Snake bite : ‘সাপের কামড়ে আক্রান্ত’র ঘটনা বাড়ছে ! সাথে বাড়ছে ‘সাপের উপদ্রব’। তাহলে উপায়? আপনি কি সাপে ভয় পান? তাহলে এবার পরিসংখ্যান শুনে ভিরমি খেতে পারেন!
যেকোনো সুস্থ মানুষের কোনও না কোনও বিষয় বা ঘটনায় ভয় থাকে। সবথেকে বেশি ভয়ের আশঙ্কা থাকে কীটপতঙ্গ বা প্রাণীর থেকে। সেক্ষেত্রে বাঘ সিংহের থেকেও ভয়ংকর হল সরীসৃপ। আপনি কী একমত এই বিষয়ে? তাহলে আপনাদের জানিয়ে দিতে চাই এই তালিকায় সবার আগে সাপের নাম।
যত দিন যাচ্ছে ততই বাড়ছে সাপের উপদ্রব:
একবার সেই দৃশ্য মনে করলে গা কেমন যেন শিউরে ওঠে তাই না? শীত, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা বা বলা যেতে পারে বছরের বারো মাস তাদের দেখা মেলে। কেউ দুঃস্বপ্নেও এই সরীসৃপদের সম্মুখীন হতে চান না। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে যত দিন যাচ্ছে সাপের উপদ্রব বাড়ছে (Snake infestation is increasing)।
এর ফলে প্রতিদিন বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। সমীক্ষা বলছে আমাদের দেশে সাপে কামড়ে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নজিরবিহীনভাবে বেড়েই চলেছে।
কিছুতেই ‘সাপে কামড়ানোর’ ঘটনা আটকানো যাচ্ছে না!
সাপ পছন্দ করেন এরকম মানুষ পৃথিবীতে খুব কম মেলে। বিদেশে অনেকে সাপ ধরার কাজে পটু। বিশ্বজুড়ে সাপ নিয়ে গবেষণা করা বাড়ছে। নানা ধরনের ওষুধ আবিষ্কার করা হচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কিছুতেই সাপে কামড়ানোর ঘটনা আটকানো যাচ্ছে না।
গ্রামের দিকে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু চাষী কৃষকরা সবথেকে বেশি সাপের কামড়ে আক্রান্ত হচ্ছেন আর মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে। সেন্টার ফর গ্লোবাল হেলথ রিসার্চ নামে একটি সংস্থা সাপের কামড়ে মানুষের মৃত্যু নিয়ে সমীক্ষা চালাচ্ছিল।
সাপের কামড়ে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যাটা বেশি:
সমীক্ষার রিপোর্ট দেখলে চোখ কপালে উঠবে আপনার। রিপোর্ট বলছে সাপের কামড়ে আমাদের দেশে প্রতি বছর ৫৮ হাজার মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। বর্ষাকালে অর্থাৎ কিনা জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সাপের কামড়ে আক্রান্ত হওয়া এবং মৃত্যু হওয়া মানুষের সংখ্যাটা বেশি।
আরো পড়ুন – সেতুর ওপর দাবার বোর্ড! অর্থাৎ’চেন্নাইয়ের নেপিয়ার ব্রিজ’ দেখলে মনে হচ্ছে ‘দাবা খেলার বোর্ড’।
স্বাভাবিকভাবেই বর্ষাকাল প্রাণী পতঙ্গ সরীসৃপ দের প্রজননের সময়। আর জল স্থল মিলিয়ে এটাই সাপেদের বাইরে বেরোনোর আদর্শ সময়। তাই সব থেকে বেশি এই সময়েই দুর্ঘটনা ঘটে। বিহার, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, উড়িষ্যা, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান ও গুজরাত – সারা দেশের মধ্যে এই রাজ্যগুলোতে সাপের আঘাতে মৃত্যুর সংখ্যা সব থেকে বেশি।
সাপের কামড়ের পর ওঝা বা ঝাড়ফুক করা:
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেসান বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে পৃথিবী ব্যাপী সাপের আঘাতে মৃত্যুর সংখ্যাটা লক্ষাধিক ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ভারতের অধিকাংশ গ্রামীণ এলাকায় এখনো সেভাবে মানুষ শিক্ষিত হন নি। ফলে সেক্ষেত্রে অন্ধবিশ্বাসের উপরেই তাদের ভরসা করতে হয়।
আরো পড়ুন – ‘বান্ধবীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক’ স্থাপন করে মারাত্মক অপরাধ করলেন ‘হলিউড অভিনেতা চার্লি সিন’!
