Breaking Bharat: সুন্দরবনের জঙ্গল (Sundarbans forest)! সুন্দরবনের বন সুন্দরী কেন বিখ্যাত জানেন? বন সুন্দরীর ব্যক্তিগত জীবন কেমন? হোক না সে প্রকৃতি, আহা কত সুন্দরী সে!
পাহাড় না সমুদ্র? মরুভূমি না জঙ্গল? ঘুরতে বেড়াতে ভালোবাসেন বুঝি। তাহলে আজ জলে জঙ্গলে ভ্রমণ করব আপনি আমি। আর অরণ্যের দিন রাত্রি বললে সুন্দরবন কে এড়িয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। কেন বলুন তো? এই প্রতিবেদন দেখুন শেষ পর্যন্ত, বুঝতে পারবেন সবটাই (sundarban area)।
সুন্দরবন কেন বিখ্যাত (Sundarbans forest):
আসলে আমরা নানা সময়ে নানা বিষয় নিয়ে কথা বলি,খবর পৌঁছে দিয়ে থাকি। কিন্তু ব্যক্তিগত পছন্দ নিয়ে আলোচনার সুযোগ মেলে না। তবে ঘুরতে বেড়াতে যাওয়ার কথা উঠলেই বাঙালি মনে নস্টালজিয়া আর উরু উরু ভাবনা। তবে ভেসেই যদি যাওয়া যায় , যাক ভেসে জীবন।
জীবন নদীর তরঙ্গে আলাদা স্রোত থাকে জানেন,যেটা সদা চঞ্চল। মাঝে মাঝে ডাঙার দেখা। কখনো ঝোপ ঝাড়, অতর্কিতে আক্রমনের আশঙ্কা – কী সাহিত্যের কথা মনে হচ্ছে নাকি সিনেমা? তাহলে বাস্তবে জল জঙ্গলের রাস্তা ধরি চলুন, গন্তব্য সুন্দরবন (sundarbans mangrove forest)।
সুন্দরবন জঙ্গল (sundarbans mangrove forest):
দক্ষিণ ২৪ পরগনার দক্ষিণ আর উত্তর ২৪ পরগনার দক্ষিণ-পূর্ব অংশ জুড়ে সমুদ্রগামী অসংখ্য নদনদীর মাঝে ছােটো ছােটো দ্বীপ জুড়ে গড়ে ওঠা গভীর অরণ্য সুন্দরবন বলে পরিচিত। সম্ভবত সুন্দরী গাছের প্রাচুর্যের জন্যই নাম হয়েছে সুন্দরবন। সমুদ্রের জোয়ারভাটায় এখানকার জল ও মাটি লবণাক্ত (sundarban wikipedia)।
মূল ভূখণ্ড আর দ্বীপের মধ্যে রয়েছে অসংখ্য খাল-খড়ি। চারদিকে গভীর জঙ্গল। সম্প্রতি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সুন্দরবন। তবুও ভ্রমণ পিপাসু মানুষের টান রয়েছে আজও। সুন্দরবনের বিপদসঙ্কুল অরণ্যের মধ্যে রয়েছে নানান প্রজাতির বন্যপ্রাণী (sundarban forest animals)।
সুন্দরবনের জঙ্গলে রয়েল বেঙ্গল টাইগার:
সৌন্দর্যে আর হিংস্রতায় সকলকে ছাপিয়ে গিয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার। বিশ্বে এর কোনও তুলনা নেই। দেশের আর কোনও অরণ্যে এত বাঘ নেই, এছাড়া এখানে রয়েছে বনবিড়াল, শুয়াের, বাঁদর আর অসংখ্য হরিণ। নদীতে রয়েছে বিশাল আয়তনের সব কুমির। আর গােটা সুন্দরবন জুড়ে পাখির মেলা।
লঞ্চে বিভিন্ন ওয়াচ টাওয়ার যাতায়াতের পথে জলে বা জঙ্গলে বাঘের দর্শন পাওয়া নিতান্তই ভাগ্যের ব্যাপার । বাঘ ঘুরে বেড়ায় জলে জঙ্গলে। আর সাপের কথা যত কম বলা যায় ততই ভালো। আঁতকে উঠবেন শয়ে শয়ে সাপ দেখে। মনে হবে এ কোথায় এলাম!
