Breaking Bharat: শরীরটা খারাপ হবে, আর তাকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টাও আমাদের করে যেতে হবে। কিন্তু সুস্থ হতে চাওয়ার জন্য যে পদ্ধতি আমরা ব্যবহার করি সেটা সঠিক কি ? শরীরের যেকোনো সমস্যায় কষ্ট, ব্যথা, যন্ত্রণার সবার আগে যে ওষুধ খান তার সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য জানেন ? অচিরেই নিজেকে সুস্থ করতে গিয়ে আরো বেশি অসুস্থতার পথে ঠেলে দিচ্ছেন না তো ?
প্রথমেই একটু ব্যথা যন্ত্রণার বিষয়টি বলে নেওয়া যাক। শারীরিক বৃত্তীয় কার্যকলাপের কথা মাথায় রাখলে শরীরের গঠন সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ছবি আপনার চোখের সামনে ভেসে উঠবে। মাথা থেকে পা পর্যন্ত ধাপে ধাপে নিজের শরীরকে মনে করুন। অর্থাৎ মাথা ,কপাল, চোখ, নাক এভাবে পায়ের পাতা পর্যন্ত। আপনি নিশ্চয়ই জানেন আমাদের শরীরে সর্বত্র স্নায়ু বা নার্ভ এন্ডিংস উপস্থিত।
তাই যদি শরীরের কোনও জায়গায় ব্যাথা লাগে (Pain in any part of the body), সেখানকার নার্ভ সেই ব্যাথাকে তৎক্ষণাৎ নিজের মতো করে অনুভব করতে পারে। আর যেহেতু দেহের মালিক ব্রেইন বা মস্তিষ্ক, তাই তৎক্ষণাৎ মস্তিষ্ককে স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে সিগন্যাল প্রেরণ করে। এটা হলো শরীরের প্রথম পর্যায়ের কাজ। এবার যেখানে আপনি ব্যথা পেয়েছেন সে জায়গায় নিশ্চয়ই কোন আঘাত লেগেছে বা ক্ষত চিহ্নের সৃষ্টি হয়েছে (Injury or scarring)।
এবার সেই আঘাত প্রাপ্ত টিস্যুর কোষগুলি থেকে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন নামক এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ হতে থাকে। এইবার দেখুন আসল মজা ! কীভাবে একটি যন্ত্রের মত কাজ করে শরীর, প্রতিটা ধাপে- এবার বুঝতে পারবেন। আমাদের দেহের নার্ভ প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনের প্রতি যথেষ্ট সেনসিটিভ। তাই এই রাসায়নিক রিলিজ হওয়ার সাথে সাথে তা নার্ভ এন্ডিং এর মাধ্যমে দ্রুত ব্রেনে পৌঁছায়।
ব্যস, পরিবারের কর্তা যেমন বিপদ দেখলে পরিবারকে সর্তক করে, ঠিক তেমনভাবে এরপর মস্তিষ্ক ব্যথা বা যন্ত্রণার অনুভূতি জাগিয়ে দেহকে আঘাতের অস্তিত্বের কথা বুঝিয়ে দেয়। স্নায়ুতন্ত্রকে এক্ষেত্রে বাধ্য কর্মচারী বলতে পারেন। কারণ শুধুমাত্র আঘাতের উপস্থিতিই নয়, আঘাত কতটা গুরুতর বা আমাদের দেহে কোথায় আঘাত লেগেছে (Where our bodies are injured),সব তথ্যই মস্তিষ্ককে পৌঁছে দেয় আমাদের স্নায়ুতন্ত্র ।
ব্যথা যন্ত্রণার হাত থেকে কি ভাবে রেহাই মিলবে ?
