Breaking Bharat: বিয়ে মানে সাত জন্মের বন্ধন কিন্তু বিয়ের অনুষ্ঠানে একাধিক নিয়ম পালন আজও কতটা প্রাসঙ্গিক? কন্যা দানের রীতি! কিন্তু সন্তান কি দানের বস্তু? চুল দিয়ে বরের পা ধুইয়ে দেওয়া, বরের গায়ের হলুদের ছোঁয়া দেয়া হয় কনেকে!
বিয়ের পর কনের নাম পরিবর্তনের একটা ব্যাপার থাকে, বিয়েতে মায়েদের ব্রাত্য ধরা হয়। কিন্তু সেটা কেন হবে? আবার অন্যদিকে বিয়ের মঙ্গল চিহ্ন হিসেবে শুধুমাত্র মেয়েকেই কিছু স্মৃতি বা চিহ্ন বয়ে বেড়াতে হবে কেন? ছোটবেলা থেকে মা বাবার পরিচয় বড় হওয়া মেয়েটা বিয়ে হলো মানে সবকিছু ছেড়ে দিতে হবে কেন?
কিন্তু আজকাল সময় বদলেছে। কিছু নিয়মের পরিবর্তন প্রয়োজন বলে মনে করে আধুনিক সমাজ (rules in the wedding ceremony)।
বিয়ের অনুষ্ঠানে একাধিক নিয়ম পালন :
এই প্রতিবেদনে বিশেষ কিছু নিয়মের কথা উল্লেখ করবো আমরা যেগুলো বিয়ের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। যদিও এই নিয়ম গুলোর সঙ্গে বিশ্বাস ভরসা আবেগ জড়িয়ে আছে। তাই কোনোভাবেই কারোর ভাবাবেগকে আমরা আঘাত করতে চাই না।
একটা মানুষ আরেকটা মানুষের সঙ্গে সম্পর্কের বন্ধনে আবদ্ধ হবেন। তাকে ঘিরে অনেক আশা অনেক আনন্দ, অনেক ভালোলাগার টুকরো টুকরো মুহূর্তে তৈরি হয় বিবাহ নামক অনুষ্ঠানে। বিয়ে মানে অনেকেই বলেন ঝক্কি সামলানোর মতো একটা ব্যাপার।
কন্যা দানের রীতি! কিন্তু সন্তান কি দানের বস্তু?
কারণ, বিয়ের অনুষ্ঠানে একাধিক নিয়ম পালন করতে করতে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে যায়। শুধুমাত্র বিয়ের দিন নয় বিয়ের আগে থেকে বিয়ের পরে পর্যন্ত একরাশ নিয়ম রয়েছে। সেই জন্যই বাঙালির বিয়ের একটা আলাদা আকর্ষণ রয়েছে প্রতিমুহূর্তে।
হিন্দু ধর্মে বিয়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে কন্যা দানের রীতি (The tradition of donating daughters)। আজকের যুগে এই বিষয়টি বন্ধ হওয়া দরকার বলে অনেকেই মনে করেন। বিয়েতে কনেকে তার বাবা বা মামা দান করেন। কিন্তু সন্তান কি দানের বস্তু? একজন মানুষ তাকে ছোট থেকে বড় করলো যে বাবা-মা, এক পলকে তাকে অন্যের হাতে দান করা যায়?
তাহলে চুল দিয়ে বরের পা ধুইয়ে দেওয়া:
নারীবাদ আজকাল যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে এসবের কোন প্রয়োজন নেই। আরো একটা নিয়মের কথা বলা দরকার। তাহলে চুল দিয়ে বরের পা ধুইয়ে দেওয়া। ২০২২ সালে দাঁড়িয়ে এই নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকেই। একেবারে যুক্তিহীন এই নিয়ম দাবি প্রগতিশীল মানসিকতার।
আরো পড়ুন – নিজের পোষা কুকুর-বেড়াল নিয়ে বেড়াতে গেলে, এবার আপনাকে হাজতবাস করতে হবে!
