Breaking Bharat News Desk: রাশিয়া ও ইউক্রেনের (Russia-Ukraine) মধ্যে পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে। এবার একপ্রকার সরাসরি যুদ্ধের জন্য উসকানি দিল রাশিয়া (Russia)। সোমবার ভ্লাদিমির পুতিন যে ঘোষণা করেছেন, তাতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ইউক্রেনের (Ukraine) দুই এলাকা দনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অর্থাৎ ডনবাসকে আয়ত্তে আনতে চাইছে রাশিয়া, সরাসরি সেই কথা জানিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। কিন্তু দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ হলে আখেড়ে কী লাভ রাশিয়ার? পাশাপাশি আরও একটি প্রশ্নও উঠছে, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সঙ্ঘাতের (Conflict between Russia and Ukraine) কারণই বা কী?
ইউক্রেনকে প্রকাশ্যে যুদ্ধের আহ্বান করছে রাশিয়া (Russia is openly calling for war on Ukraine)? চলতি সপ্তাহের সোমবার রাশিয়ার তরফে ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin) যে ঘোষণা করেছেন,তাতে এমনটাই মনে করছে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে মস্কো যে ইতিমধ্যেই লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন করেছে। যার অর্থ রাশিয়া যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত বলেই মনে করা হচ্ছিল। এই ব্যাপারে আগে সতর্কও করেছিল আমেরিকা। এবার সেই আশঙ্কাই যেন সত্যি হতে চলেছে। আগ বাড়িয়ে ডনবাসকে স্বীকৃতি দিতে চাওয়ার অর্থ হল, রাশিয়া ইউক্রেন সীমান্তে ঢোকার পথ পরিষ্কার করে রাখল।
পৃথিবীতে আসছে প্রলয়? ভুলের মাশুল দিতে এবার প্রলয়ের সম্মুখীন হতে হবে পৃথিবীকে? কি বলছে নাসা?
কী নিয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেনের এই সমস্যা ?(What is the problem with Russia and Ukraine?) সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতি আজ নতুন করে তৈরি হয়নি। প্রায় ৮ বছর আগের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই দুই দেশের মধ্যে এই সঙ্ঘাতের সূত্রপাত। আসলে ২০১৪ সালে ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণ থেকে নিজেদের মুক্ত বলে দাবি করে দনেৎস্ক এবং লুহানস্ক। এর নেপথ্যেও রয়েছে অন্য কারণ। ইউক্রেনের ওই দুই এলাকায় যে বিচ্ছিনতাবাদীরা নিয়ন্ত্রণ চালায়, তাদের পরোক্ষভাবে সাহায্য করছে রাশিয়া। এই অভিযোগ আগেই তুলেছিল ইউক্রেন। শুধু তা-ই নয়, দনেৎস্ক এবং লুহানস্কের বাসিন্দাদের টিকাকরণ ও পাসপোর্টের বিষয়েও রাশিয়া সহায়তা করেছে বলে অভিযোগ। এই নিয়েই দুই দেশের মধ্যে লড়াই। যদিও ২০১৪ সালে ইউক্রেনের থেকে নিজেদের মুক্ত বলে দাবি করার পর ডনবাস নিয়ে মিনস্ক শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এমনকী, এই চুক্তি নিয়ে অনেকেই আশাবাদী ছিলেন যে, অবশেষে ডনবাস সমস্যার সুরাহা হতে চলেছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সুরাহা তো দূরের কথা সেই চুক্তি অমান্যেরও আশঙ্কা করছে রাজনৈতিক মহল। তাদের মতে, ইউক্রেনের অধীনে থেকেও সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন উপভোগ করবে ডনবাস, এমনটাই বলা হয়েছিল চুক্তিতে। এদিক থেকে বলতে গেলে, রাশিয়া যদি ডনবাসকে আয়ত্তে নিতে চায়, তার অর্থ তারাও চুক্তি লঙ্ঘন করছে।
এই প্রসঙ্গে রাশিয়ার পার্লামেন্টের সদস্য তথা দনেৎস্কের প্রাক্তন রাজনৈতিক নেতা আলেকজান্ডার বোরোদাই বলেন, রাশিয়া যদি ডনবাসকে ইউক্রেনের সরকারের নিয়ন্ত্রণ-মুক্ত পৃথক অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তাহলে সেখানকার বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারাও ডনবাসকে ইউক্রেনের সেনাদের নিয়ন্ত্রণ মুক্ত করতে রাশিয়ার পাশে দাঁড়াবে। আর তার জেরে যুদ্ধ হতে পারে দু’দেশের মধ্যে।
অন্যদিকে পশ্চিমী দেশগুলি রাশিয়াকে আগেই সতর্ক করেছে। যেকোনও আক্রমণাত্মক কর্মকাণ্ডে মদত দিলে তার খেসারত দিতে হবে রাশিয়াকে। রাশিয়ার শিয়রে মেঘ হওয়া সত্ত্বেও কেন ভ্লাদিমির পুতিন সোমবার ডনবাস অধিকারের কথা শোনালেন? এতে কী লাভ হবে রাশিয়ার? আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, ডনবাসকে আয়ত্তে নিলে রাশিয়ার দখলে আসবে একটি বন্দর। যার মাধ্যমে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সুবিধা হবে রাশিয়ার। সবমিলিয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেনের উত্তপ্ত পরিস্থিতির মূলে রয়েছে জটিল অঙ্ক। শেষপর্যন্ত জল কোনদিকে গড়ায়, তা-ই দেখার।