Breaking Bharat: স্লিপ প্যারালাইসিস রোগটার সম্পর্কে জানা আছে? নিজের অজান্তে আপনিও এই রোগের শিকার নন তো? স্লিপ প্যারালাইসিস কেন হয়? স্লিপ প্যারালাইসিস রোগীর চিকিৎসা? প্যারালাইসিস বলতে কি বুঝায়? স্লিপ প্যারালাইসিস হলে কি চোখ খোলা থাকে?
সারাদিনের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের পর রাত্রিবেলা শান্তিতে ঘুমোনো প্রত্যেকেরই একটা বেসিক ইচ্ছে। কিন্তু হঠাৎ ঘুমের মধ্যে এমন কিছু অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে হয় যেটা সম্পর্কে হয়তো খুব সহজে অন্য কাউকে বলা যায় না। ধরুন আপনি ঘুমিয়ে আছেন কিন্তু মনে হল কেউ যেন আপনার গলাটা চেপে ধরেছে, আপনি চাইলেও নড়াচড়া করতে পারছেন না (Sleep paralysis treatments)।
আপনি চিৎকার করছেন কিন্তু কেউ আপনার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছে না। এরম অবস্থা হলে হঠাৎ করে ঘুম থেকে জেগে উঠে ভয়ের চোটে শরীর দিয়ে হিমশীতল স্রোত বয়ে যায় অনেকের। অনেকে আবার বিষয়টিকে অশরীরীর প্রভাব বলেও মনে করেন। কিন্তু এটা আসলে একটা রোগ, যার নাম হল স্লিপ প্যারালাইসিস।
হতেই পারে রাতে ঘুমের ঘোরে কেউ যেন বুকের উপরে বসে আপনার গলা টিপে দিতে চাইছে এরকম অনুভূতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন আপনি। চিকিৎসকেরা কিন্তু বলছেন এটা আসলেই প্যারালাইসিস এর লক্ষণ। তবে এই পক্ষাঘাত হয় ঘুমের মধ্যে। স্লিপ প্যারালাইসিস হলে কিছু সময়ের জন্য সেই ব্যক্তি নড়াচড়া করা বা কথা বলার সব ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন।
এটা আসলে স্নায়ুজনিত সমস্যা। গভীর ঘুম আর ঘুম থেকে ওঠা এই দুই অবস্থার মধ্যবর্তী সময়ে এই ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। বিজ্ঞানের ভাষায় ঘুমের ওই পর্যায়টি হল র্যাপিড আই মুভমেন্ট-রেম। আসলে রেম হল ঘুমের এমন একটি পর্যায় যখন মস্তিষ্ক খুব সক্রিয় থাকে।
চিকিৎসা বিজ্ঞান বলে সাধারণত এই পর্যায়ে মানুষ স্বপ্ন দেখে । এই সময় শরীরের আর কোনও পেশি কাজ করে না তাই মস্তিষ্ক সচল থাকলেও নিজেকে অসাড় বলে মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। স্লিপ প্যারালাইসিসে যে কোনো বয়সী মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন।
আরো পড়ুন – আপনি কি ‘ফিলোফোবিয়া’ রোগে আক্রান্ত? প্রেম করতে ভয় পাচ্ছেন?
অনেকেই জানতে চান এই রোগের লক্ষণ প্রসঙ্গে। আসলে ঘুমের মধ্যে যে রোগ হচ্ছে তার আলাদা করে কোন লক্ষণ কি আর জেগে থাকা অবস্থায় পাওয়া সম্ভব? আর একজন মানুষ যখন ঘুমিয়ে আছেন তিনি ঘুমের মধ্যে কী চিন্তা করছেন সেটা তো তার পাশে জেগে বসে থেকেও অন্যজন মানুষের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়।
আরো পড়ুন – বিয়ের পর বউয়ের সঙ্গে নিত্যদিনের অশান্তি? স্বামী স্ত্রীর ঝগড়া দূর করার উপায়
তবে কিছু সমীক্ষা এবং গবেষণা করে দেখা গেছে যে পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবের কারণে এমন ঘটনা ঘটে থাকে। হেরিডিটি বা বংশগত কারণেও এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যাদের ধরুন সোশ্যাল অ্যাঙ্কজাইটি বা প্যানিক ডিসঅর্ডার বা বাইপোলার ডিজঅর্ডারের মতো মানসিক সমস্যা আছে তারা স্লিপ প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হতে পারেন।
আরো পড়ুন – আপনার পরিবারের সদস্য কি গার্হস্থ্য নির্যাতনের শিকার? বাড়ির মহিলাদের উপর শারীরিক নিগ্রহ?
এরকম অবস্থার মধ্যে দিয়ে গেলে ধূমপান আর মদ্যপান সবার আগে বন্ধ করুন। আপনি চিকিৎসকের কাছেই সমস্যা নিয়ে গেলে তিনি সবার আগে আপনাকে পরামর্শ দেবেন পর্যাপ্ত ঘুমের জন্য। সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় অন্তত সাত থেকে আট ঘন্টা নিশ্চিন্তে ঘুম দরকার। সারাদিন তো একাধিক চিন্তাভাবনার মধ্যেই থাকবেন।
তাই যখন চোখ বন্ধ করে ঘুমোবেন তখনও সেই চিন্তার জগতে মা থাকে প্রবেশ করানোর কোন প্রয়োজন আছে কি? নার্ভ যদি দুর্বল হয় তাহলে এরকম অনেক সমস্যা হতে পারে। তাই সতর্ক থাকুন আর প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।