Breaking Bharat: শিরোনাম দেখে নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন আজ এক বিরক্তিকর প্রজাতিকে নিয়ে ইন্টারেস্টিং কথাবার্তা। আজকের বিষয় মশা। প্রতিমুহূর্তে তাদেরকে সাথে নিয়ে আমাদের সংসার। এরকম কোনও পরিবার নেই যেখানে এনারা, সেই পরিবারের অংশ নন। বড়লোক, গরিব লোক, মধ্যবিত্ত কোনও বাছবিচার করে না মশা। একবার কেরামতি দেখাবার সুযোগ পেলেই হল। ব্যস খেলা শুরু। আর এদের টার্গেট হলে আপনার আর পরিত্রাণ নেই। এদের তো এই পৃথিবী থেকে মুছে যাওয়াই উচিত, তাই না?
পৃথিবীতে মশা না থাকলে কী হত?
আচ্ছা, একবার ভাবুন তো একটা মশাও যদি না থাকে তাহলে প্রতি বছর ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া – এইসব রোগ আর হবেই না। ফলে কত লোক বেঁচে যাবেন! শুধু কি তাই, মশার কামড়ে যে জ্বালা-যন্ত্রণা বিরক্তি হয়, সেগুলো থেকেও তো নিস্তার মিলবে।পাশাপাশি, জানেন কি, সম্প্রতি প্রকাশিত এক সমীক্ষার প্রতিবেদন বলছে সারা বিশ্বে প্রতি বছর ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে প্রায় ২৪ কোটি ৭০ লাখ মানুষ?
এই রোগ থেকে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ১ দশ লাখ। দাঁড়ান দাঁড়ান, এখানেই শেষ নয় আরও আছে তালিকাটা বড় লম্বা। ডেঙ্গু,চিকুনগুনিয়া এবং ইয়েলো ফিবারকে ভুলে গেলে চলবে? কিন্তু সবথেকে ইন্টারেস্টিং বিষয়টা হলো সব মশা কিন্তু কামড়ায় না। বিশ্বাস হচ্ছে না তো ? কিন্তু প্রাণিবিজ্ঞান বলছে এটাই সত্যি।
মশার দ্বারা কি কোনো উপকার হয়?
সারা বিশ্বে প্রায় ৩৫০০ ধরনের মশার প্রজাতি রয়েছে। আর পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে এদের ভূমিকা খুবই উল্লেখযোগ্য। পৃথিবীতে মশা প্রজাতিটি প্রায় ১০০ মিলিয়ান বছর ধরে বসবাস করছে। এই দীর্ঘ সময় ধরে এরা পরিবেশে খাদ্য-খাদকের ভারসাম্য বজায় রেখে চলেছে। এবার যদি হঠাৎ করে মশা (mosquitoes) বিলুপ্ত হয়ে যায়, তাহলে তার সরাসরি প্রভাব পড়বে আমাদের জীবনে। কীভাবে?
এর সহজ উত্তর হলো যদি খাদ্য এবং খাদকের সম্পর্কটা বিঘ্নিত হয় তাহলে পরিবেশের বাস্তুতন্ত্রে এর প্রভাব পড়বে। এই প্রসঙ্গে আপনি হয়তো বলবেন এর আগে পৃথিবী থেকে বহু প্রজাতির বিলুপ্ত হয়েছে, তাতে কি পৃথিবী ধ্বংস হয়েছে ? না সেটা হয়নি, তবে তার মাশুল দিতে হচ্ছে বৈকি। বেশিদূর যেতে হবে না সামান্য গাছপালা নিয়ে ভাবুন না।
এত যে গাছপালা ধ্বংস করা হচ্ছে, তার হিসেব কি প্রকৃতি নিচ্ছে না আমাদের কাছ থেকে ? ছবি অনেক বিজ্ঞানী এই বিষয়ে একমত যে, অ্যানোফিলিশ মশারা যদি বিলুপ্ত হয়ে যায়, তাহলে পৃথিবীর কোনও ক্ষতি হবে না, বরং মানব জাতির সব দিক থেকে ভালই হবে (Remove mosquitoes from the earth)।
এই পৃথিবী থেকে মশাদের চিহ্ন মুছে গেলে হয়তো উত্তর এবং দক্ষিণ মেরুতে বেশি প্রভাব পড়বে। কারণ পরিসংখ্যান বলছে প্রতি বছর যে পরিমাণ পরিযায়ী পাখিরা এখানে আসে, তাদের মূল খাদ্য হয় মশা। তাই যদি মশাই না থাকে, তাহলে প্রায় ৫০ শতাংশ পরিযায়ী পাখি আর দুই মেরুতে আসবে না। ফলে সেখানকার পরিবেশে আসবে পরিবর্তন।
আরো পড়ুন- Rachna Banerjee : রচনা ব্যানার্জি কেমন ছিলেন ছোটবেলায়? জনপ্রিয় দিদির জীবনের নানা কথা!