আপনি কি জানেন, সুন্দরবন মাঝে মাঝেই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কবলে পড়ে। এর ফলে মাঝে মাঝেই বেশ কিছু দ্বীপ জলের তলায় হারিয়ে যায় ,ফলে সমগ্র দ্বীপের মানচিত্রের পরিবর্তন ঘটে। অন্য সব অরণ্য থেকে সুন্দরবন ভ্রমণ একেবারেই স্বতন্ত্র। এখানে জঙ্গলে ঘােরার কোনও সুযোগ নেই।
নদীপথে লঞ্চ বা স্টীমারে বসে দর্শন করতে হয় দ্বীপময় সুন্দরবন। ২৫৮৫ বর্গ কিমি অঞ্চল জুড়ে গড়ে ওঠা অরণার মধ্যে রয়েছে ছােটো-বড়ো প্রায় ১০০টি ধাপ। এর মধ্যে প্রায় ৩০টিতে রয়েছে জনবসতি। ১৯৮৪ সালে ঘােষিত জাতীয় উদ্যান সুন্দরবন। গােমতী আর পিচখালি নদীর সঙ্গমে সুন্দরবনেরই এক অংশ সজনেখালি দ্বীপ।
এখানে মানুষজনের বসতি নেই। লজের কাছেই রয়েছে কচ্ছপ পুকুর, কুমির পুকুর, কামট পুকুর। বিকালে খাবার-দেওয়ার সময় সৃষ্টি হয় আকর্ষণীয় দৃশ্য। খাবারের লােভে কুমির পুকুরের পাড়ে মাঝে মাঝেই ভিড় করে হরিণের দল। এছাড়াও সজনেখালি থেকে দেখে নেওয়া যায় প্রকৃতি বীক্ষণ কেন্দ্র, বনবিবির মন্দির আর মিউজিয়াম (rivers of sundarban)।
আরো পড়ুন- Harmful aspects: সাজগোজের মধ্যেই রয়েছে ভয়ঙ্কর বিপদ! জানেন কি সাজের ক্ষতিকর দিক ?
সুন্দরবনের বনবিবি ভীষণ জাগ্রত বলে মানা হয়। বিভিন্ন ওয়াচ টাওয়ারের পাশেই রয়েছে বনবিবি, বনের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। তিনি বাঘের আক্ৰমণ থেকে মানুষকে রক্ষা করেন। যারা আসলে কাঠ কাটতে, মধু আনতে বা মাছ ধরতে যান সকলেই যাত্রার প্রাক্কালে বনবিবির পূজা করেন। জঙ্গলের মধ্যেও রয়েছে বনবিবির থান।
আরো পড়ুন- Urine infection : ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ! প্রস্রাবে জ্বালা ভাব? ইউরিন ইনফেকশন নয় তো?
সুন্দরবনের আকর্ষণ বাঘ (sunderban tiger), যেমন রূপ তেমন তেজ। বাংলা তথা ভারতের গর্ব বটে। লঞ্চে করে যেতে যেতে যদি নদীর পাড়ে তাকে দেখেন বা গর্জন শোনেন মাঝ রাতে পিলে চমকে যাবে। সুন্দরবনের গড় তাপমাত্রা ৩৩-২০° সে। বার্ষিক বৃষ্টিপাতের গড় ১৯২১ মিমি।
আরো পড়ুন- Khudiram Bose : মৃত্যুর আগে জল্লাদকে ঠিক কোন প্রশ্ন করেছিলেন ক্ষুদিরাম?
সুন্দরবন ভ্রমণের অন্যতম আকর্ষণ ভগবতপুর কুমির প্রকল্প। নােনা জলের কুমির প্রজননের উদ্দেশ্যে ১৯৭০ সালে চালু হয় এই প্রকল্প। নামখানা থেকে জলপথে প্রায় আড়াই ঘন্টার দূরত্বে লােথিয়ান দ্বীপের কাছে সপ্তমুখী নদীর মােহনায় এই কুমির প্রকল্প। একেই বলে জলে কুমির ডাঙায় বাঘ। এই হল সুন্দরবন, জল জঙ্গলের রানী।