Breaking Bharat: সরীসৃপ বলতে ঠিক কোন প্রাণীকে সব থেকে বেশি ভয় পান আপনি? আপনিও যদি মা মনসার বাহনে যথেষ্ট শ্রদ্ধা রাখেন তাহলে বলি নিজেকে বাচানোর উপায় (Protects from snake attacks)!
প্রতিবেদনের শিরোনামে নিশ্চয়ই বোঝা যাচ্ছে আমরা সাপের কথা বলছি। আসলে ধর্ম মতে এবং পুরাণের হিসেবে দেবী মনসা কেই সর্প দেবী হিসেবে ধরা হয়। শ্রাবণ মাসের সংক্রান্তিতে মনসা পূজো হয় এবং সেখানে মাতৃমূর্তির চারপাশে প্রচুর সাপ তৈরি করা হয়। যাতে ‘মনসার বাহন যে সাপ‘ তা প্রতিষ্ঠিত করা যায়।
সাপের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়?
কিন্তু দেবতার মাহাত্ম্য তো এক জিনিস, আর নিত্যদিন প্রতিমুহূর্তের জীবনে এইসব প্রাণীদের নিয়ে চিন্তা আর এক ব্যাপার। কারণ এই প্রাণীটি অত্যন্ত বিষধর এবং ক্ষতিকর সেটা নতুন করে বলার নেই। একটু এদিক থেকে ওদিক হলে আপনি বিপদের আঁচ টেরও পাবেন না আর মুহূর্তে সব শেষ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু এমন কোন উপায় আছে কি যা অবলম্বন করলে সাপের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়?
সাপ নিয়ে যুগ যুগ ধরে মানুষের মনে কিছু বদ্ধমূল ধারণা আছে। যার কিছুটা ঠিক তবে অনেকটাই ভুল। প্রথমত রাখা দরকার যে সব সাপ বিষাক্ত নয়। হ্যাঁ কিছু কিছু সাপের মারাত্মক বিষ আছে বটে। তবে এখানকার আবহাওয়াতে সাপের যে সংখ্যাধিক্য দেখা যায় তার বেশিরভাগটাই কম বিষ যুক্ত।
সাপের শারীরিক গঠন সম্পর্কে জানতে হবে:
অনেকে মনে করেন সাপের বিন বাজালে সাত নাচতে থাকে যেটা ভুল ধারণা কারণ সাপের কান নেই তাই সে কিছু শুনতে পায় না। এখন আপনি প্রশ্ন করতে পারেন তাহলে সাপ মানুষের বা কোনও প্রাণীর উপস্থিতি টের পায় কী করে? এক্ষেত্রে ‘সাপের শারীরিক গঠন সম্পর্কে‘ জানতে হবে আপনাকে।
কোন প্রাণী বা মানুষ যখন মাটির উপর দিয়ে হেটে চলে যায়, সেখানে যদি সাপ থাকে তখন সাপ তার বুকের নিচে যে খোলস আছে যার রং আলাদা, সেই খোলসের অভ্যন্তরে থাকা স্নায়ুতন্ত্র দ্বারা সেটি অনুভব করতে পারে। সেই স্নায়ুতন্ত্র এতটাই শক্তিশালী যে কত দূরে স্পন্দন হচ্ছে বা আপনি সাপের থেকে কতটা দূরে আছেন সহজেই তা অনুধাবন করা যায়।
কোন অ্যাসিডে সাপ পালায়?
এবার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ কথা কোন অ্যাসিডে সাপ পালায়? এটার কোন উত্তর নেই কারণ কোনো অ্যাসিডেই সাপ পালায় না। আপনাকে মনে রাখতে হবে ‘সাপের ঘ্রাণ শক্তি অত্যন্ত দুর্বল‘। আর অ্যাসিড মানেই তার তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধ যেটা মানুষ বা অন্য প্রাণী অনুভব করতে পারলেও সাপ পারে না।
তাই যারা মনে করেন ‘কার্বলিক অ্যাসিড ছড়িয়ে রাখলে সাপ আসবে না‘ তারা ভুল ধারণা নিয়ে বেঁচে আছেন। ফুলের গন্ধই সাপের নাক পর্যন্ত পৌঁছায় না সেখানে আবার অ্যাসিডের গন্ধ!
আরো পড়ুন – শাকিব খানের ব্যক্তিগত জীবনের বিতর্ক কেন থামছে না? এবার বুবলির সম্পর্কে কী বললেন অপু?
সিনেমা দেখে মানুষের মনে বাধ্য মূল ধারণা যে ‘জোড়ায় থাকা সাপ‘ তার সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে যে মানুষ হত্যা করে তার উপর প্রতিশোধ নিতে আসে। এটা ভুল ধারণা।
কারণ সাপের স্মৃতিশক্তি অত্যন্ত দুর্বল। একটা সাপ মারা যাবার পর সেই স্থানে আরেকটা সাপ দেখা গেলে প্রতিশোধ নিতে আসার ব্যাপার-স্যাপার বলে কিছু থাকেনা। মুখটা কথা হল মেটিংয়ের জন্য সব তার পার্টনারকে খুঁজতে আসে। ‘সাপ দুধ খেতে আসে‘ এটাও ভুল ধারণা কারণ সাপ ব্যাঙ বা পোকা খায়।
আরো পড়ুন – অবশেষে সলমানের ছবিতে গান গাইলেন অরিজিৎ, কিন্তু কেন ৯ বছরের দূরত্ব?
ভুলে ভাববেন না যে ‘বাচ্চা সাপের বিষ থাকে না‘ কারণ সাপের বাচ্চা ছোট হলেও সে সাপ। তাই কুসংস্কার অন্ধবিশ্বাস ভুল ধারণা নয়, সঠিক বিজ্ঞানসম্মত চিন্তাভাবনাকে সামনে রেখে এগিয়ে চলুন ।
সবশেষে বলি, বাড়ি ঘরদোর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। যাতে আলো বাতাস খেলতে পারে সেই রকম ব্যবস্থা রাখুন। কোথাও ময়লা বা আবর্জনা স্তূপীকৃত হতে দেবেন না। কোন গর্ত বা ঝোপঝড়ের দিকে হাত বা পা দেবার কোন প্রয়োজন নেই। আপনি সাপকে বিরক্ত না করলে সাপ আপনাকে বিরক্ত করবে না।