Breaking Bharat: হাইওয়ের পাশে গজিয়ে ওঠা দোকানগুলিতে জিনিসের দাম বেশি কেন নেওয়া হয় জানেন? এটা কী করে সম্ভব বলতে পারেন?
এই পৃথিবীতে সর্বত্রই ব্যবসার একটা ট্রেন্ড নতুন করে গজিয়ে উঠেছে। নিজের পায়ে দাঁড়ানো আর স্বাবলম্বী হওয়ার মধ্যে খারাপ কিছুই নেই। এক কথায় বলা যেতে পারে যে এটাই তো প্রত্যেকের লক্ষ্য হওয়া উচিত। আজকাল বিভিন্ন সংস্থা থেকে লোন পাওয়া যায়, যার জেরে প্রত্যেকেই নিদেন পক্ষে একটা চায়ের দোকান দিয়ে হলেও ব্যবসা শুরু করতে চান।
সেই কারণেই দেখবেন প্রতিটি পাড়ার মোড়ে মোড়ে একাধিক দোকান গজিয়ে উঠেছে। এবার ঘর ছেড়ে দুপা বাইরে বেরোলে অদ্ভুত জিনিস চোখে পড়বে আপনার। দেখবেন এক এক দোকানে একেক ধরনের দামি একই জিনিস বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে যারা লং ড্রাইভে যান বা সড়কপথে ‘হাইওয়ে ধরে যাতায়াত করেন‘ তারা এই বিষয়টা সম্পর্কে অবগত। এটা কী করে সম্ভব বলতে পারেন?
প্রতিটা জিনিসের একটা নিজস্ব দাম থাকে তার সঙ্গে চাহিদা মত মার্কেট প্রাইস বা বাজারদর তৈরি হয়। ধরুন আপনি এক কাপ চা খাবেন। সেটার একটা ন্যূনতম দাম ধরে নিচ্ছি ৫ টাকা। এবার দেখবেন হাইওয়ের পাশে যে বিভিন্ন দোকানগুলো থাকে সেখানে সাধারণ দোকানের থেকে বেশি দাম নেয়া হয় অর্থাৎ কোথাও দেখবেন ৬ টাকা অথবা ৮ টাকা।
এইভাবে দাম নেওয়া যায়, এটা কি আইনসিদ্ধ?
ভালো চা দামি চা এইসব বলে ১০ টাকাও দাম নিয়ে নেন কেউ কেউ। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কী করে এইভাবে দাম নেওয়া যায়, এটা কি আইনসিদ্ধ? এই উত্তরে আপনাকে জানাই যে না এই বিষয়টি আইনত সিদ্ধ নয় এবং এটা অপরাধ। কোনভাবেই এম আর পি হিসেবে যে দাম লেখা থাকে তার বেশি আপনি নিতে পারেন না।
কিন্তু দেখবেন জলের বোতলের দাম যদি ১০ টাকা হয় এইসব জায়গায় বারো টাকা অর্থাৎ ২ টাকা বাড়িয়ে নেওয়া হয়।। আপনি যদি জানতে চান কেন এই দু টাকা তারা বলবেন এটাই দাম। এরপর আপনি আরও একধাপ এগিয়ে বলতে পারেন এমআরপি তো এটা বলছে না। তারা বলবেন পছন্দ হলে নেবেন না হলে নেবেন না। কী রকম যেন একটা একছত্র দাদাগিরি বলতে পারেন।
আরো পড়ুন – বেশি দাম দিয়ে হলেও ব্র্যান্ডের জিনিস ব্যবহার করতে ভালোবাসেন?
অনেকেই আছেন যারা এই ধরনের ঘটনার প্রতিবাদ করতে চান কিন্তু তাকে বাকিদের কোন সায় মেলেনা। শান্তিপ্রিয় ঝঞ্ঝাট মধ্যবিত্ত মানুষ তাই চুপচাপ টাকা মিটিয়ে জিনিসটি কিনে চলে আসেন। আর এই ভাবেই বেশি দাম নিয়ে ব্যবসা করার প্রবণতা বেড়েই চলেছে। এখানে রাজনৈতিক মধুদ একেবারে নেই সেটা কিন্তু নয়।
আরো পড়ুন – মুখ দিয়ে লালা ঝরা কি অসুখের ইঙ্গিত? কী বলছেন চিকিৎসকেরা?
কারণ বিভিন্ন এলাকার তথাকথিত দাদারা তোলা তুলতে আসেন এই দোকানদারের কাছে। এরপর দোকানদাররা এইসব অতিরিক্ত টাকাগুলো থেকেই তাদের হাতে টাকা দেন যাতে নির্বিঘ্নে ব্যবসা করতে পারেন। মানে, এক কথায় দুর্নীতির শিকড় এত গভীরে এত দিক দিয়ে বিস্তারিত যে সেটা কে কাটতে গেলে গোটা পৃথিবীটাকেই ধ্বংস করে ফেলতে হবে আপনাকে।
আরো পড়ুন – বাড়ির বয়স্কদের প্রশ্নে আপনি কি জর্জরিত? যখন তখন স্যালারি স্ট্রাকচার নিয়ে প্রশ্ন উঠে বুঝি?
সাধারণত হাইওয়ে ধারে যখন গাড়ি থামে, বোঝাই যায় যে গাড়িটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য থেমেছে এবং এখানে থেমেছে মানে প্যাসেঞ্জারের বা যাত্রীর নিশ্চয়ই খুব প্রয়োজন আছে জিনিসটা বলেই তিনি এসেছেন। সুতরাং তার কাছ থেকে যা হোক দাম চেয়ে নেওয়া যায় বলে মনে করেন বিক্রেতারা।
যেহেতু কম সময়ের জন্য গাড়ি দাড়ায় বা অনেকটা দূর পর্যন্ত দোকান মেলেনা তাই সে কারণে বেশি দাম দিয়ে হলেও জিনিস কিনে ফেলেন যাত্রীরা। আর এই সবকিছুর কারণে MRP যাই বলুক না কেন নিজেদের পছন্দের দাম বসিয়ে জিনিস বিক্রির চল, চলে আসছে।
আরো পড়ুন – ভাত প্রেমী মানুষ কি পাতে কাঁচা পেঁয়াজ রাখতে পছন্দ করেন? অভ্যাস টা ভাল না খারাপ?
আজকালকার দিনে কিন্তু কনজিউমার ফোরাম অনেক বেশি সক্রিয় তাই চাইলে আপনি প্রতিবাদ করতেই পারেন। সেক্ষেত্রে ঘটনাস্থলে ঝামেলা না বাধিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে পরবর্তীতে বাড়ি ফিরে কনজিউমার ফোরামের রিপোর্ট করুন। মনে রাখবেন সজাগ ক্রেতাই সচেতন ক্রেতা।