Breaking Bharat: Selfitis: সেলফি তুলতে ভালোবাসেন? আপনি কি জানেন অজান্তেই মানসিক সমস্যা হচ্ছে আপনার? দিনে নিয়মিত তিনবারের বেশি সেলফি তুললে, ডাক্তারের পরামর্শ নিন অবিলম্বে
নিজেকে সবাই ভালবাসেন আর তাই নিজেকে ভালো আর সুন্দর দেখতে পছন্দ করেন সবাই। সেই মতো ইদানিং কালে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকা আগের থেকে বেড়েছে বটে। তার কারণ হিসেবে অবশ্যই বলতে হয় মুঠো ফোনের কথা। বর্তমানে সেলফি (Selfie) তোলে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব। যাই হোক না কেন, ছবি তুলতেই হবে তাই না।
বারবার ছবি তুলতে ইচ্ছে করছে? তৈরি হচ্ছে কিন্তু মানসিক রোগ!
আর সেই ছবি শুধু তুললেই হবে না, তাকে শুধু মাত্র ফোনের গ্যালারিতে রাখলে হবে না। ছবি তোলা হবে তারপর তাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড না করলে চলে? ভাইরাল হওয়া আজকাল একটা ট্রেন্ড বটে আর সেটা থেকে তৈরি হচ্ছে মানসিক সমস্যার (mental problems)। ডাক্তার বলছেন এই যে বারবার ছবি তুলতে ইচ্ছে করছে আপনার এটা থেকে তৈরি হচ্ছে মানসিক রোগ।
গবেষকরা এর নাম দিয়েছেন’সেলফাইটিস’ (Selfitis)। আজ এই রোগ নিয়েই বলবো আপনাকে। আপনি কি জানেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এই নিয়ে সার্ভে শুরু হয়েছে।টেক-জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান গুগলের এক জরিপে জানা গেছে, সোস্যাল মিডিয়া পোস্ট করা সেলফির মধ্যে ৩৭% আপলোড করে থাকে ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সের ছেলেমেয়েরা, অর্থাৎ টিনেজাররা।
সেলফাইটিস আক্রান্তদের মধ্যে টিনেজারদের প্রাধান্য:
গুগলের পর্যালোচনায় দেখা যায়, উঠতি বয়সী ছেলেমেয়েদের মধ্যে মোবাইল ফোনের অ্যাপসে যারা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ৮ থেকে ১০ ঘন্টা কাটায় তারা গড়ে ১৪টি সেলফি পোস্ট করে থাকে। সাধারণ দৃষ্টিতে ব্যাপারটা সহজ মনে হলেও কঠিন বিজ্ঞানসম্মত কারণ লুকিয়ে আছে এর পেছনে। ভাবলেও অবাক হতে হয় যে আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন (এপিএ) এটাও জানিয়েছে যে, ক্রনিক সেলফাইটিস আক্রান্তদের মধ্যে টিনেজারদের প্রাধান্য দেখা যায়।
সেলফাইটিস নামের মানসিক রোগের চিকিৎসা (Selfitis is a mental illness) পদ্ধতির কথা সঠিকভাবে জানা যায় না। এটা যেন প্রতিদিনের চেনা অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। পড়তে, লিখতে, হাঁটতে, খেলতে, রান্না করতে, কাজ করতে গিয়ে সেলফি তোলা (taking a selfie) তো একটা নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে আজকাল।
অনেকে প্রতিদিন সেলফি আপলোড করে ফেসবুকের সামনে বসে থাকেন কজন লাইক এবং কমেন্ট করে তা গুণতে। কে কী কমেন্ট করল তা দেখতে, আর রিপ্লাই দিতে কেটে যায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কাছের মানুষদের কেউ কমেন্ট না করলে তো তার ওপর অভিমান, এমনকি ঝগড়াও হয়।
আপনি ক্রনিক সেলফাইটিস রোগে আক্রান্ত?
অনেকটা মোবাইল গেমে আসক্ত হওয়ার মতো এই সেলফি ম্যানিয়া। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, যারা খুব বেশি সেলফি তোলে তারা সামাজিক ব্যবস্থায় ব্যক্তিত্বহীনতার পরিচয় প্রকাশ করে। তারা আরও বলেন, সেলফিতে আক্রান্তদের (Affected by selfies) বেশিরভাগই কর্মজীবনে ও ব্যক্তিজীবনে ব্যর্থতার পরিচয় দেয় এবং সাধারণদের চেয়ে তাদের কনফিডেন্ট লেভেলও কম থাকে। তাই তারা অনেক সময় হতাশা বা মেন্টাল ডিপ্রেসনে আক্রান্ত হন।
আরো পড়ুন- Pregnancy symptoms : গর্ভধারণের লক্ষণ কি? অনিয়মিত পিরিয়ডস মানেই আপনি গর্ভবতী?
জীবনে চারপাশে প্রতিমুহূর্তে নানা ঘটনা ঘটতে থাকে। ছবি তুলতে গেলে যে সময়টা ক্যামেরার দিকে তাকাতে হয় সেই সময় চারপাশে তাকাতে পারলে আখেরে মন ভালো থাকে। ছবি তুলে তুলে এমন অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে যে সারাক্ষণ মোবাইলে নিজের নানা ছবি দেখতে ইচ্ছে হয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে সেই সময়কার নানা অনুভূতি আর অভিব্যক্তি।
আরো পড়ুন- Farmer : কৃষকের যন্ত্রনা বোঝেন? ফসল উৎপাদন করে আমাদের মুখে অন্ন তুলে দিচ্ছেন কৃষকরা !
বিজ্ঞানের ভাষায় দিনে অন্তত তিনটি সেলফি তোলা এবং তিনটি ছবিই সোশাল মিডিয়াতে পোস্ট করাকে বলা হয় আকিউট সেলফাইটিস। এর পরের স্টেজ হল ক্রনিক রোগ।নিয়ন্ত্রণহীন তাড়না বা আকাঙ্ক্ষা থেকে বিরামহীনভাবে যখন তখন সেলফি তোলা। দিনে ছয়বারের বেশি সোশাল মিডিয়াতে পোস্ট করা।
আরো পড়ুন- Daughter: মেয়েরাই বাবাদের নয়ন মনি, কেন কন্যা সন্তান বাবাদের বড়ই প্রিয়?
এরকম ঘটনা ঘটলে বুঝতে হবে আপনি ক্রনিক সেলফাইটিস রোগে আক্রান্ত (Suffering from selfitis)। একটু সুস্থভাবে বাঁচার চেষ্টা করুন আর মোবাইলকে কাজের সময় ছাড়া একটু দূরেই রাখুন তাহলে কাছে আসবে জীবনের সেরা মুহূর্তগুলো।