Breaking Bharat: যুদ্ধ করেন সেনারা আর সেই সেনাদের বাঁচালো পায়রা (Pigeon), জানেন কি? বুকে গুলি খেয়ে সংবাদ পৌঁছে দিতে ছুটে চলল কর্তব্যরত পায়রা?
সেই পায়রার সঙ্গেই পরিচয় করবো আজ:
মানুষ তার কর্তব্যের প্রতি অবিচল থাকেন সেটাই করনীয়। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন মানুষ ছাড়া এত উন্নত প্রাণী আর কে আছে যে এভাবে নিজের দায়িত্ব পালন করবে? নিজের পরিবারের দায়িত্ব সামলাতে সন্তানদের প্রতি কর্তব্য করতে অনেক প্রাণীকেই হয়তো দেখা যায়। কিন্তু দেশপ্রেমিক হয়ে ওঠেন এমন নজির কি মানুষ ছাড়া অন্য কোন প্রাণীর আছে? আজ যার কথা বলব সে কিন্তু মানুষ নয় পাখি। বুকে গুলি খেয়ে কীভাবে নিজের শেষ কর্তব্য টুকু পালন করেছিল, সেই পায়রার সঙ্গেই পরিচয় আজ (Pigeons saved the soldiers)।
মানুষ তার কর্তব্যের প্রতি অবিচল থাকেন সেটাই করনীয়। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন মানুষ ছাড়া এত উন্নত প্রাণী আর কে আছে যে এভাবে নিজের দায়িত্ব পালন করবে? নিজের পরিবারের দায়িত্ব সামলাতে সন্তানদের প্রতি কর্তব্য করতে অনেক প্রাণীকেই হয়তো দেখা যায়। কিন্তু দেশপ্রেমিক হয়ে ওঠেন এমন নজির কি মানুষ ছাড়া অন্য কোন প্রাণীর আছে? আজ যার কথা বলব সে কিন্তু মানুষ নয় পাখি। বুকে গুলি খেয়ে কীভাবে নিজের শেষ কর্তব্য টুকু পালন করেছিল, সেই পায়রার সঙ্গেই পরিচয় আজ (Pigeons saved the soldiers)।
এই কাহিনী আজকের নয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার। চারিদিকে শুধুই গুলির আওয়াজ আর বোম পড়ার শব্দে সবাই তটস্থ। এরই মধ্যে একটা জায়গায় আটকে পড়ে আছেন ২০০ জন সেনা। যুদ্ধে গুরুতর যখন তারা, কিন্তু পালাবার সামর্থ নেই। তাহলে উপায়? এই পরিস্থিতিতে পালাবেন কী করে? কে-ই বা আসবে সাহায্য করতে?
যেটা প্রায় অসম্ভব মনে হয়েছিল সেটাই সত্যি করে দিল এক পাখি। বহু অপেক্ষার পর এল সাহায্য। ‘তাঁর’ হাত ধরেই ঐ মানুষগুলো নিজেদের রক্ষা করলেন। তবে সাহায্যকর্তা রক্তমাংসের কোনো মানুষ নন। একটি পায়রা! ঊনবিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকের কথা সবারই মনে আছে। ১৯১৪ থেকে ১৯১৮— বিশ্ব সাক্ষী থাকল ইতিহাসের প্রথম মহাযুদ্ধের।
একদিকে ফ্রান্স-রাশিয়া-ব্রিটেন; অন্যদিকে জার্মানি-অস্ট্রিয়া-ইতালি। আশেপাশে জুড়ে গেল আমেরিকা, সার্বিয়া-সহ অন্যান্য দেশগুলিও। প্রত্যেকে নিজেদের যাবতীয় অস্ত্রের সম্ভার নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ল রণাঙ্গনে।আমেরিকার সৈন্যবাহিনীর সিগনাল ইউনিটের একটা ভাগ তখন ফ্রান্সে। সংকেতের সমস্ত রকম পদ্ধতি ব্যবহার করছেন তাঁরা। সেখানেই যুক্ত হল পায়রাদের দল।
