস পর্বতের শীর্ষের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে তিনি সবাইকে সাবধান করে দেন যে ঈশ্বরের বাসস্থানে না যাওয়াই ভালো। হিন্দুমতে যা কিনা খোদ ঈশ্বরের বাসভূমি (Abode of God)।
হিন্দুমতে কৈলাস পর্বতে যেহেতু ভগবানের বাস, তাই সেখানে যাওয়া নিষিদ্ধ। তিব্বতি লোককথা অনুযায়ী, মিলারেপা নামে এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী একবার কৈলাস পর্বতের শীর্ষের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে তিনি সবাইকে সাবধান করে দেন যে ঈশ্বরের বাসস্থানে না যাওয়াই ভালো।
আরো পড়ুন- Bridge Facts : আপনি কি জানেন মানব ইতিহাসের অর্থের সবচেয়ে বড় অপচয় কী ছিল?
অনেকে বলে থাকেন কৈলাস পর্বত থেকে ফেরার পরে হঠাত্ করে চুল ও নখ বেশ কিছুটা বড় হয়ে যায়। আবার কথিত আছে, একবার কয়েকজন সাইবেরিয়ান পর্বতারোহী কৈলাস পর্বতের নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশ করেছিলেন।
আরো পড়ুন- Barcode or QR : বারকোড কিভাবে বানানো হয় ? বারকোড বা কিউআর কোড স্ক্যান কীভাবে কাজ করে ?
সঙ্গে সঙ্গেই তাদের বয়স কয়েক দশক বেড়ে যায় এবং এর এক বছর পরেই বয়সজনিত কারণে মৃত্যু হয় তাঁদের তদন্ত করার পর এর্নেস্ট মুলদাশিফ এই সিদ্ধান্তে আসে যে, বাস্তবে কৈলাস পর্বতে একটি মানব নির্মিত পিরামিড আছে, আর এই পিরামিডের নির্মাণ প্রাচীন কালে করা হয়েছিল। উনি দাবি করেছিলেন যে, একটি বড় পিরামিডকে অনেক ছোট ছোট পিরামিড ঘিরে আছে আর সেখানে অলৌকিক ঘটনা ঘটে।
আরো পড়ুন- Abdominal pain : পেটে ব্যথা বা পেট গরম সমস্যা! শরীরকে ভালো রাখতে নিয়মিত পেটে তেল মালিশ করেন?
সেখান থেকে ফেরার পর এর্নেস্ট মুলদাশিফ লেখেন, ‘রাতের নিশ্তব্দতায় পাহাড়ের ভিতর থেকে একটি আজব ফিসফিস এর শব্দ আসে। এক রাতে আমি আর আমার দুই সহযোগী পাথর পড়ার আওয়াজ পেয়েছি। আর এই আওয়াজ কৈলাস পর্বতের (Mount Kailash) পেটের ভিতর থেকে আসছিল। আমারা ভেবেছিলাম যে, পিরামিডের ভিতরে অন্য কোন মানুষ আছে।”