Breaking Bharat: ভয়াবহ শীত হোক, হোক গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা, লাগাতার শত্রুপক্ষের আক্রমণ থেকে আমাদের রক্ষা করাই ওদের কাজ। ছত্রিশগড়ের নকশালপন্থীদের মুখোমুখি হোক কিংবা সিয়াচেনের ঠাণ্ডা কিংবা থরের গরম, ভারতীয় সেনা (Indian Army) বরাবরই তাদের কর্তব্যের প্রতি অবিচল। ভারতের এই পাঁচটি জায়গা, যা সেনাবাহিনীর পোস্টিং-এর জন্য সবচেয়ে কঠিনতম মনে করা হয় (These places are quite dangerous for the Indian Army)।
শত্রুর আক্রমণ তো আছেই, মাঝেমধ্যে শত্রুর চেয়েও ভয়ঙ্কর আকার নেয় পরিস্থিতি! রোদ-ঝড়-ঠাণ্ডা, কখনও আবার খাবারের অভাব! সব উপেক্ষা করে দাঁতে দাঁত চেপে লড়ছে ভারতীয় সেনা
১. দ্রাস (Dras): ১০,৮০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত দ্রাস। এখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত যায়। সর্বনিম্ন মাইনাস ৪৫ পর্যন্ত। সিয়াচেনের তাপমাত্রা কম থাকলেও দ্রাসে বয়ে যাওয়া প্রবল বাতাস এই ঠাণ্ডাকে আরও প্রাণঘাতী করে তুলেছে। তাই এই স্থানটি আরওই যেন বিপজ্জনক।
লাদাখের দরজা নামে পরিচিত দ্রাসকে ভারতের শীতলতম আবাসিক এলাকা এবং বিশ্বের দ্বিতীয় শীতলতম এলাকা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানি অনুপ্রবেশকারীদের আক্রমণের পর কার্গিল যুদ্ধ শুরু হলে এই এলাকাটি নিয়ে বারবার নানা গুঞ্জন শোনা যায়। এই স্থানে যুদ্ধের সময় ৫০০ জনেরও বেশি ভারতীয় সেনা শহিদ হয়েছিলেন। এই এলাকাটি বিশ্বের সবচেয়ে স্পর্শকাতর সীমান্তের একটি। এখানে মোতায়েন সৈন্যদের প্রতিকূল আবহাওয়া মোকাবেলা করতে হয়।
Tulsi Gowda : খালিপায়ে হেঁটে পৌছেঁ গেলেন রাষ্ট্রপতির কাছে।হাতে তুলে নিলেন পদ্মশ্রী পুরস্কার
২. সিয়াচেন (Siachen): এখানে মাঝেমধ্যে এমন পরিস্থিতি হয় যে, খাবারটুকুও যেন মনে হয় বিলাসিতা। এই ধরনের নিম্ন তাপমাত্রা, কম অক্সিজেন এবং উচ্চ উচ্চতায় সৈন্যদের স্মৃতিশক্তি হারানো, নিদ্রাহীনতা, ত্বক পুড়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা হয় সেনাবাহিনীর। যে জায়গায় দুই সেকেন্ডে জল জমে যায়, সেখানে মানুষের পক্ষে বসবাস করা কতটা কঠিন, তা অনুমান করা যায়। তা সত্ত্বেও জওয়ানরা পূর্ণ শক্তি, সাহস ও শৌর্য নিয়ে সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত রয়েছে।
এছাড়াও সিয়াচেনের তাপমাত্রা মাইনাস ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতই কম যে শিরায় প্রবাহিত রক্ত জমে যায়। অক্সিজেনের মাত্রা মাত্র ১০ শতাংশ। নিশ্বাস নেওয়ার আগে ও নেওয়ার সময় ভাবতে হবে শ্বাস আসবে কি আসবে না। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এই জায়গা আরও বেশি দামি। এই জায়গাটি এমন, যেখান থেকে ভারতীয় সৈন্যরা পাকিস্তান ও চিন উভয়ের উপর নজর রাখে।
৩. অরুণাচল প্রদেশ ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত বিরোধের আরেকটি শক্ত ঘাঁটি। এটিকে সবচেয়ে বিপজ্জনক বলেন অনেকে। চিনা সৈন্যরা প্রায়শই এখানে ভারতীয় পোস্টে আক্রমণ করে। সংঘর্ষ হয়।
এছাড়াও বর্ষাকালে এখানের পরিবেশ আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে, কারণ কুয়াশার কারণে সীমান্তের ওপারে চলাচল দেখা যায় না। ফলে শত্রুপক্ষকে ঠাওর করা মুশকিল হয়।
Indian Rail : আপনি কি ভারতীয় রেলে চাকরি করতে ইচ্ছুক? তবে আপনার জন্য রয়েছে বড় খবর
৪. ছত্তিশগড়ের দান্তেওয়ারা: অক্টোবর ২০১৮ সালে, দূরদর্শনের চিত্রগ্রাহক অচ্যুতানন্দ সাহু এবং অন্য দুই পুলিস সদস্য নকশাল হামলায় নিহত হন। এখানে জঙ্গলে পোস্টিং করার সময় আর্দ্রতায় ভরা আবহাওয়া সবচেয়ে বড় সমস্যা। বিপদ মশা এবং বন্য প্রাণীর থেকেও আসে। নকশালদের বুলেট সৈন্যদের তেমন ক্ষতি নাও করতে পারে, কিন্তু মশা এবং জঙ্গলের আবহাওয়া সমস্যায় ফেলে।
এটি সেই একই জায়গা যেখানে ২০১০ সালের এপ্রিলে নকশালদের হাতে ৭৬ জন সিআরপিএফ জওয়ান নিহত হয়েছিল। নকশালরা সিআরপিএফের ৮২তম ব্যাটালিয়নকে প্রায় নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল। হামলার পর নকশালরা অস্ত্রও লুট করে নিয়ে যায়।
শিশুদের বাইকে তুলতে গেলে এবার কড়া আইন কেন্দ্রের,সাবধান!
৫. রাজস্থানের থর মরুভূমি: ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের সবচেয়ে বড় অংশ রয়েছে এখানে। এটি প্রায় ১০৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ। এর নিরাপত্তায় প্রায় ৩ লাখ সেনা মোতায়েন রয়েছে। এখানে সীমান্তের ওপার থেকে বালির ঝড়, অনুপ্রবেশ এবং মাঝে মাঝে যুদ্ধবিরতির ঘটনার মধ্যে ভয়ানক তাপমাত্রার খেলা চলছে। এখানে গ্রীষ্মকালে দিনের বেলা তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত যায়। এই গ্রীষ্মে, প্রবল বাতাস এবং বালির ঝড়ের মধ্যে সীমান্তে সৈন্যদের দায়িত্ব পালন অত্যন্ত কঠিন।