Aiburobhat rituals: সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘আইবুড়ো ভাতের’ স্ট্যাটাস! কেন আইবুড়ো ভাত খাওয়ানো হয় ?আইবুড়ো ভাত খাওয়ানোর নিয়ম কি? ‘আইবুড়ো ভাত’ না খেলে কি বিয়ে করা যায় না? সবটাই জানাবো এই প্রতিবেদনে (Aiburobhat in Bengali)।
‘আইবুড়ো ভাত’ কেন বলা হয়?
বিয়ের ফুল ফুটলে যে বিয়ের বাজনা বাজবে এটা নিয়ে নতুন করে কারোর কিছু বলার নেই। কিন্তু শুধুই কি বিয়ের বাজনা তার সঙ্গে একগুচ্ছ রীতিনীতি মানতে মানতে জীবনটা যে বার হয়ে যায় বিয়ের ৩-৪ দিনেই। বলতে পারেন ওটা একটা আলাদা আনন্দ যেটা লাইফ টাইম অভিজ্ঞতার সাক্ষী করে রাখে আপনাকে।
বিয়ের দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কি কি হয় সেটা বোধহয় প্রতিটি বাঙালি বাড়ির ছেলে এবং মেয়েকে ১৮ বছর বয়স হয়ে যাওয়ার পর থেকেই বোঝানো হয়। বাঙালি বিয়েতে একটা অদ্ভুত রীতি আছে যেটা বিয়ের আগের দিন পালন করা হয়। এটাকে বলা হয় আইবুড়ো ভাত (the tradition of Aiburobhat in Bengali)।
মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের অন্যতম আইবুড়ো ভাত খাওয়ানো:
আপনি যদি মেয়ে হন তাহলেও আইবুড়ো আপনাকে বলা হবে বিয়ের আগের দিন পর্যন্ত। আমরা কোন লিঙ্গ ভেদে যাচ্ছি না কিন্তু অদ্ভুত এই বিষয়টা সম্পর্কে কতটা জানি আমরা? মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের অন্যতম অঙ্গ এই আইবুড়ো ভাত খাওয়ানো । কিন্তু কেন এমনটা করা হয় সে সম্পর্কে স্পষ্ট কোন ধারনা আছে কি (Aiburobhat Decoration)?
এখনকার দিনে কিছু হলেই সব থেকে বেশি ইম্পরট্যান্ট হয়ে দাঁড়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় আপডেট করা। সেই কারণে বিয়ের আগের যাবতীয় নিয়ম-কানুনকে হ্যাশট্যাগ প্রি ওয়েডিং বলে ফেসবুকে আপলোড না করতে পারলে বিয়েটাই যেন বৃথা হয়ে যায়।
আইবুড়ো ভাত অনুষ্ঠান সম্পর্কে:
এই প্রজন্ম এই কাজটা করে বেশ মজা পায় সেটা তো বলাই যায়। কিন্তু আইবুড়ো ভাত অনুষ্ঠানটি সম্পর্কে একটু জেনে নেওয়া যাক কারণ শুধুমাত্র বিয়ের আগের দিন নয় বিয়ে ঠিক হয়ে যাবার পর থেকে বিয়ের লগ্ন আসা পর্যন্ত এই আইবুড়ো ভাত পর্ব চলতে থাকে পাত্র এবং পাত্রীর।
আরো পড়ুন – তোমার জলের বোতল পরিষ্কার আছে তো? নয়তো জল খাবেন কিসে? দেখুন এই প্রতিবেদন
বিয়ের আগের দিন অবশ্য এই অনুষ্ঠানটি ছেলে এবং মেয়ের বাড়িতে আলাদা আলাদা ভাবে করা হয়।। মানে বিয়ের আগে অবিবাহিত অবস্থায় এটাই শেষ খাওয়া বলে ধরা হয়। যদিও মেয়েদের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য হতে পারে কারণ যেহেতু একটা মেয়ে বিয়ের পর বাপের বাড়ি ছেড়ে শ্বশুর বাড়ি চলে যায়। কিন্তু ছেলেদের ক্ষেত্রে এটা কি করে প্রযোজ্য হয় সেটা নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন থেকেই যায়।
আইবুড়ো ভাত কেন খাওয়ানো হয়?
বিয়ের আগের দিন দুপুরবেলায় পঞ্চ ব্যঞ্জন রান্না করে অবিবাহিত অবস্থায় মেয়েকে বা ছেলেকে খাওয়ানোর রীতিটাই হচ্ছে ‘আইবুড়ো ভাতের অনুষ্ঠান‘ (Aiburobhat menu)। এই সময় পাত্র পাত্রীর বন্ধু বান্ধবী আত্মীয়-স্বজন অনেকেই উপস্থিত থাকে।
আসলে যখন থেকে এই নিয়ম চলে আসছে সেই সময়ে মনে করা হয় যে বিয়ের পর ছেলেরা স্বাবলম্বী হয়ে আলাদা থাকত তাই পিতৃ গৃহে তাদের অবিবাহিত অবস্থায় এটাই হতো শেষ খাওয়া। আর মেয়েদের কনসেপ্ট তো এখনো একইভাবে চলে আসছে।
আরো পড়ুন – Menstrual cup: ঋতুস্রাবের সময় ‘মেনস্ট্রুয়াল কাপ’ মেয়েদের কেন পছন্দ ?
আগেকার সমাজে এটাও ধারণা করা হতো যে বিয়ের পর মেয়েটা অন্য বাড়িতে বা নতুন একটা বাড়িতে ঠিকমতো খেতে পারবে কি পারবে না। তাই অন্তত নিজের বাড়িতে যতটা সম্ভব ভালো খাইয়ে তাকে পরের বাড়িতে পাঠানো যাক।
একটু বলে দেয়া দরকার যে এই প্রসঙ্গগুলোর কোন ভিত্তি নেই তবে এটা ঠিক যে এই অনুষ্ঠানগুলো বিয়ের মত মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের সঙ্গে ওতপ্রত ভাবে জড়িয়ে গেছে। এখন যেন এইসব না হলে বিয়েটাই অসম্পূর্ণ বলে মনে করা হয়।
আরো পড়ুন – যিনি এক বা দুই সন্তানের মা-কে বিয়ে করতে চান? সুবিধা বা অসুবিধা কি আছে?
সবথেকে বড় কথা হল যদি কোন অনুষ্ঠানে কারুর ক্ষতি না করে অনেককে আনন্দ দেওয়া যায় তাহলে সে ক্ষেত্রে যুক্তি না খোঁজে উপভোগ করাই ভালো।