Breaking Bharat: লোকনাথ বাবার জন্মস্থান নিয়ে দ্বিমত আছে, আপনিও কি এই বিষয়ে একমত?‘রণে বনে জলে জঙ্গলে যখনই বিপদে পড়িবে, আমাকে স্মরণ করিও, আমিই রক্ষা করিব।’ শ্রীশ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী
মানুষ বড় কাঁদছে, তাই মানুষ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াবার দরকার আছে সবারই। কিন্তু সবাই ভালো হওয়ার আশা নিয়ে সবটা ছেড়ে বসে আছে ঈশ্বরের উপর। ভগবানও তাই নানা অবতারের বেশে কখনো বা নিজেই এসে, বিপদ থেকে পরিত্রাণ দিচ্ছেন ভক্তবৃন্দকে। ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস অটুট হচ্ছে মানুষের।
লোকনাথ বাবার জন্মস্থান নিয়ে দ্বিমত:
প্রতিবেদনের শিরোনামে যার কথা এবং শুরুতেই যে বাণী, তাঁর সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নেই। তিনি ‘শ্রীশ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী‘ (Sri Baba Loknath Brahmachari ) । দিশাযারা দুর্বল অসহিষ্ণু মানুষের মনকে শান্ত করতে পারে তার এই একটা কথাই। তিনি মানুষের পরম আশ্রয়। কিন্তু তাঁর নিজের জীবনের ইতিহাস দেখলে শুরুতেই দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যান তাঁর ভক্তরা ।
কারণ তাদের আরাধ্য দেবতার জন্ম নিয়ে রয়েছে এক বিতর্ক বলেই মনে করা হয়। যদিও ধর্ম বা আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের উপর কোন রকমের আঘাত হানা বা সমালোচনা করা আমাদের উদ্দেশ্য নয় । নিছকই আলোচনার মাধ্যমে বাস্তব তথ্য আপনাদের সামনে তুলে দেওয়াই এই প্রতিবেদনের একমাত্র উদ্দেশ্য।
সকলের কাছে একান্ত আপন লোকনাথ বাবা জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকল ভক্তকে রক্ষা করার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন বলেই বিশ্বাস মানুষের। শ্রীকৃষ্ণের জন্ম তিথিতে অর্থাৎ জন্মাষ্টমিতেই লোকনাথ বাবার জন্ম বলে ধরা হয়। সাল আনুমানিক ১৭৩০ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ আগস্ট , বাংলার ১১৩৭ বঙ্গাব্দের ১৮ ভাদ্র।
তিনি উত্তর ২৪ পরগনার কচুয়া নামের একটি গ্রামে অত্যন্ত দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন বলে জানা যায়। আবার অপর একটি মত বলে তৎকালীন যশোর জেলা আর বর্তমানের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার বারাসাত মহকুমার চৌরশী চাকলা নামের এক গ্রামে লোকনাথ জন্মগ্রহণ করেন।
অবশ্য এক্ষেত্রেও সময়কাল একই ধরা হয় । তাঁর বাবার নাম ছিল রামনারায়ণ ও মাকমলা দেবী। লোকনাথ ছিলেন পরিবারের চতুর্থ সন্তান। সাংসারিক জীবনের বন্ধনে বেঁধে স্নেহের আঁচলে মা কমলা দেবী তাঁকে রাখতে পারেন নি। তাই যখন ছেলে সন্ন্যাস গ্রহণ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ , তখন তার উপনয়ন দিয়ে পাশের গ্রামের ভগবান গঙ্গোপাধ্যায়ের হতেই সব দায়িত্বভার সঁপে দেন তিনি।
আরো পড়ুন – বিশ্বের সবথেকে শিক্ষিত ব্যক্তি কে? তিনি কুড়িবার স্নাতক হয়েছেন ভাবতে পারেন?
১১ বছর বয়সেই অজানা জীবনের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেন লোকনাথ সঙ্গী হন বাল্যবন্ধু বেনীমাধব। গুরুর নির্দেশ মতো চলতে থাকে কঠিন যোগসাধনা। হিমালয়ের বরফাকৃত নির্জন স্থানে দিনের পর দিন কঠোর তপস্যা এবং সাধনার পরে এক দিন বাবা লোকনাথ ব্রহ্মদর্শন করেন এবং সিদ্ধিলাভ হয় তাঁর। হিমালয়ের কোলে অনেক বছর সাধনা করার জন্য অনেকেই তাকে যোগী রূপেও কল্পনা করে থাকেন।
আরো পড়ুন – পুজোর অনুষঙ্গ আরতি, কিন্তু দেবী বিগ্রহ বা ছবির সামনে ঠিক কোন কারণের জন্য আরতী করা হয়?
গুরু এবং দুই শিষ্য মিলে বিভিন্ন ধর্ম কথা জানার উদ্দেশ্যে পৃথিবীর নানা স্থান পরিভ্রমণ করেন। মুসলমানদের তীর্থস্থান মক্কা ও মদিনাতে গিয়েও জ্ঞান লাভ করে তাঁরা । পরবর্তীকালে তিনি বারদী গ্রামে এসে থিতু হন। এই সময় তার অলৌকিক মহাজাগতিক কাজকর্মের জন্য তিনি “বারদীর ব্রহ্মচারী লোকনাথ” হিসেবে পরিচিতি পান।
আরো পড়ুন – কী করে একটা গোটা গ্রাম রাতের অন্ধকারে গায়েব হয়ে যেতে পারে?
তাঁকে নিয়ে অনেক কিংবদন্তি আছে। তিনি যখন তখন দেহত্যাগ করতে পারতেন বা অন্যের মনে প্রবেশ করতে পারতেন বলেও বিশ্বাস করা হয়। তাঁর পুজোয় প্রথাগত কোনো দীক্ষা, প্রার্থনা, মন্ত্র, আচার-উপাচার দেখা যায় না, তিনি অল্পতেই সন্তুষ্ট।
আরো পড়ুন – একবার নয় বছরে দুবার হোলি উৎসব? দেশের মধ্যেই ঘটে এমন ঘটনা জানেন কি?
লোকনাথ বাবার পুজোর উপকরণ খুবই সামান্য বলেই মনে করেন তার ভক্তরা। তার আশ্বাস বাণী আজও লোকনাথ ভক্তদের কাছে পরম আস্থা-বিশ্বাস আর ভরসার জায়গা। তারা মনে করেন বিপদে পড়লেই রক্ষা করিবেন লোকনাথ বাবা।