Breaking Bharat: সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ নিয়ে কি আপনার মনেও কুসংস্কার আছে? নাকি শাস্ত্রে বিশ্বাস করেন বলে বিজ্ঞান মানতে চান না?
ছোটবেলা থেকে বাংলা রচনা তে একটা বিষয় কমন ছিল সেটা হল বিজ্ঞান আশীর্বাদ না অভিশাপ? পাশাপাশি বিজ্ঞান ও কুসংস্কার এই নিয়েও প্রবন্ধ লিখতে হতো অনেককেই। সবেতেই কিন্তু শেষমেশ বিজ্ঞানের জয় হত।
যা সত্যি যুক্তিসম্মত তাকে আড়াল থেকে সরিয়ে সামনে তুলে আনাটাই প্রতিটা মানুষের জীবনের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। অথচ সভ্যতা এত দূর এগিয়ে আসার পরেও ছোট্ট ছোট্ট কুসংস্কার আমাদের সমাজ জীবনে আজও রয়ে গেছে। যার উদাহরণে দুটো শব্দ বলতে পারি আমরা এখনই, একটি হল সূর্য গ্রহণ আর অন্যটি চন্দ্রগ্রহণ।
সূর্যগ্রহণ এবং চন্দ্রগ্রহণ ঘিরে একাধিক কুসংস্কার:
আপনি কি জানেন সূর্যগ্রহণ এবং চন্দ্রগ্রহণ ঘিরে একাধিক কুসংস্কার আমাদের জীবনের প্রতিটা প্রান্তে ছুঁয়ে আছে। খাবার খাওয়া থেকে শুরু করে পোশাক পরা, রান্না করা থেকে শুরু করে গ্রহণ দেখা – সব কিছুর মধ্যেই একটা করে সংস্কার কুসংস্কারের লড়াই লেগেই আছে।
যেকোনো ধরনের গ্রহণ সেটা সূর্যগ্রহণ হোক বা চন্দ্রগ্রহণ সবার আগে কোপ এসে পড়ে খাবারের ওপর। যেমন ধরুন এই সময় অর্থাৎ গ্রহণ চলাকালীন খাবার রান্না করা যাবেনা বা রান্না হলে সেই খাবার খাওয়া যাবেনা ফেলে দিতে হবে। বিশ্বের প্রতিদিন কত মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছেন আর একটা সামান্য কুসংস্কারের জন্য খাবার অপচয়ের পথে হাঁটতেও সাধারণ মানুষ দুবার ভাবেন না।
যৌন সম্পর্ক স্থাপনের উপযুক্ত সময় নাকি নয় সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ , বুঝুন কান্ড! মানুষের জীবনে যৌনতার আবেগের বহিঃপ্রকাশ কি আর গ্রহণ দেখে হবে ,বলুন দেখি। এই সময় নাকি সন্তান জন্মগ্রহণ করলে সে হয় খুব চালাক হবে, নাহলে অসুস্থ হবে।
প্রচলিত বিশ্বাসের কথা শুনে ডাক্তাররা হাসবেন না কাঁদবেন নিজেরাই বুঝতে পারেন না। সন্তান যেভাবে ভূমিষ্ঠ হয় তার সঙ্গে এত কোটি কোটি মাইল দূরে থাকা সূর্য গ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণের কী প্রভাব পড়তে পারে, এটাই এখনো পর্যন্ত বিজ্ঞানের কাছে পরিষ্কার নয়। তবুও সংস্কার কুসংস্কারের লড়াইটা চলছে।
আরো পড়ুন – ফুলন দেবী কে চেনেন? ডাকাত হিসেবে নাকি লোকসভার সদস্য হিসেবে? একই অঙ্গে এত রূপ!
সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ একটা বিষয় খালি চোখে দেখার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা। এক্ষেত্রে আপনাকে বলি এর জন্য একটা বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা আছে। এমনিতেই সূর্যের এতটাই তেজ যে খালি চোখে সূর্যের দিকে তাকানো সম্ভবই নয়। কিন্তু যখন আংশিক বা পূর্ণগ্রাস গ্রহণ হয় তখন সূর্যের দিকে তাকাবার একটা প্রবণতা মানুষের মধ্যে তৈরি হতেই পারে এটা ভেবে যে সূর্যের তেজ কম আছে।
আরো পড়ুন – ‘বাঘের দুধ’ পাওয়া যায়? সব ছেড়ে কেন বাঘের দুধ নিয়ে এত কথা? কখনো ভেবে দেখেছেন?
কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন সূর্যের দিকে তাকালে সোলার রেটিনোপ্যাথি হতে পারে। কারণ সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি সরাসরি পড়লে তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তা কখনোই খালি চোখে দেখা সম্ভবপর সাধারণ মানুষের জন্য নয়। এবার গ্রহণের সময় সূর্যের দিকে তাকাতে গেলে টেলিস্কোপ বা অন্য কোন ধরনের গ্রহণ দেখার বিশেষ চশমার কথা বলা হয়।
আরো পড়ুন – কিছু মানুষকে দেখলে কুকুর মাত্রা অতিরিক্ত চিৎকার করে কেন?
বিজ্ঞানসম্মত কারণ এটাই যে সূর্যের আলোয় চোখের ক্ষতি হতে পারে। এটা নয় যে গ্রহনের সময় সূর্য বা চন্দ্রের দিকে তাকালে কোনও এক বিশেষ শক্তি আপনার জীবনটাকে এলোমেলো বা তছনছ করে দেবে।
কুসংস্কারকে কখনোই প্রাধান্য দেবেন না ।পৃথিবীতে যদি কোনও কিছু ঘটে তার পেছনে একটা যুক্তিসম্মত কারণ আছে। সেটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন এবং অবশ্যই আপনার পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে সেটি সঞ্চারিত করার চেষ্টা করুন।