শুধু তাই নয়, এখানে ভিন দেশ থেকেও বছরের নানা সময় লক্ষাধিক গবাদি পশু এই অংশে মাইগ্রেট হয়ে থাকে। কামড় থেকে বাঁচতে যে জায়গায় মশার ঝাঁক বেশি থাকে, সে জায়গা এড়িয়ে অন্য পথ বেছে নেয় এই গবাদি প্রাণীরা। এমনটা তারা বহু বছর ধরে করে আসছে। হঠাৎ যদি কোনও এক বছর এই মশার ঝাঁক না থাকে, তাহলে কোন দিকে যেতে হবে, তা তো বুঝতেই পারবে না এই গবাদি পশুরা।
- সারা বিশ্বে প্রায় ৩৫০০ ধরনের মশার প্রজাতি রয়েছে ।
- পৃথিবীতে মশা প্রজাতিটি প্রায় ১০০ মিলিয়ান বছর ধরে বসবাস করছে।
ফলে রাস্তা হারিয়ে হয়তো কাতারে কাতারে মৃত্যু হবে। শুধু কি গবাদিপশু? প্রকৃতিতে মশা না থাকলে মাছও থাকবে না।কারণ মশারা না থাকলে তাদের লার্ভাও থাকবে না। ফলে মাছেদের মূল খাদ্যে টান পড়বে। আর এমনটা হলে শুধু মশারা নয়, খাদ্যের অভাবে একের পর এক মাছেদের প্রজাতিও বিলুপ্ত হতে থাকবে।
আরো পড়ুন- Breast : অল্প বয়সে স্তন ঝুলে পড়লে, আপনি আবেদনময়ী হয়ে উঠবেন কী করে ?
মশাদের লর্ভা খেয়ে বেঁচে থাকা প্রাণীদের সংখ্যা অনেক। এই যেমন ধরুন, পোকা-মাকড়, মাকড়শা, টিকটিকি, ব্যাঙ – এদের সবার মূল খাদ্য হল মশা। তাই মশারা না থাকলে মাছেদের মতো এদেরও হয়তো পৃথিবীর বুকে আর দেখা যাবে না।
আরো পড়ুন- ছেলে বা মেয়েদের গালে টোল পড়লে কি সেক্সি লাগে? এটা কিন্তু জিনগত ত্রুটি, জানেন কি?
পাখিদের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো কমবে প্রত্যাশিত নিয়মেই। যেহেতু আমরা একে অন্যের সাথে পরিবেশগতভাবে জড়িত এবং নির্ভরশীল, তাই একজন না থাকলে প্রকৃতি ও পরিবেশের উপর প্রভাব পড়তে বাধ্য।
আরো পড়ুন- Lipstick: মেয়েরা লিপস্টিক লাগান শুধুই কি গ্ল্যামারের জন্য ? নাকি এর পিছনে আছে অন্য কারণ ?
তাহলে ভেবে দেখুন মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে মশা মেরে কত বড় ভুল করছেন। অবশ্য না মেরে অন্য কোনো উপায় খুঁজে পেলে জানাবেন দয়া করে।