প্রাচীন আমলের চিঠি চালাচালির পদ্ধতিটিকেই অন্যরকমভাবে ব্যবহার করতে চাইলেন আমেরিকান সৈন্যরা। ৬০০ কেরিয়ার পায়রাদের প্রত্যেকেই বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত;(Pigeons are specially trained) আর তাদের মাধ্যমেই তথ্য আদান প্রদানের কাজ করা হত।
আজকের হিরো মানে, সেই সময়কার হিরো এদের মধ্যেই ছিল । সেই ব্ল্যাক চেক কক পায়রার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘শের আমি’। নামের মানে কি বড় সুন্দর। ফ্রান্সেরই একটি শহর ভেরদুনের আশেপাশে বহু গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ পৌঁছে দেওয়ার কাজ করত সে। ১৯১৮ সালের অক্টোবর মাসে সেরকমই একটি কাজে বেরিয়েছিল সে। আমেরিকান ৭৭ ইনফ্যানট্রি ডিভিশন সেই সময় বড়ো বিপদের মুখে পড়েছিল।
আরো পড়ুন- Kota Rani : ভূস্বর্গ কাশ্মীরের মহারানীর নাম জানেন ? জানেন কাশ্মীরের ক্লিওপেট্রা কোটারানির কাহিনী?
যুদ্ধ করতে করতে এমন একটা জায়গায় আটকে পড়েছিল তাঁরা, যেখান থেকে আর বেরনোর রাস্তা পাওয়া যাচ্ছিল না। এদিকে যোগাযোগ মাধ্যম অকেজো হয়ে পড়ল। বাকি দলের সঙ্গেও কোনোরকম সংযোগ রইল না। প্রায় ২০০ জন সৈনিক ওই অবস্থায় অসহায় হয়ে পড়লেন। যুদ্ধের এমন অবস্থায় বেরোবেন কী করে? বেঁচে ফিরতে পারবেন তো? এবার পায়রার কামাল।
আরো পড়ুন- k c paul umbrella : শীত গ্রীষ্ম বর্ষার ভরসা কে সি পালের ছাতা! এখন কেমন আছে সেই ছাতার দোকান?
যেই শের আমি বেরোল, শত্রুপক্ষের বুলেট ছুটে এল তার দিকে। যে পায়ে সংবাদ লেখা কাগজটি ছিল, সেখানেই লাগল একটি গুলি। একটু এদিক ওদিক হয়ে যাওয়ায় পা-টি পুরো বাদ যায়নি, দেহ থেকে ঝুলছিল। ওই অবস্থায় উড়ে চলল শের আমি। আরেকটা গুলি এসে লাগল বুকে। এবার রক্তের বন্যা বয়ে যেতে লাগল, ক্রমশ মৃত্যু ডাক দিচ্ছে, ওড়ার ক্ষমতা কমে আসছে।
আরো পড়ুন- বেদের মেয়ে জোৎস্না দেখেছেন? এই ছবির ব্যবসায়িক সাফল্যে জানেন? Beder Meye Josna
সেই অবস্থায় যতটুকু শক্তি বাকি ছিল, সবটুকু দিয়ে উড়ে চলল সে। নিজের গন্তব্যে পৌঁছে পড়ে গেল সে। রক্তমাখা বুক থেকে তখনও যেন একটু একটু নিঃশ্বাস ভেসে আসছে। পায়ের রক্তমাখা সংবাদটা পড়লেন আমেরিকান সৈনিকরা। কিছুক্ষণ পর ফিরেও পেলেন সেই বন্দি সৈনিকদের।
সবাই মিলে ফিরে এল আসল জায়গায়। প্রত্যেকের মুখে একটাই নাম- ‘শের আমি’! এরপর হাসপাতালে ৮ মাসের লড়াই করল পায়রা, জিতল বটে। আজও আমেরিকার স্মিথসোনিয়ান ইন্সটিটিউশনের মিউজিয়ামে তার দেহ সংরক্ষণ করে রাখা আছে। রাজার মতো শত্রুপক্ষের মোকাবেলা করল আর বন্ধু হয়ে বন্ধুদের বাঁচিয়ে দিয়ে গেল।