Breaking Bharat: অন্যান্য মহাদেশের থেকে এশিয়াতে কুসংস্কার এত বেশি কেন? এই প্রতিবেদনের শুরুতে আমরা প্রথমেই জানিয়ে দিতে চাই যে আমরা কিন্তু কোনো অন্ধ বিশ্বাস আর কুসংস্কারকে প্রশ্রয় দিচ্ছি না। জীবন প্রতি মুহূর্তে এগিয়ে চলে নিজের বিশ্বাসকে সঙ্গী করে কিন্তু অন্ধবিশ্বাস কখনোই সমর্থন যোগ্য নয় (superstition causes and effects)।
কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে পাশ্চাত্যের তুলনায় প্রাচ্যে যেন বেশি করে গভীর হয়ে বসেছে এই কুসংস্কার। তাই জীন, ভূত প্রেত এইসব কিছুর বাড়াবাড়ি এখানে সব থেকে বেশি। কেন এই বিষয়ে আমাদের ভাবনাচিন্তা পিছিয়ে রয়েছে সেই নিয়েই বিস্তারিত জানাবো এই প্রতিবেদনে।
আধুনিক যুগেও কুসংস্কার কেন বিদ্যমান?
একটা জিনিস লক্ষ্য করে দেখবেন যেখানে যত বেশি করি অশিক্ষা সেখানেই তত বেশি করে কুশিক্ষা। অর্থাৎ পড়াশোনার আলো যেখানে পৌঁছয়নি সেখানেই অন্ধবিশ্বাসের অন্ধকার গভীর হয়ে রয়ে গেছে। যদি এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন দেশগুলির চিন্তাভাবনা আর ইউরোপীয় বা আমেরিকার চিন্তাভাবনার সঙ্গে একটা মিল খুজতে যান তাহলে দেখবেন অসামঞ্জস্য অনেক বেশি।
কারণটা বুঝতে খুব একটা অবাক হওয়ার কিছু নেই। খুব স্বাভাবিকভাবেই এশিয়ার থেকে বিশেষ করে প্রাচ্যের দেশগুলোর থেকে অনেক বেশি করে পাশ্চাত্যের ভাবনা চিন্তা এগিয়ে আছে। এমনটা নয় যে এটাই চিরকাল হয়ে এসেছে। একটা সময় ছিল যখন বলা হত ভারতবর্ষ যেটা আগে ভাবে বিশ্ব সেটা অনেক পরে ভাবে।
জাতিগত কুসংস্কার সংজ্ঞায়িত করা:
বড় বড় আবিষ্কার হয়েছে এই দেশের বিভিন্ন প্রোথিতযশা ব্যক্তিদের হাত ধরে। শিক্ষা থেকে সংস্কৃতি সবেতে ভারত বর্ষ বিশ্বকে চালনা করার মত জায়গায় নিজেকে পৌঁছে দিয়েছে। কিন্তু তার সত্বেও বেশ কিছু জায়গায় এখনো পর্যন্ত অন্ধ বিশ্বাস আর গোড়ামি রয়ে গেছে। যত বেশি করে ঝাড়ফুক , তন্ত্র মন্ত্রের উপর আস্থা রাখবেন সাধারণ মানুষ ভূত আত্মা এসবের ভাবনা ততই মাথাচাড়া দেবে।
অন্যান্য মহাদেশে যেখানে শিক্ষার দিকে জোর দেওয়া হয়, সেখানে আমাদের দেশে এখনো নম্বরভিত্তিক পড়াশোনার রীতি প্রচলিত আছে। কোথাও একটা ভূত আর ভগবানের উপর অতি নির্ভরশীলতা বিজ্ঞানকে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না এই মহাদেশের অন্দরে।
আরো পড়ুন – সঞ্চয়ী আর কৃপণের মধ্যে ফারাক কোথায়? জানেন কি?
প্রতিটি মানুষ যদি শিক্ষার আলোয় আলোকিত হতে পারেন এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারেন তাহলে তাদের অনিশ্চয়তা বা নিরাপত্তাহীনতার সুযোগ নিয়ে ভ্রান্ত জগতের মধ্যে তাদেরকে আটকে রাখা যাবে না। এই বিষয়টা খুব ভালো করেই জানেন ভারতবর্ষের একশ্রেণীর মানুষ।
সেই কারণে জন্য এশিয়া মহাদেশের অন্যতম বৃহত্তম দেশ ভারতে সম্পূর্ণভাবে শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা করাই হয় না। ধরে নিন একজন গরীব অশিক্ষিত মানুষকে বুঝিয়ে দেওয়া হলো তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না কারণ তার মধ্যে আত্মা ভর করেছে।
আরো পড়ুন – ছেঁড়া জামা প্যান্ট কি আজকের দিনের ফ্যাশন? নাকি এটাই বর্তমান স্টাইল স্টেটমেন্ট?
যদি সেই ব্যক্তি না জানেন যে আত্মা কারোর উপর ভর করতে পারে না অন্তত বিজ্ঞান সেটাই বলে, তাহলে কি তিনি এই ভুল বোঝানকে কোনদিন খন্ডন করতে পারবেন? ফলস্বরূপ মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করেই চলেছে।
ভারতবর্ষের বাইরে গিয়ে এশিয়া মহাদেশের অন্যান্য দেশ একইভাবে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যেই নাম লিখিয়ে রেখেছে। যেখানে দাঁড়িয়ে ইউরোপ বা আমেরিকা নতুন করে বিজ্ঞানকে নিজেদের প্রাত্যহিক জীবনে প্রতিটা ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে শিখে গেছে। তার ফল তারা হাতেনাতে পাচ্ছে।
আরো পড়ুন – ঘুষ খাওয়া অপরাধ নয়, প্রকাশ্যে চুমু খাওয়া অপরাধ হতে পারে? ঠিক বললাম তো?
তারা জানি সাপে কামড়ালে ওঝা নয় ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হয়, অসুখ হলে ডাক্তার চিকিৎসা করবেন। এদেশের মানুষ একেবারেই জানেন না তেমনটা নয় কিন্তু পরিমাণটা অনেকটা কম আর এর জন্য সবথেকে বেশি করে সচেষ্ট হতে হবে সরকারকে। যদি মানুষকে বুঝিয়ে না হয় তাহলে কঠিন আইন প্রয়োগ করতে হতে পারে। কিন্তু সর্বোত্তম উন্নতির জন্য এইটুকু করা মোটেই অন্যায় নয়।