Breaking Bharat: পদ্মনাভস্বামী মন্দিরে যাব পুজো দিতে কিন্তু সেখানেও বিধি নিষেধ! বিশেষ পোশাক? এই মন্দিরে (Padmanabhaswamy Temple) প্রবেশ করতে গেলে মহিলাদের শাড়ি পরা বাধ্যতামূলক। স্কার্ট, জিন্স, চুরিদার বা অন্য কোনও পোশাকে এই মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি পান না। নিয়ম রয়েছে পুরুষদের ক্ষেত্রেও। কেন?
কথায় আছে ভক্তের ভগবান। ভগবান তো নিজের লোকের মতো। তিনি বড়ই আপন যার কাছে মন খুলে সবটা বলা যায়। ঈশ্বর অন্তর্যামী সব জানেন, তবুও মন্দিরে গিয়ে তাকে নিজেদের কথা বলতে না পারলে শান্তি পাই না আমরা। ভারতবর্ষ মন্দিরের দেশ। হিন্দুদের পবিত্র তীর্থক্ষেত্র। এদেশের আনাচকানাচে কয়েক হাজার মন্দির রয়েছে। সেখানকার বেশিরভাগের নিয়ম রীতিই প্রায় এক। ফুল, বেলপাতা, মিষ্টি, ফল, দুধ দিয়েই ঈশ্বরের আরাধনা করা হয় এখানে।
উপোস করে শরীর নির্মল করে পুজো দেওয়ার চল রয়েছে এই সব মন্দিরে। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ ভক্ত মন্দিরে ঈশ্বরের আরাধনার উদ্দেশ্যে যাতায়াত করেন। এই সব প্রাচীন রীতি যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এই মন্দিরগুলিতে। যে দেশে দেব-দেবী, পুজো পার্বণ, নিয়ম নিষ্ঠা রীতিমতো সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে সেই দেশেরই কিছু মন্দিরে এমন সব নিয়ম রীতি চালু রয়েছে যে তাক লেগে যায়।
ভাবতে পারেন এইসময় দাঁড়িয়েও এমন কিছু নিয়ম আছে যেগুলোকে অনেক সময় সমাজের বেড়াজাল বলে মনে হয়। আমাদের এই প্রতিবেদনে প্রচলিত কোনো বিশ্বাসী আমরা আঘাত করতে চাই না। আজ আপনাদের নিয়ে যাব দক্ষিণ ভারতে। এমন এক মন্দিরে প্রবেশ করব যেখানে যেতে গেলে জিন্স স্কার্ট এসব করতে পারবেন না আপনি।
কি ভাবছেন এটাও সম্ভব? এইতো শুরু, মন্দিরের কঠোর নিয়ম সম্পর্কে জানলে অনেক ধারনাই বদলে যাবে আপনার। কেরালার রাজধানী তিরুবনন্তপুরমের শ্রী পদ্মনাভস্বামী মন্দির (Sree Padmanabhaswamy Temple)। পদ্মনাভস্বামী হলেন ত্রাভাঙ্কোরের রাজপরিবারের কুলদেবতা।
পদ্মনাভস্বামী মন্দির দর্শন (Sree Padmanabhaswamy Temple):
মালয়ালম ভাষায় তিরুবনন্তপুরম শব্দটির অর্থ ভগবান অনন্তের শহর। আর ভগবান অনন্ত বলতে বোঝায় পদ্মনাভস্বামী মন্দিরের দেবতাকে। কেরালার সবচেয়ে দর্শণীয় স্থানগুলির মধ্যে অন্যতম এই পদ্মনাভস্বামী মন্দির। সারা বছর প্রচুর সংখ্যক পর্যটক এই মন্দির দর্শনে যান।
তবে মন্দির দর্শন হলেও মন্দিরের ভিতরে প্রবেশের (Entry inside the temple) অনুমতি সকলে পান না। আর অনুমতি পেলেও মন্দির প্রবেশের নিয়ম বেশ কঠোর। মন্দিরের গঠন শৈলী সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। মন্দিরে রয়েছে ছয়টি খিলান। এগুলিতে কয়েক বিলিয়ন মূল্যের ধনরত্ন রয়েছে বলে জানা যায়।
আরো পড়ুন- Kadaknath chicken : কড়কনাথ মুরগি চাষ করেই লাখোপতি? এই মুরগি চাষে রয়েছে মোটা লাভ!
ধনরত্নের মধ্যে রয়েছে সোনার গয়না, সোনার মূর্তি, সোনার-রুপোর মুকুট, সিংহাসন, হীরা, চুনী, পান্না এবং অন্যান্য মূল্যবান রত্ন পাথর। মন্দিরের স্থাপত্যে চেরা এবং দ্রাবিড় নকশার সংমিশ্রণ ছাড়াও রয়েছে একটি আকর্ষণীয় সোনার গোপুরা। সব থেকে বেশি আকর্ষণীয় এই মন্দিরের নিয়ম।
কেরালার এই মন্দিরে জিন্স-স্কার্ট সব নিষিদ্ধ:
এই মন্দিরে প্রবেশ করতে গেলে মহিলাদের শাড়ি পরা বাধ্যতামূলক। স্কার্ট, জিন্স, চুরিদার বা অন্য কোনও পোশাকে এই মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি পান না। নিয়ম রয়েছে পুরুষদের ক্ষেত্রেও। যে কোনও পোশাকে পুরুষরাও মন্দিরে প্রবেশ করতে পারেন না। মন্দিরে প্রবেশ করতে হয় ধুতি পরে।
আরো পড়ুন- Ice Cream : আইসক্রিম খেতে ভালোবাসেন? আহা! কী করে,কোথা থেকে এল আইসস্ক্রীম ?
গায়ে জড়াতে হয় সাদা চাদর। সেখানকার মানুষেরএই পোশাককে বলেন ভেস্তি এবং অঙ্গবস্ত্র। এখানেও শেষ নয় অপেক্ষায় আছে আরো বিস্ময়কর তথ্য। জানেন অভারতীয় বা বিদেশিরা মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি পান না। এমনকি বিবাহসূত্রে ভারতীয় হলেও কোনও বিদেশি মন্দিরে ঢুকতে পারেন না।
আরো পড়ুন- Raghu Dakat : অত্যাচারী জমিদার-মহাজনদের ত্রাস, চিনুন গরিবের রবিনহুড রঘু ডাকাতকে!
এমনকি শাড়ি পরে মন্দিরে প্রবেশ করলেও বিদেশিকে হিন্দু হওয়ার শংসাপত্র দেখাতে হয়। ১০০ বা ২০০ বছর আগের থেকে এই নিয়ম চলে আসছে এমনটা কিন্তু নয়। শিকড় অনেকটা গভীরে। বিগত প্রায় পাঁচ বছর ধরেই মন্দিরের এই নিয়ম চলে আসছে।
ভগবান মানুষের বিশ্বাসে আছেন। আর এই বিশ্বাস নিয়ে প্রচলিত নানা মতবাদ আছে। আমরা কারুর বিশ্বাসকে অমর্যাদা করছি না। শুধু ঘটনা গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরছি যাতে আপনিও নানা বৈচিত্রে ভরা দেশের নানা প্রান্তের খুঁটিনাটি জানতে পারেন Breaking ভারতের মাধ্যমে। আমরা ভাবনায় অন্যরকম।