Breaking Bharat: জানার বা শেখার কোন শেষ নেই তাই না? কিন্তু আপনাকে যদি জিজ্ঞেস করি বিশ্বের সবথেকে শিক্ষিত ব্যক্তি কে? আপনি কি চেনেন তাকে?
ছোট থেকেই মন দিয়ে লেখাপড়া করে বড় শিক্ষিত হওয়ার কথা বাবা-মা ছেলেমেয়েদের বলে থাকেন। যদিও শিক্ষা শব্দটা নিয়ে চিরকাল একটা বড় মতভেদ আছে। আসলেই বিক্রি অর্জন করে শিক্ষা লাভ আর প্রকৃত শিক্ষার মাঝে একটা সূক্ষ্ম ফারাক আছে, যেটা পরবর্তীতে সমাজ জীবনে চোখে পড়ে।
কিন্তু এটা তো সত্যি কথা যে ন্যূনতম ডিগ্রী বা পড়াশুনা না থাকলে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু ঠিক কতটা পড়াশোনা করতে পারলে সব থেকে বেশি শিক্ষিত আখ্যা পাওয়া যায় সে সম্পর্কে হয়তো আমাদের কোনও আইডিয়াই নেই। কিন্তু যিনি এই বিষয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ আজ তাকে নিয়েই প্রতিবেদন, নাম ‘শ্রীকান্ত জিচকর‘ (shrikant jichkar all degree list)।
তিনি কুড়িবার স্নাতক হয়েছেন ভাবতে পারেন?
ছোটবেলা থেকে পড়াশোনা করি বড় হয়ে ডিগ্রী নিয়ে স্নাতক হয়ে চাকরি বা ব্যবসা। তারপর সাংসারিক জীবন শুরু করা – এভাবেই চলে সাধারণ মানুষের ভাবনার দিনলিপি। কিন্তু আজকে যে ব্যক্তির কথা আপনাকে বলছি তিনি এইসবের অনেক ঊর্ধ্বে। একজন মানুষ ঠিক কতবার গ্রাজুয়েট বা স্নাতক বা মাস্টার ডিগ্রী পেতে পারে বলে আপনার মনে হয়?
আচ্ছা ছাড়ুন অতো হিসেব করে কাজ নেই কারন হিসেব তো মিলবে না তাই সরাসরি এই শ্রীকান্তর স্নাতকোত্তর হবার সংখ্যাটা বলে দেয়া যাক। তিনি কুড়িবার স্নাতক হয়েছেন ভাবতে পারেন? একজন মানুষ এক জীবনে এতবার ফেল করতে পারেন না উনি যতবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী অর্জন করেছেন নানা বিষয় নিয়ে।
এমনি এমনি কি আর তাকে বিশ্বের সবথেকে শিক্ষিত ব্যক্তি এই নাম দিয়ে আখ্যায়িত করা হয়? মন আর মাথা ঠান্ডা রাখুন আর এই ব্যক্তির ক্যারিয়ার গ্রাফের দিকে একবার চোখ দিয়ে নিন।
শ্রীকান্ত জিচকর ১৯৫৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর নাগপুরে একটি মারাঠি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ক্লাস টুয়েলভ এর পরীক্ষায় পাশ করার পর নাগপুরের একটি মেডিক্যাল কলেজ থেকে প্রথমে ডাক্তারি পড়াশোনা অর্থাৎ MBBS ডিগ্রী অর্জন করেন। পরে এই বিষয়ে উচ্চ শিক্ষিত হয়ে MD করেন।
আরো পড়ুন – যেখানে ‘মা’ ডাকের আলাদা টান আছে, সেখানে সম্বোধন কি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়?
মেডিকেল সাইন্স নিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি আগ্রহ থাকার কারণে শ্রীকান্ত আইন নিয়েও পড়াশোনা শুরু করে দেন। আইনেও স্নাতক হয় মাস্টার ডিগ্রীর দিকে মন দেন। সহজেই তাতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর আরো পড়াশোনা করার জেদ চেপে যায়। উচ্চশিক্ষিত হওয়ার এক নেশায় তিনি একের পর এক ডিগ্রি লাভ করে গেছেন সেটা বলাই বাহুল্য।
গুণী মানুষকে কি কেউ আটকাতে পারে?
পরবর্তী লক্ষ্য ছিল বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। সেখানেও গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করা। এইসবের মাঝে সংস্কৃতে ডক্টরেট অফ লিটারেচার (ডি-লিট)-ও পান শ্রীকান্ত। এবার শিক্ষা জগতে মোটামুটি বাকি যে সমস্ত বিভাগ রয়েছে এই যেমন ধরুন সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, ইতিহাস, ইংরেজি সাহিত্য, দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, মনস্তত্ত্ববিদ্যাতেও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন শ্রীকান্ত। এখানেও শেষ হয়নি, আরো আছে।
আরো পড়ুন – পুজোর অনুষঙ্গ আরতি, কিন্তু দেবী বিগ্রহ বা ছবির সামনে ঠিক কোন কারণের জন্য আরতী করা হয়?
পড়াশুনা করতে করতে ইচ্ছে জাগলো এবার তিনি পুলিশ হবেন। ফের চুটিয়ে পড়াশোনা করে আইপিএস এ উত্তীর্ণ হওয়া। ১৯৭৮-৮০, দু’বছর পুলিশের চাকরি করার পর তাঁর আবার নতুন এক নেশা। ১৯৮০-তে বসলেন ভারতের সবথেকে গৌরবময় এবং কঠিন সরকারি চাকরির পরীক্ষাতে যার নাম ‘ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস । গুণী মানুষকে কি কেউ আটকাতে পারে?
আরো পড়ুন – পিকনিক ছাড়া শীতকাল? কিন্তু বাঙালির চড়ুইভাতির চর্চা বিশ্বজুড়ে, এটা কেমন করে সম্ভব?
পাশ করে গেলেন এই পরীক্ষাতেও। এরপর সকল রাজনীতিতে প্রবেশ। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন শ্রীকান্ত। ফটোগ্রাফি থেকে শুরু করে জ্যোতিষ শাস্ত্র সবেতেই ছিল অগাধ জ্ঞান। তাকে নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছে ইউনেস্কো। কিন্তু জীবনটা বড় হল , তবে লম্বা নয়। তাই ২০০৪ এ পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তার।