এর জেরে অনেকেই সাপের কামড়ের পর ভূত তাড়াবার মতো ওঝা বা ঝাড়ফুক করার লোকজন খুঁজতে থাকেন। হাসপাতালে না নিয়ে যেতে পারলে মৃত্যু অবধারিত হয়ে যায়। এই বিষয়ে একটু জানিয়ে রাখা দরকার যে ভারতে মোট ২৭০ প্রজাতির সাপ রয়েছে।
দক্ষিণ ভারতে সাপের কামড়ে মৃত্যুর সংখ্যাটা বেশি:
এবার কোন সাপ বিষধর আর কোন সাপের বিষ নেই সেটা খুব কম মানুষই জানেন। এক ওষুধ সব সাপের জন্য কাজ করে না আর অ্যান্টি ভেনাম প্রত্যন্ত এলাকায় পাওয়া যায় না। দক্ষিণ ভারতে সাপের কামড়ে মৃত্যুর সংখ্যাটা বেশি কারণ সেখানে সাপের সংখ্যাও তুলনামূলকভাবে অনেকটাই বেশি (South India has the highest number of snakebite deaths)।
আরো পড়ুন – Sapna Choudhary : ভাইরাল ডান্সার স্বপ্না চৌধুরী বাড়ি বন্ধক রেখে বাবার চিকিৎসা করিয়েছেন?
কিছু ক্ষেত্রে মানুষের অজ্ঞতাকে দায়ী করলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরিকাঠামো গত ত্রুটির কারণে চিকিৎসা সম্ভব হয় না। প্রাণী এবং মানুষ একসঙ্গে বেঁচে থাকবে এটাই কাঙ্খিত। অভিযোজনগত দিক দিয়ে যার ক্ষমতা বেশি তার স্থায়িত্বকাল বেশি সেটা প্রমাণ করে গেছে ডারউইনের তত্ত্ব।
সাপের দংশন বাঁচার জন্য আরো সচেতনতা প্রয়োজন:
কিন্তু বিষয়টা হলো চিন্তা আর উদ্বেগের কারণ নিজের পরিবারের মানুষ চলে যাবেন এটা কারোর পক্ষেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। সাপের দংশন বাঁচার জন্য আরো বেশি সচেতনতা প্রয়োজন। সেই লক্ষ্যে বিশ্বজুড়ে প্রতিবছরই ১৬ জুলাই পালিত হয় ‘ওয়ার্ল্ড স্নেক ডে’।
আরো পড়ুন – food crisis : বিশ্ব জুড়ে বাড়ছে ‘খাবারের জন্য হাহাকার’! লড়াই ‘শুধু দুবেলা পেট ভরানোর’ জন্য!
কিন্তু এত কিছু করেও মৃত্যুহার কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না প্রতি বছর সাপের কামড়ে মারা যাচ্ছেন এমন মানুষের তালিকা ক্রমাগত বড় হচ্ছে আর তাতেই উদ্বেগ গোটা দেশজুড়ে। কিছু বেসিক জিনিস মাথায় রাখুন সেটা হল সাপের কামড়ে শান্ত থাকুন অতিরিক্ত ভয় পাবেন না আর সবার আগে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তার বা হাসপাতালে পৌঁছে যান।
বাড়ির চারপাশ পুরস্কার রাখুন চেষ্টা করুন যাতে কোন মতেই কোন জঙ্গল বা ঝোকঝাল সেখানে তৈরি না হয় যতটা সম্ভব সাপের উপদ্রব এড়ানোর জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখুন। সজাগ সচেতন থেকেই আতঙ্ককে জয় করা সম্ভব।