Breaking Bharat – Kongthong : যেন জীবন পাখির মতো! কথা হয় সুরের ভাষায়, একে অন্যকে ডাকা হয় শিসের সুরে গানের সুরে। চিনে নেওয়া একে অন্যের নাম, চেনেন এই গ্রামকে? কেনই বা অদ্ভুত ভাবে একে অন্যেকে ডাকাডাকি, জানেন কি?
মানুষের সঙ্গে অন্য প্রাণীর প্রধান কী পার্থক্য বলুন তো? মানুষ কথা বলতে পারে, একে অন্যকে ডাক দিয়ে নিজেদের কথা বলতে শুনতে পারে। কিন্তু আপনাদের আজ এমন এক গ্রামের কথা বলব যেখানে একে অন্যকে ডাকতে হলে কথার সাহাজ্যকে এড়িয়ে যাওয়া হয়। মানে অন্যভাবে সম্ভাষণ করা হয়
একটু শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এটাই সত্যি। মেঘালয়ের কংথং (Kongthong) গ্রামের এই ব্যতিক্রমী চিন্তাই আজ আমাদের নজরে। আসল নাম জিঙ্গরই লবেই। এই গ্রামের মানুষ সরল সহজ জীবন যাত্রায় বিশ্বাসী। আধুনিক পৃথিবীর জাঁকজমক এই গ্রামবাসীদের কাছে প্রায় অধরা (Singing village of India Meghalaya- Kongthong)।
কংথং গ্রামের বাসিন্দারা (Residents of Kongthong village):
এরা পুরোপুরি মাটির মানুষ। আসলে নাম একজনের জীবনে কতটা প্রয়োজনীয়, তা নিয়ে ভাবতে চান না কংথং গ্রামের বাসিন্দারা (Residents of Kongthong village)। এটা তো সত্যি যে সূর্যের নাম বদলে মোমবাতি রাখলে সূর্য কি আর আলো দেওয়া ছেড়ে দেবে? না তা অবশ্যই নয়। এই গ্রামের মানুষজনও বোধহয় এমনটাই ভাবেন ।
তাই নামে নয় সুরে ডাকেন একে অন্যকে। জিঙ্গরই লবেই মানে হল সুরের গাঁ মানে musical villege, সেখানে নামকরণের পদ্ধতিটাই আলাদা। মন ভোলানো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর মেঘালয়ের এই পাহাড়িয়া গ্রাম জিঙ্গরই লবেই এর বাসিন্দারা যুগ যুগ ধরে কিছু বিশ্বাসকে সঙ্গে নিয়ে ঐতিহ্যকে বহন করে চলেছে। এখানে সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে মা ঘুমপাড়ানি গান শোনান।
কংথং গ্রামটি বেশ জনপ্রিয় (Kongthong ):
একেক মায়ের গলায় একেক রকম সুর। আর সেই সুর যেন নামের জন্ম দেয়। প্রত্যেক মা আলাদা আলাদা সুর সৃষ্টি করে সন্তানকে শোনান। সেই সুরেই সন্তানের প্রকৃত পরিচয় গড়ে তোলেন গ্রামের বাসিন্দারা। কংথং গ্রামটি বিশ্বের পর্যটন মানচিত্রে বেশ জনপ্রিয়, আর সেখানে এর পরিচিতি হুইসলিং ভিলেজ নামে।
আরো পড়ুন- shimla manali tour : পাহাড় ঘুরতে যাচ্ছেন? পকেট সামলে, আরও দামি সিমলা আর মানালির হোটেল!
অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সাজান এই গ্রাম শিলং থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। গ্রামে খুব কম মানুষ থাকেন, খুব বেশি হলে ৬৫০ জন। এখানে সবার দুটো নাম। একটা প্রতিদিনের ডাকনাম আর অন্যটা সেই মায়ের দেওয়া সুরেলা সম্ভাষণ। খাসি পাহাড়ের পূর্ব প্রান্তে এই গ্রাম অবস্থিত।
আরো পড়ুন- Poppy Seeds : ভালোবাসার পোস্ত আসলে চক্রান্ত? বাঙালিকে নাকি জোর করে খাওয়ানো হয়েছিল পোস্ত?
মধু সংগ্রহ করে জীবন ধারন গ্রামবাসীদের। । শিলং থেকে গাড়ি ভাড়া করে সহজেই চলে যেতে পারবেন এই গ্রামে। মধু এই গ্রামের অত্যন্ত বিক্রয়যোগ্য পণ্য এবং শুধু দেশে নয়,আন্তর্জাতিক স্তরেও এই কাজ স্বীকৃতি এনে দিয়েছে এই গ্রামকে। সবাই নিজেরা নির্ভরশীল।
আরো পড়ুন- Best friend’s : অদ্ভুত প্রেম এসেছে জীবনে? বেস্ট ফ্রেন্ডের প্রেমিকের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন কখনো?
ভাবা যায় আজকের যান্ত্রিক যুগেও এখনও মানুষ এই সহজ সরল অনুভব আর ভাবনাকে নিয়ে বাঁচেন । এই গ্রামে ঘুরতে গেলে দুর্গাপুজোর পর পর জাতরা শুরু করুন। আর আপনার অভিজ্ঞতার কথা জানান আমাদেরও। তবে দারুণ কিছু সুর বাঁধতে ভুলবেন না যেন (Kongthong, popularly called the Singing Village, is a village)।