Breaking Bharat: ১২৫ বছর পর প্রকৃতির কোলে কোন পাখি ফিরল জানেন? পাখিদের প্রত্যাবর্তন ব্যাপারটা কেমন বলুন দেখি? ১২৫ বছর তেমনটাই যে হল!
আমরা বারবার বলি যে এই পৃথিবীতে অনেক রকমের জীবজন্তু আছে যাদের সম্পর্কে আমরা জানিনা। এর মধ্যে অনেক প্রাণী নিজেদের অভিযোজনকে কাজে লাগিয়ে প্রকৃতিতে রয়ে গেছে কিন্তু অনেকেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। সবথেকে অবাক করার মতো বিষয় হলো আজ আমরা যে পাখির কথা বলবো সে এখন থেকে প্রায় কয়েক দশক আগে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েও দুর্দান্তভাবে কাম ব্যাক করেছে।
১২৫ বছর সময়কালটা কিন্তু খুব একটা কম নয়। এতগুলো বছর ধরে নিরুদ্দেশ থাকার পর, এভাবে ফিরে আসাটা সহজ কথা ছিল না। কিন্তু সেই সব অসম্ভবকে সম্ভব করা গেছে। ১২৫ বছর পর প্রকৃতির কোলে কোন পাখি ফিরল জানেন? তাকেহি পক্ষীর কথাই বলছি আমরা এই প্রতিবেদন জুড়ে। ভারী অদ্ভুত এই পাখির সম্পর্কে জানলে আপনাকে অবাক হতে হবে। চলুন তাহলে একটু বিস্তারিত ভাবেই আলোচনা করা যাক (Takahē moved to new Nelson home)।
১২৫ বছর পাখিদের প্রত্যাবর্তন:
প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতে পাখিদের এবং বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীদের সংরক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক পদক্ষেপ। তাই সে ক্ষেত্রে শতবর্ষ পেরিয়ে যে পাখি ফিরে এসেছে তাকে ঠিক ভাবে রাখাটা এখন বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড দেশের দক্ষিণে পাহাড়-পর্বতে ঘেরা একটি দ্বীপের জঙ্গলে নারী-পুরুষ মিলিয়ে ১৮টি তাকাহি পাখি (Takahē Bird) ছাড়া হয়েছে।
লক্ষ্য একটাই, যত বেশি সংখ্যায় এই পাখির বৃদ্ধি হবে সেটাই জীবজগতের বৈচিত্র কে বজায় রাখতে সাহায্য করবে। এখানে একটু বলে দেওয়া দরকার যে নাদুস-নুদুস দেখতে এই পাখি কিন্তু উড়তে পারে না। অদ্ভুত ব্যাপার হল বিগত ১২৫ বছর ধরে ওই তাকেহি পাখির দেখা ছিল না।
আরো পড়ুন – সমুদ্রের তলায় অন্য গ্রহের দানব আছে জানেন? হাতেনাতে প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা?
অতি সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডেরই দক্ষিণের লেক ওয়াটিপু উপত্যকায় নতুন করে তাদের সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর আর পদক্ষেপ করতে দেরি করেননি প্রাণিবিজ্ঞানীরা। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে উদ্যোগ নিয়ে পাখিদের ডিম একত্রিত করার কাজ শুরু হয়। এর পর যথারীতি জন্ম নেয় শাবকরা। বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে রেখে তাদের লালন পালন করার পর একে একে জঙ্গলে ছাড়া শুরু হয়।
তাকাহি এই পাখির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য:
আগেই বলেছি যে তাকেহি পাখি উড়তে পারে না। এর আকার হয় ৫০ সেন্টিমিটারের মতো। তীক্ষ্ণ এবং মজবুত চঞ্চু আর ছোট ছোট পা দেখতে পাবেন আপনি। পালকের রং উজ্জ্বল নীল আর সবুজের মিশেল যেন। ওজন হয় সর্বাধিক তিন কেজি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকেই নিউজিল্যান্ডের বাস্তুতন্ত্রের অংশ এই তাকেহি পাখি।
আরো পড়ুন – Elon Musk: টেসলাকর্তা এলন মাস্ক থাকেন কুঁড়ে ঘরে? কী আছে সেখানে?
কিন্তু ১২৫ বছর আগে তাদের বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় যেহেতু সেই সময় এই পাখির জীবাশ্ম ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায়নি। এই পাখি বছরে একবারই বংশবিস্তার করে। মানে নিজেদের এক জীবন কালে একটি বা দু’টি সন্তানকেই লালন পালন করে বড় করে তোলে। এদের জীবনকাল হয় সর্বাধিক ১৮ বছর।
আরো পড়ুন – অসুস্থ ব্যক্তি ট্রেন যাত্রায় ঠিক কতটা ছাড় পেতে পারেন, আপনি কি জানেন?
তবে অভয়ারণ্যে নজরদারিতে রাখা গেলে, ২২ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। মূলত গাছের পাতা, শস্যদানা খেয়েই এদের দিন কেটে যায়। অত্যন্ত সতর্কভাবে এদের বংশবৃদ্ধি করানোই এখন প্রাণী বিজ্ঞানীদের আসল লক্ষ্য।