Breaking Bharat: জীবনে কখনো সুদখোর মানুষের পাল্লায় পড়েছেন? বাইরে থেকে দেখে কী করে বুঝবেন কোন মানুষটি সুদখোর?
এই পৃথিবীতে প্রতিটা মানুষ সময়ের প্রেক্ষিতে নিজেদের রং বদলাতে শুরু করে। এটার মানে এমন নয় যে যাকে দেখতে ফর্সা সে হঠাৎ করে কালো হয়ে গেল বা কালো কেউ ফর্সা হয়ে গেল। আমরা কোন ধরনের বর্ণবৈষম্যের কথা বলছি না এবং সেটাকে আমরা সমর্থন করি না। আমরা বলতে চাইছি মানুষের চরিত্রের আর মানসিকতার পরিবর্তনের কথা।
টাকা এমন একটা জিনিস প্রতিটা মানুষেরই কখনো না কখনো অনেকটা পরিমাণ টাকার প্রয়োজনীয়তা বোধ হয়। তখন তাকে ধার নিতে হয় সেই টাকা এমন কিছু মানুষের কাছে যারা সুদ বা ইন্টারেস্টের বিনিময় সেই ক্যাশ টাকা লোন দেন। এদেরকে সুদখোর বলা হয়। এটা একটা ব্যবসার মতো অর্থাৎ কাউকে ১০ টাকা দিয়ে তার কাছ থেকে কুড়ি টাকা আদায় করে নেওয়ার মতো।
এবং এদেরকে অনেকেই আগেকার কাবুলিওয়ালার সঙ্গে তুলনা করেন। সাধারণ মানুষ পার্থ পক্ষে সুদখোরদের এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও পরিস্থিতি সবসময় সেই দিকে সায় দেয় না। জীবদ্দশায় কখনো না কখনো সুদের কারবারির দ্বারস্থ হতেই হয় আপনাকে আমাকে।
প্রতিবেদনের শিরোনামে বলা হয়েছিল এদেরকে কী করে চিনবেন? পানি আর চার পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই এরা সমাজে মিশে থাকে এমন নয় যে বিশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হয়। তবে তফাতটা মানসিকতায় ব্যবহারে বোঝা যায়। সুদের ব্যবসা যারা করেন তারা কিন্তু সম্পূর্ণভাবে সাধু পুরুষ এটা বলা যাবে না।
বেশি ক্ষেত্রেই তাদের কাছে যে নগদ টাকা থাকে সেটা অবৈধ বা কালো টাকা হয়। সেই টাকাটাকে বাজারে খাটানোর জন্য তারা এই পদ্ধতি অবলম্বন করেন। নিম্নবিত্ত মধ্যবিত্ত্বেরাই বেশিরভাগ সুদখোরদের খপ্পরে পড়েন। আপনি একটা টাকা ধার নিলেন তার ওপর সুদের হার কি হবে সেটা স্থান ব্যক্তি এবং কত টাকা ঋণ নিচ্ছেন সেই সবকিছুর উপর নির্ভর করে।
আরো পড়ুন – অভিনয় না করেও বলিউডের মালাইকা আরোরা কি করে কোটি কোটি টাকা রোজগার করে?
সুদের হার মাসিক ১০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে সেটা বিভিন্ন এলাকার উপর ভিত্তি করে। অনেক ক্ষেত্রে ঋণের পরিমাণ যদি বেশি হয় সে ক্ষেত্রে যারা সুদের ব্যবসা করেন তারা জমির দলিল বা গয়না বন্ধক রাখতে চান। বলা যেতে পারে তারা এইভাবে মানুষের অসহায়তার সুযোগ নেন। গ্রামের দিকে দরিদ্র কৃষকদের পরিচয় পত্র বন্ধক রাখার রীতিও দেখা গেছে।
সরকারি চাকরিজীবী যারা তাদের কাছ থেকে চেক বন্ধক রেখে ঋণ দেওয়া হয়। কৃষকদের ঋণ দেয়ার পদ্ধতি অবশ্যই গ্রামের দিকে আলাদা। সেক্ষেত্রে ধান কাটার যত আগে কৃষক সুদের বিনিময়ে টাকা নেবেন তত বেশি ধান দিতে হবে এমনটাই নিয়ম চালু করা আছে। টাকা ধার নেবার পর কেউ মাসিক ভিত্তিতে আবার কেউ প্রতি সপ্তাহে ধার শোধ করার চেষ্টা করে।
ব্যবসা বৈধ না অবৈধ সেটা পরের কথা কিন্তু প্রকাশ্যে সুদের কারবারই রমরমে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন সেটা বলাই বাহুল্য। এদের হাত থেকে পালিয়ে বাঁচার উপায় নেই এদের একটা চক্র আছে তারা নানা কৌশলে টাকা উদ্ধারের জন্য চাপ সৃষ্টি করে ঋণগ্রহীতার উপরে।
আরো পড়ুন – ব্যাংকে প্রচুর ঋণ আছে? মৃত্যুর পর কি ব্যাংক ঋণগ্রহীতার সমস্ত লোন মুকুব করে দেয়?
সমাজে মান সম্মান তো নষ্ট হয় এমনকি তাকে নানাভাবে অপমান করে এতটাই মানসিক চাপ দেয়া হয় অনেক ক্ষেত্রে ঋণগ্রহীতা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন এমন ঘটনাও দেখা গেছে। যতদিন কবিতা কোন মহিলা হন সে ক্ষেত্রে চাপ সৃষ্টি করার পদ্ধতি অনেক বেশি করে অশ্লীলতার মাত্রা ছাড়িয়ে যায়।
আমরা কোন বিতর্কের কথা বলছি না কিন্তু চাইলে এদের চক্র বন্ধ করা সম্ভব তার জন্য দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা। সমাজতাত্বিকরা মনে করেন সুস্থ সমাজ গড়ে তুলতে গেলে মানসিকতার পরিবর্তন দরকার আর সেটা এই যুগে দাড়িয়ে কার্যত অসম্ভব। কারণ এখনকার মানুষের জীবনে নীতি বলে কিছুই নেই সবটাই দুর্নীতিতে ভরা।
আরো পড়ুন – আপনি কি অলস? জীবনে পরিশ্রম করার জন্য কি সত্যিই কোনও অনুপ্রেরণার প্রয়োজন হয়?
বাইরে থেকে পোশাক আশাকে হয়তো কাবুলিওয়ালার মতো বেশ ধরে আজকের দিনের সুদখোর মানুষেরা থাকেন না ।কিন্তু তাদের আচার ব্যবহারে এবং মুখের ভাষায় আপনি স্পষ্টই বুঝতে পারবেন তারা কী ধরনের মানুষ। এদের কাছে আপনজনেরাও গুরুত্বহীন যখন টাকার প্রশ্ন আসে।
হয়তো অনেকেই পড়াশোনা করেছেন ডিগ্রী রয়েছে কিন্তু ব্যবহারে, আচারে, মুখের ভাষায় সেটা প্রকাশ পায় না ।কার্যত মূর্খের মতোই আচরণ করেন তারা।
আরো পড়ুন – কোন খাবার সত্যিই ভালো আর কোনটা খারাপ! জেনে নিন
মানুষের অসহায় তার সুযোগ নিয়ে যারা নিজেদের আখের বোঝাতে পছন্দ করেন তাদেরকে ভালো মানুষ বলা যায় কিনা সেটা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন রয়েই গেল!