Breaking Bharat: ‘অ্যান্টিবায়োটিক (Antibiotics) ওষুধের বিক্রি’ এবং ব্যবহার, এতে আপনার ক্ষতি হচ্ছে না তো? প্রেসক্রিপশন ছাড়াই ‘মুঠো মুঠো অ্যান্টিবায়োটিক’ খাচ্ছেন? সাবধান! কত বড় বিপদ ডেকে আনছেন তা নিজেও জানেন না।
রোগ হলেই মুঠো মুঠো করে ওষুধ খাওয়া আজকাল যেন সকলের অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে। কিছু হোক বা না হোক আগে ওষুধ খেতে হবে। প্রাথমিকভাবে রোগ মুক্তি ঘটাতে গিয়ে ভবিষ্যতের জন্য কত বড় বিপদ তৈরি হচ্ছে তা কেউ আগে থেকে বুঝতে পারেন না।
কিন্তু যখন বোঝা যায় তখন অনেকটা দেরি হয়ে যায়। হাজার চেষ্টা করেও মানুষটাকে বাঁচানো যায় না। তখন দেখবেন এই আফসোসটা চিরকালের জন্য আপনার সঙ্গী হয়ে থেকে যাবে। মুঠো মুঠো ওষুধ যারা খাচ্ছেন তাদের যতটা দোষ, যারা বিক্রি করছেন প্রেসক্রিপশন ছাড়াই তাদের দোষ কিন্তু ততটাই। এই ব্যাপারে সরকারের উচিত আরো কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই মুঠো মুঠো অ্যান্টিবায়োটিক:
এই বিষয়ে দুটো রোগের কথা সবার আগে বলতে হয়। এক সর্দি কাশি আর দুই গ্যাস অম্বল। ঠান্ডা লাগা আর জ্বরের ওষুধ খাওয়া এবং মুঠো মুঠো এন্টাসিড খাবার প্রবণতা ভারতীয়দের মধ্যে সবথেকে বেশি। আর এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলছেন বড় বিপদ ঘনিয়ে আসছে দেশের বুকে। বিভিন্ন সমীক্ষা এবং গবেষণায় দেখা গেছে অ্যাজিথ্রোমাইসিনের ব্যবহার সবথেকে বেশি। মুখে মুখে নাম বললেই আজকাল দোকানে মিলে ‘অ্যান্টিবায়োটিক‘।
অল্প বিদ্যা ভয়ংকরীর মত গুটিকয়েক নাম জেনে দোকান থেকে তাকিয়ে নেই নিজের এবং প্রিয়জনদের ওপর প্রয়োগ করার প্রবণতা ভারতীয়দের সবথেকে বেশি। করোনাকালে প্রায় ৫০০ কোটিরও বেশি এই ওষুধ খাওয়া হয়েছে এবং সেটা শুধুমাত্র ভারতবর্ষে, ভাবতে পারেন?
‘অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ নিষিদ্ধ’ করেছিল ভারত সরকার?
গবেষকরা জানিয়েছেন, যে-সমস্ত অ্যান্টিবায়োটিক ভারতীয়রা খেয়ে থাকেন, খোঁজ নিয়ে নিয়ে দেখা গেছে তার অধিকাংশই নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনপ্রাপ্ত নয়। তাহলেই ভাবুন মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা করার প্রবণতা কতটা বেড়েছে আর এই জল কতদূর পর্যন্ত করিয়েছে।
আরো পড়ুন – Subarnarekha River : যে নদীর সঙ্গে জুড়ে আছে ‘সোনার সম্পর্ক’! আজও রহস্যে মোড়া সুবর্ণরেখা?
অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের এই যে এত বিক্রি এবং ব্যবহার তার ঘোর বিরোধী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা WHO। আজ থেকে প্রায় সাত বছর আগে ২০১৫ সালে ১৬টিরও বেশি ‘অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ নিষিদ্ধ করেছিল‘ ভারত সরকার।
এই ‘নিষিদ্ধ অ্যান্টিবায়োটিকই‘ সবথেকে বেশি ব্যবহার করে:
কিন্তু আক্ষেপের বিষয় সরকারের উদাসীনতায় যার অধিকাংশ ওষুধই এখনও বাজারে রমরমিয়ে বিক্রি হয়ে চলেছে। ভাবলে অবাক লাগে, সেফলোস্পোরিন, পেনিসিলিন, ম্যাক্রলাইডস- এই তিন প্রকার ‘নিষিদ্ধ অ্যান্টিবায়োটিকই‘ সবথেকে বেশি পরিমাণে ব্যবহার করে চলেছেন ভারতীয়রা।
পরিসংখ্যানগত দিক দিয়ে বিচার করলে চোখ কপালে উঠবে আপনার। ২০২০ সালে ভারতে শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকের বিক্রি বেড়ে হয়েছে ৭৬.৮ %, যা আগের দু’বছরের তুলনায় প্রায় ৪ % বেশি।
আরো পড়ুন – Heart Problems: হার্টের সমস্যা? ‘কালমেঘ পাতার রস’ হার্টের সমস্যার জন্য দ্রুত কার্যকরী জানেন?
তাহলে ধারণা করতে পারছেন কত দ্রুত ব্যাপক হারে ‘বিক্রি বাড়ছে অ্যান্টিবায়োটিকের’ (Sales of antibiotics are increasing)। আজকাল তো একটা পাড়ায় এক হাত দূরে দূরে রয়েছে মেডিসিনের দোকান। কটা দোকানের লাইসেন্স আর দক্ষতা পরীক্ষা করতে পারেন আপনি?
আরো পড়ুন – First Love: ‘প্রথম প্রেমের প্রথম স্মৃতি’ ভুলতে পারছেন না? ‘নিজের প্রেমকে ভুলে যাওয়া’ আদৌ কি সম্ভব?
ডাক্তারের ভিজিট কিংবা ভোগান্তি এড়াতে অনেকেই কিছু হলে চট করে সেই সব ওষুধের দোকানে গিয়ে বলে কয়ে অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খেতেই পছন্দ করেন। ফলাফল যে কতটা মারাত্মক তা চিন্তাও করতে পারবেন না।
আরো পড়ুন – Itching problem: গোপন অঙ্গের আশেপাশে চুলকানির সমস্যা! এখানে ওখানে চুলকাচ্ছে? তাহলে উপায়
অ্যান্টিবায়োটিকে অশনি সংকেত রয়েছে বলে সতর্ক করছেন বিজ্ঞানীরা, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। যদি মানুষ সচেতন না হন তাহলে এর থেকে কত বড় বিপদ গ্রাস করবে গোটা দেশকে তা এখন স্বপ্নেও ভাবতে পারছেন না আপনি। আর নিজের প্রিয় জনকে একবার যদি হারিয়ে ফেলেন বিশ্বাস করুন শত চেষ্টা করেও তাকে আর ফিরিয়ে আনা যায় না।