Breaking Bharat: দুই বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি ব্যবসা মাত্র ৭৪ টাকায় বিক্রি করে দিলেন ব্যবসায়ী? বিলিওনিয়ার ব্যবসায়ী বিআর শেঠির জীবন সম্পর্কে জানেন?
বুর্জ খালিফার নাম শুনে নিয়ে এমন মানুষ গোটা বিশ্বে পাওয়া যাবে না। এখন তো সেই বিরাট হোটেলকে প্রেক্ষাপট করে বাংলার বিভিন্ন দুর্গাপূজায় বড় বড় প্যান্ডেল তৈরি হয়। যে মানুষ বুর্জ খলিফার মোটা একটা ফ্লোর কিনে নিতে পারে, ধুমকেতুর মতো উত্থান হওয়া সেই ব্যবসায়ীর পতন সত্যি সত্যি একেবারেই উল্কার মতই হলো।
বিলিওনিয়ার ব্যবসায়ী বিআর শেঠির জীবন ঠিক এই শব্দগুলো দিয়েই বোধহয় বর্ণনা করা যেতে পারে কারণ আসল কথাগুলো না জানলে হয়তো বিশ্বাসই করা যাবে না যে এমন ঘটনাও ঘটতে পারে। একেবারে শূন্য থেকে নিজের হাতে আঠারো হাজার কোটি টাকার সাম্রাজ্য করতে পেরেছিলেন যে মানুষটা আজ তার অবস্থা জানলে আপনি বিশ্বাস করতে পারবেন না।
ব্যবসা মাত্র ৭৪ টাকায় বিক্রি করে দিলেন ব্যবসায়ী:
প্রতিটা মানুষ চায় নিজের মতো করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে। ছোটবেলায় পড়াশোনা করে যা যা শিক্ষা লাভ করে সেগুলোকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে চাকরি বা ব্যবসা করে সংসার সুখের করে তুলতে প্রত্যেকেই ভীষণ রকমের চেষ্টা চালিয়ে যান। এর মধ্যে কেউ কেউ ব্যতিক্রমী হয়ে বিলিয়নিয়ার হয়ে ওঠেন।
তাতে যে তাদের পরিশ্রমকে এতটুকু অশ্রদ্ধা করা হচ্ছে এমনটা নয় তবে এর সঙ্গে ভাগ্যের যোগাযোগটাও থাকে। পরিশ্রমণে কি করেন কিন্তু সফলতা সকলের আসে না সেটার পেছনে নানা রকমের ব্যাখ্যা থাকতে পারে কিন্তু সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছে সেখান থেকে এক নিমিষে পতন হওয়াটা যে কতটা দুর্ভাগ্যজনক সেটা যার সাথে ঘটেছে তিনি ছাড়া আর কেউ বোঝেন না।
বিআর শেঠির পুরো নাম বাভাগুথু রঘুরাম শেঠি:
কর্পোরেট জগতের ইতিহাসে এক বিরল ঘটনার কথা উল্লেখ করবো আমরা। দুই বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি ব্যবসা মাত্র ৭৪ টাকায় বিক্রি করে দিলেন ব্যবসায়ী। বলেছিলাম না গল্পের থেকেও অবিশ্বাস্য মনে হবে এই সত্য ঘটনা।
অনেকেই হয়তো জানেন যে ‘বিআর শেঠির পুরো নাম বাভাগুথু রঘুরাম শেঠি‘। কাজের সন্ধানে পাড়ি জমান মধ্য প্রাচ্যে, লক্ষ্য ছিল সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। পকেটে তখন মাত্র ৮ ডলার। কিন্তু কঠোর পরিশ্রম করতে পিছ-পা হননি কোনও দিন। অল্প সময়ের মধ্যে তৈরি করে ফেলেন ব্যক্তিগত মালিকানাধীন স্বাস্থ্য অপারেটর এনএমসি হেলথ।
বিশ্বের বিলিয়নিয়ারদের ক্লাবে প্রবেশ করতে এরপর খুব একটা বেশি সময় লাগেনি। নিজেকে নিয়ে থাকতে ভালোবাসতেন এবং যেখানে সেখানে আজেবাজে খরচ করতেন এই ব্যবসায়ী। বুর্জ খলিফার গোটা একটা ফ্লোর কিনে নিয়েছিলেন। ২৫ মিলিয়ন ডলার খরচ করে কেনেন দুটি ফ্লোর।
আরো পড়ুন – বচ্চন পরিবারে বড় ভাঙন? আলাদা হয়ে যাচ্ছেন অভিষেক ঐশ্বর্য?
রাতে সেখানে পার্টি করতেন বন্ধু-বান্ধবকে নিয়ে। এখানেই শেষ নয়, দুবাইয়ের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার এবং পাম জুমেরাহতেও সম্পত্তি ছিল তাঁর। কোটি টাকা খরচ করে গ্যারেজ তৈরি করে বিশ্বের নামিদামি ভিনটেজ গাড়ি যেমন মরিস মাইনর ১০০০, সিলভার স্পিরিট, ফ্যান্টম, ৭টি রোলস রয়েস, মার্সিডিজ-মেবাচ এম ৬০০ – এই সব কিছুই রেখেছিলেন।
এক কথায় একেবারে ধূমকেতুর মতো উত্থান। জানা যায় ২০১৪ সালে ৪.২ মিলিয়ন ডলারে মধ্যপ্রাচ্যের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে একটি প্রাইভেট জেটের অর্ধেক মালিকানাও দখল করেন তিনি। তবে সবকিছু শেষ হয়ে গেল মাত্র একটা টুইটে।
আরো পড়ুন – বাবা ভাঙ্গা আসলে কে? কীভাবেই বা তিনি সব ভবিষ্যতবাণী মিলিয়ে দেন?
পতন হলো একেবারে উল্কার মতো। ইউকে-ভিত্তিক ইনভেস্টমেন্ট রিসার্চ ফার্ম মাডি ওয়াটারস একটি ট্যুইট করে যেখানে এনএমসি স্বাস্থ্য সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে তারা। অনেকটা আজকের দিনে হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের মতো মনে হতে পারে আপনার। তারপরই বিপর্যয়।
আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি শেঠি। ভাবুন ২ বিলিয়ন ডলার বাজারমূল্যের তাঁর সংস্থা ফিনাব্লার পিএলসিকে ইজরায়েল-ইউএই কনসর্টিয়ামের কাছে মাত্র ১ ডলারে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন। কিন্তু কী ছিল সেই প্রতিবেদনে? সেখানে বলা হয় শেঠি লুকিয়ে ১ বিলিয়ন ডলারের ঋণ নিয়েছেন।
আরো পড়ুন – জাতীয় সড়কের উপর ধান চাষ করলেন ‘পাগলি’? হতবাক বিশেষজ্ঞরাও
কিন্তু ফিনাব্লার পিএলসি বোর্ডের কাছে এই বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার নেই। এরপরই লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে শেঠির সংস্থার শেয়ারের দাম পড়তে শুরু করে। এই ব্যবসায়ী আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি।