Breaking Bharat: এই জগতের সবচেয়ে সুন্দর অনুভূতি কী বলুন দেখি? ঠিকই ধরেছেন প্রেমে পড়ার অনুভূতি। এ যেন এক স্বর্গীয় মুহূর্ত যখন নিজেকে বলতে পারেন, Yes I am in Love. সেই প্রথম প্রেম যা থেকে যায় আজীবন। সেই প্রেম পূর্ণতা পাক বা না পাক, সামাজিক বন্ধনে আবদ্ধ হোক বা না হোক, স্বীকৃতি পাক বা না পাক – যেটা চিরকাল থেকে যায় তা হল একে অন্যের প্রতি টান।
সাহিত্যরসে সমৃদ্ধ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস “দেবদাস”:
প্রকৃত প্রেমের সার্থকতা তাঁর অপূর্ণতায়, যদি এই তত্ত্বে বিশ্বাসী হোন আপনি, তাহলে আপনার বাড়ির বুক শেলফে সবার আগে থাকবে রবি ঠাকুরের ” শেষের কবিতা” আর শরৎচন্দ্রের কালজয়ী উপন্যাস “দেবদাস” (Sarat Chandra Chattopadhyay’s novel Devdas)। প্রতিটি প্রেমিক মনের প্রেম জীবনের কোনও না কোনও সময়ের একান্ত সঙ্গী এই দেবদাস।
বাংলার সাহিত্য আকাশে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নাম চিরস্মরণীয়:
তাঁর লেখা দেবদাস (Devdas) যেন সাধারণ মানুষের ঘরের চরিত্র। বড়লোক বাড়ির ছেলে আর গরীব ঘরের মেয়ের ছোটবেলার সম্পর্ক। যেমনটা দেব আর তাঁর পারো মানে পার্বতীর সম্পর্ক তেমনটা ভাবেন না তাঁদের পরিবার। ছোটবেলার প্রেম বড় হয়ে আরও গভীর হয়। পার্বতীর মত সেই প্রেমের ঘনত্ব বোঝেন নি দেবদাস (Devdas is a Bengali romance novel)।
তাই বড় বাড়ির যৌথ পরিবারের ছেলের কাছে জীবনটা ছিল খেলার মতোই। খেলার সাথীর হাতে হাত রেখে খেলতে খেলতে, ছেলেবেলা কখন যে কেটে গেছে সেটা বোঝে নি দেবদাস। পার্বতী বিয়ের বয়সী হলে দেব এর পরিবার তাঁকে মেনে নেয় না। পার্বতীর এক বয়স্ক বরের সাথে গাঁটছড়া বাঁধা হয়ে যায়। এবার প্রেমিকার বিরহে প্রেমের গুরুত্ব বোঝে দেবদাস। প্রিয়তমাকে অন্যের হতে দেখে নানা আসক্তিতে নিজেকে জর্জরিত করে সে। তবুও ভোলে না শৈশবের স্মৃতি, যৌবনের প্রেমের সম্পর্ক।
অন্যদিকে নতুন জীবন শুরু করতে গিয়েও সেই পিছুটানেই আটকে থাকে পার্বতীর মন। আসলে দেবদাস যে তাঁর প্রথম প্রেমের উপলব্ধি, ভালোবাসার স্পর্শ। যাকে সে মনে মনে নিজের সর্বস্ব দিতে চেয়েছে, আজ সেই জায়গায় অন্য কাউকে বসিয়ে নিজেকে তাঁর মতো করে গড়ে তোলা প্রায় অসম্ভব পার্বতীর কাছে। প্রেমিক প্রেমিকার জীবনের গতি শ্লথ হয়ে যায় ব্যর্থ প্রেমের স্মৃতিচারণায়।
আরো পড়ুন- Lipstick: মেয়েরা লিপস্টিক লাগান শুধুই কি গ্ল্যামারের জন্য ? নাকি এর পিছনে আছে অন্য কারণ ?
সময় যায়, প্রেম গভীর হয় দূরত্বের অতলে। দেবদাসের জীবনে আসে আরেক নারী, সমাজের চোখে যার স্থান বড্ড নিচুতে। ভদ্র বাড়ির মেয়েদের সাথে এক আসনে তাকে বসানো যায় না। তবু দেবদাস তাকে সম্মান দেয়, তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষী হয়ে ওঠে, কিন্তু চন্দ্রমুখীর কাঙ্ক্ষিত অভিপ্রায় সে পূর্ণ করতে অক্ষম।
আরো পড়ুন- Rachna Banerjee : রচনা ব্যানার্জি কেমন ছিলেন ছোটবেলায়? জনপ্রিয় দিদির জীবনের নানা কথা!
সে যে দেহে মনে একজনেরই, পার্বতী ছাড়া দেবদাস অসম্পূর্ণ (Devdas is incomplete without Parvati)। জটিল রোগে আক্রান্ত হয় দেব, মৃত্যুশয্যায় একবার হাত বাড়িয়ে ধরতে চায় পার্বতীর হাত – হয় না, সেটা আর হয় না। শেষ হয় দেবদাসের গল্প, সাথে পার্বতী আর চন্দ্রমুখীরও। চোখে জল আসে পাঠকের।
আরো পড়ুন-পুতুল নাচ মানেই নস্টালজিয়া! মনে পড়ে গ্রামবাংলার সেই পুতুলনাচের সাতকাহন?
সিনেমার পর্দায় এই গল্প বারবার সুপারহিটের তকমা দিয়েছে পরিচালকদের। কৃতিত্ব গল্পের স্রষ্টার। দেবদাস যে প্রেমের গল্প। না পাওয়াতেই যে চাওয়ার পূর্ণতা , বুঝিয়ে দেয় “দেবদাস”।