কখনও স্বয়ং পাত্রী, কখনও তাঁর বাবা-মা আবার কখনও তাঁর বোনকে বরের পা ধুয়ে দিতে হয়, এভাবেই রীতি চলে আসছে যুগের পর যুগ ধরে। আজকালকার দিনে অবশ্য বর বা পাত্র নিজেই এই নিয়ম মানতে চান না।
বরের গায়ের হলুদের ছোঁয়া দেয়া হয় কনেকে:
বিয়ের একটা গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম হল গায়ে হলুদ। বরের গায়ের হলুদের ছোঁয়া দেয়া হয় কনেকে। কিন্তু এটা কতটা স্বাস্থ্যকর, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ডাক্তাররা। এখানেই শেষ নয়, বিয়ের পর কনের নাম পরিবর্তনের একটা ব্যাপার থাকে। সেটা কিন্তু আজকের দিনের মেয়েরা মানে না। পদবী একটা অস্তিত্বের পরিচয়। ছোটবেলা থেকে মা বাবার পরিচয় বড় হওয়া মেয়েটা বিয়ে হলো মানে সবকিছু ছেড়ে দিতে হবে কেন?
আরো পড়ুন – কলেজের প্রোফেসর বা সুন্দরী ম্যাডামের প্রেমে পড়েছেন? এখানে কি প্রেমে পড়া বারণ?
যুক্তিবাদী মন প্রশ্ন তোলে , শিক্ষিত সমাজ বলে মানুষ তার নিজের পরিচয় নিজেই ঠিক করবে। সেই কারণেই পদবী পরিবর্তন করাটা একটা মেয়ের নিজস্ব চয়েস। সে চাইলে এটা করতে পারে আবার নাও করতে পারে, কিন্তু জোর করা যাবে না।
বিয়েতে মায়েদের ব্রাত্য ধরা হয়। কিন্তু সেটা কেন হবে?
বিয়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেক নিয়ম আর অনেকগুলো বিশ্বাস। এবার যুগ যুগ ধরে যেটা চলে আসছে সেটা ঠিক এ কথা বলা যায় না। মাথায় রাখতে হবে ভাবাবেগের যেমন গুরুত্ব আছে, ঠিক তেমনি ভিত্তি থাকা দরকার কোন ঘটনা ঘটার ক্ষেত্রে। বিয়েতে মায়েদের ব্রাত্য ধরা হয়। কিন্তু সেটা কেন হবে?
আরো পড়ুন – কামাক্ষ্যা মন্দিরে পুরুষ প্রবেশ নিষিদ্ধ! জানেন এই নিয়ম আছে ভারতের একাধিক মন্দিরে
মা তার সন্তানের শুভদিনে তার পাশে থাকবেন না এটা আজকাল আর কেউ সেভাবে মানতে চান না। মেয়ের দোষ থাকলে গাছের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার রীতি আগেকার দিনে ছিল। এখনো এটা মানা হয় না বলা ভুল তবে আজকাল সমাজ অনেকটা এগিয়ে গেছে।
মহিলা পুরোহিত দিয়েও পূজো থেকে বিয়ে করানো হয়:
এখন তো মহিলা পুরোহিত দিয়েও পূজো থেকে বিয়ে সব অনুষ্ঠানই করানো হয়। বিয়েতে একটা নতুন সম্পর্ক একটা বন্ধন এবং দুজনের মধ্যে অনেকটা বোঝাপড়া। সেক্ষেত্রে বিয়ের মঙ্গল চিহ্ন হিসেবে শুধুমাত্র মেয়েকেই কিছু স্মৃতি বা চিহ্ন বয়ে বেড়াতে হবে কেন?
আরো পড়ুন – airplane : আপনি কি বিমান চড়তে ভালবাসেন? যদি মাঝপথে চালক ঘুমিয়ে পড়ে?
দিন বদলাচ্ছে সমাজ বদলাচ্ছে বদ লাগছে চারপাশ। কাউকে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয় তবে কিছু জিনিস যুক্তি দিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে এ যুগের যুবসমাজ। তার কথাই তুলে ধরলাম আমরা।