এ তো গেল ব্যথা যন্ত্রণার কথা। এবার উপশম হবে কী করে ? এইখানে কেরামতি দেখায় পেইনকিলার (Painkiller)। ইংরেজি নাম এই স্পষ্ট যে “যন্ত্রণার হত্যাকারী” এই বস্তুটি। ডাক্তারি পরিভাষায় একে বলা হয় non steroidal anti-inflammatory drugs মানে ছোটো করে বলতে গেলে NSAID. এনার কাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ মানুষ সব থেকে বেশি ভরসা করেন এনাকে।
এই প্রসঙ্গে আপনাকে বলে রাখি পেইনকিলার মানে যন্ত্রনাকে খুন করে যে বস্তুটি। অর্থাৎ বুঝতেই পারছেন এর সাথে জ্বর হলে আমরা সাধারণত যে ওষুধ খেয়ে থাকি বিশেষ করে,’প্যারাসিটেমল’ (Paracetamol) তার কোনো সম্পর্ক নেই। তাই কোথাও ব্যথা যন্ত্রণা হলে পেইনকিলার যেভাবে কাজ করে (Painkillers work when the pain is excruciating), শরীরের উষ্ণতা বাড়লে অর্থাৎ জ্বর হলে প্যারাসিটামল সেই ভাবে কাজ করে না। দুজনের কার্যপদ্ধতি সম্পূর্ণ আলাদা।
পেইনকিলার আমাদের শরীরে কি ভাবে কাজ করে?
আচ্ছা, আবার ফিরে আসি পেইনকিলারের কাজ করার বিষয়ে (About the work of painkillers)। পেন কিলার আমাদের শরীরে প্রবেশ করে প্রথমেই আঘাতপ্রাপ্ত কোষগুলি থেকে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন নামক রাসায়নিকের নিঃসরণকে কমিয়ে দিতে কাজ শুরু করে দেয়। ফলে নার্ভ আমাদের ব্রেনে আর ব্যাথা সংক্রান্ত কোনও ইঙ্গিত দিতে পারে না। ফলে মস্তিষ্ক বুঝতে পারে না ব্যথা বা যন্ত্রণাটা কোথায়? তাই দেহকে মস্তিষ্ক খবর দিতে পারে না।
জোয়ার ভাটা কি ভাবে সৃষ্টি হয়? জীবনের উত্থান পতনের সাথে এর কি কোন সম্পর্ক আছে?
অতএব দেহ ব্যথা বা যন্ত্রণা সম্পর্কে অনুভূতি লাভ করে না। অন্যদিকে প্যারাসিটামল এত পরোক্ষ ভাবে কাজ করে না। সরাসরি ব্রেনে প্রবেশ করে ব্যথার অনুভূতিকে কমানোর চেষ্টা করে। এবার আপনি বলতেই পারেন তাহলে দ্রুততার সঙ্গে কে কাজ করবে ? কারণ যন্ত্রণা হলে সেটা কমানো আগে দরকার তাই না? এর উত্তরে জানাই যেহেতু পেইন কিলার ব্রেইন এবং আঘাত প্রাপ্ত কোষ, এই দুইয়ের মধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়, তাই ব্যাথা কমানোর ক্ষেত্রে পেইনকিলার প্যারাসিটামলের থেকে অনেক বেশি কার্যকরী (Painkillers are effective in reducing pain)।
নিজের সন্তানকে অভাবের যন্ত্রণাটা বুঝতে দিন? এটাও দরকারি! Breaking Bharat
Childhood days: ফেলে আসা শৈশবে আজও ডুবে থাকতে চায় মন, নস্টালজিয়ায় ঘেরা এই প্রতিবেদন।
তবে সবকিছুর যেমন সাইড এফেক্ট বা পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া থাকে, পেইন কিলারের ক্ষেত্রে সেই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার তীব্রতা মারাত্মক। তাই নিজে ডাক্তারি করে কিংবা ইন্টারনেট ঘেঁটে অথবা ওষুধের দোকানে বলে পেইনকিলার খাবেন না। যেকোনো কারণে সমস্যা হতেই পারে তার জন্য ডাক্তারের কাছে গিয়ে পরামর্শ নিন। মনে রাখবেন অতিরিক্ত কোনও কিছুই ঠিক না।
অতএব, মুঠো মুঠো পেইনকিলার খেয়ে দয়া করে অকালে বিপদ ডেকে আনবেন না।